আজকের দেশ ডেস্ক : দলীয় এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, যে কয়েকজন এমপির বরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, অভিযোগটা যখন চার্জশিটে চলে যাবে, অভিযোগটা প্রমাণ হবে, যখন তার দণ্ড হবে, তখন তাকে আমরা দল থেকে বহিষ্কার করবো। কিন্তু অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগে আপনি কীভাবে শাস্তি দেবেন? যে অভিযোগ এসেছে, সেটাতো পুরোপুরি সত্য নাও হতে পারে।
‘এতে দলে দলের ভাবমূর্তি খারাপ হবে বলে আমি মনে করি না। এতে করে সরকারের সৎ সাহসের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। বরং ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে। সরকার এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে। তাই এ ক্ষেত্রে ভাবমূর্তি অনুজ্জ্বল হবে না।’
পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় নরসিংদীর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ নুসরাত তামান্না ওরফে বুবলীর বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন কি না?’ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেটাতো দলীয় ব্যাপার আছে আমাদের। দলের পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং এ বিষয়টি আলোচনা করবো।’
‘তিনি দলের এমপি। তাই দলীয় সভায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। আর যদি পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রে জাতীয় সংসদের অবিভাবক স্পিকার রয়েছেন। তার গোচরে বিষয়টি নিশ্চয় আছে। তিনিও ব্যবস্থা নিতে পারেন। সেটাও দেখার বিষয়।’
চট্টগ্রামের প্রয়াত সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিনকে সম্মেলন মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কাদের বলেছেন, তিনি মঞ্চে বসতে চাইলে অবশ্যই তাকে আমি অ্যালাও করতাম।
চট্টগ্রামের দি কিং অব চিটাগং কমিউনিটি সেন্টারে রোববার আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিনসহ কয়েকজন নেতাকে নামিয়ে দেওয়া হয়। হাসিনা মহিউদ্দিন চট্টগ্রাম-৯ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মা।
‘চট্টলার বীর’ খ্যাত মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রীকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও সমালোচনার তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ নেতারা হাসিনা মহিউদ্দিনকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেন বলে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম গেলেও মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাড়িতে একবার পা রাখেন, সেই পরিবারের সদস্যকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া ধৃষ্টতা।
বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক ভবনে একটা প্রোগ্রাম ছিল, সেখান থেকে আমি প্রতিনিধি সম্মেলনে যখন যোগ দিয়েছি আনুমানিক সাড়ে ১২টা। ওখানে কোনো কমোশন (গোলমাল) আমি দেখিনি এবং এ ধরনের কোনো ঘটনা কেউ আমাকে জানায়নি। আমি ঢাকার পথে যখন চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে যাই, তখন ওই বিষয়টা একজন আমাকে জানালো। কিন্তু ওখানে কেউ এ বিষয়ে আমাকে কিছু বলেনি এবং কোনো অভিযোগও কোনো পক্ষ থেকে আসেনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি মেয়রকে জিজ্ঞাসা করেছি, তার যে বক্তব্য সেটা হচ্ছে- ওখানে হোস্ট (আয়োজক) তিনটি জেলা, মহানগর এবং চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ। এই তিন জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকেরা বৈঠক করে মঞ্চে কারা কারা বসবেন এবং কোন ক্যাটাগরিতে বসবেন, সেটা নির্ধারণ করেছে। তাদের সেই নির্ধারিত ক্যাটাগরিতে তিনি (হাসিনা মহিউদ্দিন) ছিলেন না। তিনি মহিলা আওয়ামী লীগের নগরের প্রেসিডেন্ট। এই ক্যাটাগরির কেউ বসেনি। সেকথা মেয়রের বক্তব্য।
‘কিন্তু আমি যদি জানতাম, তাহলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী হিসেবে আমি তাকে সম্মানটা দিতাম। আমি জানতাম না। তিনি মঞ্চে বসতে চাইলে অবশ্যই তাকে আমি অ্যালাও করতাম। বিষয়টি আমার নলেজে ছিল না।’