প্রতারণাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে প্রাইম ডিস্ট্রিবিউশন গ্রুপের এমডি প্রতারক মামুন পুলিশের হাতে গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত


নিজস্ব প্রতিবেদক : শতাধিক প্রতারণার মামলা ছাড়াও বিভিন্ন ভয়ঙ্কর অভিযোগে অভিযুক্ত চট্টগ্রামের প্রাইম ডিস্ট্রিবিউশন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাশেদুল আলম মামুনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম বন্দর থানা পুলিশ। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের দায়ের করা প্রতারণা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের দক্ষিণ মধ্য হালিশহরের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে বন্দর থানায় নিয়ে আসা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রানুযায়ী জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া রাশেদুল আলম মামুন ও তার ভাই মইনুল আলম সায়মন বাংলাদেশ ফাইন্যান্স থেকে ৫ কোটি টাকা হাউস লোন সুবিধা নিয়ে ঢাকার গুলশানে ২ হাজার ৭৬৮ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেন। কিন্তু ঋণের টাকা পরিশোধ না করেই প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে দায়বদ্ধ ফ্ল্যাটটি গোপনে অন্যত্র হস্তান্তর করার চুক্তি করে।

পরবর্তীতে বিষয়টি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের নজরে আসলে প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাশেদুল আলম মামুন ও তার ভাই মইনুল আলম সায়মনের বিরুদ্ধে প্রতারণা, অপরাধমূলক ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে মামলা দায়ের করলে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

এ দিকে গুলশানের ওই ফ্ল্যাটের ক্রেতা গণমাধ্যম কে জানান, মোহাম্মদ রাশেদুল আলম মামুন এবং তার আপন ভাই মোহাম্মদ মঈনুল আলম সায়মন আমার নিকট ঢাকার গুলশানে ফ্ল্যাট বিক্রি করার কথা বলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ৫ কোটি টাকা ব্যাংকের পে-অর্ডারের মাধ্যমে গ্রহণ করে আমার টাকা আত্বসাৎ করে এতদিন আত্মগোপনে ছিল। আমি ফোনে যোগাযোগ করলে আমার ফোন কেটে দিয়েছে। আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে এবং আমাকে লাশের এবং কবরের ছবি পাঠিয়েছে এই কারণে রাশেদুল আলম মামুন এর নামে আমি গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।

রাশেদুল আলম মামুন এর নিকট টাকা‌ ফেরত চেয়ে আমি একাধিকবার ফোন করেছি ! কিন্তু উনি আমার ফোন রিসিভ করেনি! আমাকে এতো দিন বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে!

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে আমাকে ডেকে নিয়ে আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে। এই বিষয়ে চট্টগ্রামেও আমি একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমাকে মাসের পর মাস হয়রানি করেছে এবং এইভাবে বছর পেড়িয়ে গেছে! উনি আমাকে আমার নিকট থেকে টাকা গ্রহণের বিপরীতে সাত কোটি টাকার চেক দিয়েছে। কিন্তু উক্ত চেকগুলো প্রত্যাখান হয়েছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই এই বিষয়ে আদালতে উনার বিরুদ্ধে এন আই অ্যাক্টে মামলা করেছি। ওনার নামে টাকা আত্মসাৎ এর বিপরীতে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে। আমার ফোন পর্যন্ত উনি রিসিভ করে না! উনি আমাকে আমার টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো পলাতক থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে জিডি এবং মামলা করে আমাকে হুমকি প্রদান করেছে এবং আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছে।

এছাড়াও গ্রেফতার হওয়া এই আসামিবাংলাদেশ ফাইন্যান্স থেকে উল্লেখিত হোম লোন সুবিধা ছাড়াও প্রাইম এএমআর এক্সচেঞ্জ ও প্রাইম কমিউনিকেশন নামে আরও একাধিক লোন সুবিধা গ্রহণ করেছেন। এই মুহূর্তে প্রাইম ডিস্ট্রিবিউশন গ্রুপের কাছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের পাওনা প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

গত রবিবার ৫ ফেব্রুয়ারি, মামুনের প্রতারণা ও অন্যান্য মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে বন্দর থানার ডিউটি অফিসার শারমিন গণমাধ্যম কে জানান , এখন বিষয়টা আর আমাদের হাতে নেই। আমরা তাকে অলরেডি কোর্টে চালান করে দিয়েছি। এখন বাকিটা কোর্টের বিষয়।

জানা গেছে, রাশেদুল আলম মামুনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে খেলাপি ও প্রতারণার অভিযোগে প্রায় শতাধিক মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার ও জঙ্গি সংগঠনের অর্থায়নের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন গ্রেপ্তারকৃত রাশেদুল আলম মামুনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *