নড়াইলে যুবলীগ নেতা তৌরুত মোল্যা’র নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে,চাচুড়ী বাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত

মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইল জেলার চাচুড়ী ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা তৌরুত মোল্যা’র নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে,চাচুড়ী বাজারে চাচুড়ী এলাকাবাসি’র পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইউনিয়নের ভিন্ন গ্রামের কোন্দলকে কেন্দ্র করে হামলা মামলার আসামী করে যুবলীগ নেতা তৌরুত মোল্যা (৪২) কে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়েছে নড়াইলের কালিয়ার চাচুড়ী বাজারে। গত (১৭ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার সকাল ১১টার সময় বিক্ষুদ্ধ আত্মীয়-স্বজন ও কয়েকশত এলাকাবাসী চাচুড়ী বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে। তৌরুত মোল্যা উপজেলার চাচুড়ী ইউনিয়নের চাচুড়ী গ্রামের ইঞ্চিল মোল্যার ছেলে। তিনি কালিয়া উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও চাচুড়ী কালিয়া উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও চাচুড়ী ইউনিয়নের সাবেক সাধারন সম্পাদক। স্থানীয়দের অভিযোগ,গত ১১ ফেব্রুয়ারী সকালে পুরুলিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামে দুটি পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হলে কয়েকজন আহত হয়। সে সময় চাচুড়ী পূর্বপাড়ায় নিজ বাড়িতে সকালের নাস্তা খাচ্ছিলেন যুবলীগ নেতা ও চাচুড়ি বাজারের ব্যবসায়ী তৌরুত মোল্যা। এরপর চাচুড়ি বাজারে ব্যবসায়ীক কাজে আসলে সকাল ১১টার দিকে কালিয়া থানা পুলিশ তাকে আটক করে। বিবাদমান একটি পক্ষে ওই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে থানায় মামলা করে। সে মামলায় আসামী করা হয় তৌরুত মোল্যকে। পরের দিন ১২ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় আটক দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়। তৌরুত ম্যোলা’র বোন হারিফা খাতুন বলেন,মারামারি হলো পুরুলিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামে। সেখান থেকে ৩ কিলোমিটার দুরে আমার ভাই তার নিজ বাড়িতে সকালের খাবার খাচ্ছিলো। অথচ সে আসামী হলো। আমি এই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই। মানববন্ধনে অংশ নেয় নড়াইল জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ হোসেন,এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান। এছাড়া বীরমুক্তিযোদ্ধা আমীর হোসেন মোল্যা,উপজেলা কৃষকলীগের আহ্ববায়ক মুন্সি লুৎফ্ফার রহমান, যুবলীগের যুগ্ম আহ্ববায়ক আশিষ ভট্টাচার্য,চাচুড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী-লীগের সভাপতি মশিয়ার রহমান, চাচুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইমরুল হোসেন বক্তব্য দেন। বক্ত’রা অন্য ইউনিয়ন ও গ্রামের সংঘর্ষে যুবলীগ নেতার নামে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির জোর দাবী জানান। কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম মিথ্যা মামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,পুরুলিয়া ইউনিয়নে সম্প্রতি একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। পুলিশ ঘটানার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করেছে। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিবারণ মুলক গ্রেফতারও করা হচ্ছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এদিকে,নড়াইলের কালিয়ায় সারাফাত শেখ নামে এক যুবকের কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় হত্যা চেষ্টার মামলা করা হয়েছে। মামলায় ৫১ জনকে আসামি করে গত শনিবার রাতে আহত যুবকের বড় ভাই লায়েক শেখ বাদী হয়ে কালিয়া থানায় মামলা করেন। এ হত্যা চেষ্টা মামলায় উপজেলার চাঁচুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌরুত মোল্যাসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাত আরও কয়েক জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্যতম আসামি যুবলীগের সাবেক নেতা তৌরুত মোল্যা ও তার সহযোগী কাতেবার মোল্যাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। (১২ ফেব্রয়ারি) রোববার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ তাসমীম আলম বলেন, ‘আমাদের কাছে অপরাধীদের একটাই পরিচয়,সে অপরাধী। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উল্যেখ,নড়াইলের কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ৬ জন আহত হয়েছে। গত (১১ ফেব্রুয়ারি) শনিবার সকালে উপজেলার চাচুড়ি বাজারের বকুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চন্দ্রপুর গ্রামের মৃত-সোলেমান শেখের ছেলে শরাফাত শেখ (৪৩) নামে এক যুবকের হাত-পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তার অপর ভাই ঠেকাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা যায়। অন্যান্য গুরুতর আহতদের মধ্যে উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের নুরু মিয়া শেখের ছেলে শামীম শেখ (২৫),নিলু শেখের ছেলে পলাশ শেখ,অলিয়ার মোল্যার ছেলে লোকমান মোল্যা (৪৮)। আহত শারাফাত ও শামীমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিদের নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়,ওই গ্রামের রবিউল মোল্যা ও আতাউর মৃধা গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার রাতে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকাল ৭.৩০ টার দিকে রবিউল গ্রুপের লোকজন শারাফাতকে চাচুড়ি বাজার বকুলতলায় একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে বাম হাতের কব্জি ও পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে মারাত্মক ভাবে আহত করে। এ সময় ঠেকাতে গেলে তার ভাই ফুল মিয়া,ভাতিজা শামীম শেখসহ আরো ৬ জনকেও কুপিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করে তারা। স্থানীয়’রা আহতদের উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *