অভয়নগরে অবৈধভাবে কাঠপুড়িয়ে কয়লা তৈরীর ৫৮টি চুল্লি গুড়িয়ে দিল ভ্রাম্যমান আদালত

Uncategorized আইন ও আদালত

সুমন হোসেন, (যশোর) ঃ
যশোরের অভয়নগরে অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারখানার চুল্লি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক খন্দকার কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের সোনাতলা অঞ্চলের ৫৮ টি কাঠ কয়লার চুল্লি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের অগোচরে অবৈধভাবে এই কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছিল স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তি। পূর্বে কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের মাধ্যমে চুল্লিগুলো ভেঙ্গেও দেওয়া হয়েছে কয়েকবার। কিন্তু পরবর্তীতে কোন এক অদৃশ্য শক্তি নিয়ে আবারও নতুন কৌশলে শুরু করে অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কাজ।

স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, এই চুল্লির কারণে ঘন বসতিপূর্ণ এ অঞ্চলের সবুজ গাছপালাগুলো ধোয়ার কারনে ধূসরে পরিণত হতে শুরু করেছে। বিস্তীর্ণ সবুজ ক্ষেতের পাতা গুলোও পুড়ে গেছে। গাছের ডাল ও পাতা পুড়ে গেছে ধোয়ার বিষাক্ত বাতাসে। মারা যাচ্ছে নদীর পাড়ের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। যার ফলে একদিকে বন উজাড় হচ্ছে, অপরদিকে পরিবেশ হচ্ছে দূষিত। বৃদ্ধ, শিশু ও পরিবেশ সবই ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়ছে। সর্বশেষ সংবাদপত্রে এই ঘটনাটি প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছেন উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর।

২১ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে স্থানীয় ক্যাম্পের পুলিশের সহযোগিতায় ৫৮টি চুল্লি ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় উপস্থিত ছিলেন, যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মোঃ হারুন-অর-রশিদ, অভয়নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কমল কৃষ্ণ দাস, নওয়াপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মেজবাহ ফকির, ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার শীল এবং আমতলা ক্যাম্প ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম সহ আমতলা ও সোনাতলা পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যবৃন্দ।

এবিষয়ে স্থানীয় এক স্কুল ছাত্র বলেন, কয়লা তৈরির এই চুল্লি থেকে বিষাক্ত ধোয়ার কারণে আমরা বাড়িতে থাকতে পারিনা। তবে এই চুল্লি ভেঙ্গে ফেলাই আমরা খুশি হয়েছি। এলাকাবাসী জানান, এই অবৈধ কয়লা তৈরির চুল্লি ভেঙ্গে ফেলায় জনমনে স্বস্তি পেয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের সব সময় নজরদারিতে রাখতে হবে । আবার যেন নতুন করে এই অপকর্ম শুরু না করতে পারে।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক খন্দকার কামরুজ্জামান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৫৮ টি কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরীর চুল্লি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে এই ধরনের অভিযান জনস্বার্থে অব্যহত থাকবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *