চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ঃ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘তারেক রহমান মানে হচ্ছে দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন, দুর্নীতির বরপুত্র। হাওয়া ভবনের সবচেয়ে বড় চোর ও সন্ত্রাসীদের হাতে দেশ তুলে দেয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন উনারা যদি আওয়ামী লীগকে বিদায় দিতে পারেন তাহলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠন করবেন। আর বিএনপি নেতা আসাদুল হক দুলু না কি বলেছেন যদি তারা ক্ষমতায় যায়, তাহলে সব মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলবে। যারা মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলতে চায় তাদের হাতে দেশ তুলে দিতে পারি না, তাই সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন।’
শনিবার ১৯ নভেম্বর দুপুরে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি হচ্ছে শীতের পাখি। শীতকালে যেমন সাইবেরিয়া থেকে শীতের পাখিরা এসে আমাদের এখান থেকে ধান খেয়ে মোটাতাজা হয়ে আবার চলে যায়, বিএনপিও হচ্ছে শীতের পাখির মতো। পাঁচ বছর খবর নেই, নির্বাচন যখন আসে তখন শীতের পাখির মতো আসবে। এই শীতের পাখিদের আর সুযোগ দেয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে, এরা জনগণের শত্রু, এরা দেশের শত্রু, এদেরকে সর্বপর্যায়ে প্রতিহত করতে হবে। যারা হাওয়া ভবন বানিয়ে মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তুলতো, যারা বিদ্যুৎ না দিয়ে খাম্বা লাগাতো, যারা একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলা করেছে, যারা এসএম কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমামকে হত্যা করেছে, যারা সারাদেশে বাংলা ভাই সৃষ্টি করে গাছের সাথে টাঙিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, পাঁচশ জায়গায় বোমা ফাটিয়েছে, তাদের হাতে দেশ তুলে দিতে পারি না।’
সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, কৃষক লীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত পছন্দের সহযোগী সংগঠন। করোনা মহামারির সময় যেভাবে কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সেটি সত্যিই অনন্য। কৃষকরা যখন ধান কাটার মানুষ পাচ্ছিল না, তখন কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা ধান কেটে মাথায় করে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। চৌদ্দ বছর আগে দেশের অবস্থা কি ছিল, সেটি কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার ক্যারিশমাটিক যাদুকরী নেতৃত্বের কারণে দেশের এই পরিবর্তন হয়েছে।
দেশের এই পরিবর্তনের কারণে মানুষ আজকে শেখ হাসিনার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে আর এজন্য এই পরিবর্তন সহ্য হয় না বলে বিএনপি এখন সারাদেশে সমাবেশ করে সন্ত্রাসীদের জড়ো করছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গতকাল কাঁচপুর ব্রিজের নামফলক জ্বালিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ তারা আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।
ফখরুল-রিজভী-গয়েশ্বর বাবুরা যাই বলুক না কেন, ক’দিন আগে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এসে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে বলে গেছেন, বাংলাদেশ যে অগ্রগতি করেছে এটা পৃথিবীর জন্য উদাহরণ, বিস্ময়কর অগ্রগতি – বলেন তথ্যমন্ত্রী।
উত্তর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধন করেন কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ। সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেতা আকবর আলী চৌধুরী, রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।
এ দিন সকালে দলের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শনে যান চট্টগ্রাম ৭ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। আগামী ৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামে ইনশাআল্লাহ লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হবে। আপনারা জানেন, কিছুদিন আগে এখানে বিএনপি একটি সমাবেশ করেছিল। মাঠের তিনভাগের এক ভাগ বাদ দিয়ে একটি মঞ্চ করেছিল। বাকি দুইভাগের মধ্যেও অর্ধেক খালি ছিল। তারা যেভাবে বলেছিল আসলে সেই রকম মানুষ হয় নাই।’
তিনি বলেন, ‘পলোগ্রাউন্ডের কোণায় যে একটা কমিউনিটি হল আছে ওখানে আগে ভ্যারাইটি শো হতো। সেই ভেরাইটি শো’তে যে পরিমাণ মানুষ হতো তার চেয়ে একটু বেশি মানুষ হয়েছে বিএনপির সমাবেশে। চট্টগ্রামে জব্বারের বলী খেলায়ও বিএনপি’র সমাবেশের চেয়ে তিনগুণ বেশি মানুষ হয়।’
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, উত্তর জেলা সভাপতি এম এ সালাম সাধারন সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।