পিবিআই কর্তৃক মোহাম্মদপুরের সার্জিক্যাল ব্যবসায়ী মুন্না হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

Uncategorized আইন ও আদালত



নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার মোহাম্মদপুর এর সার্জিক্যাল ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলী মুন্না এর চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।

জানা গেছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি, বিকাল সাড়ে ৩ টায় হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত মোঃ কবির হোসেন (৫০), পিতা-মৃত: আব্দুল মতিন প্রধানিয়া, মাতা-মৃত: রাহিমা বেগম, সাং-চাপাতলি, থানা-মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুর বর্তমানে-টিটু মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া, থানা-কামরাঙ্গীর চর, জেলা-ডিএমপি, ঢাকা কে ম্যাটাডোর মোড়, হাজারীবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। তার দেওয়া তথ্য অনুসারে পিবিআই অত্র মামলার ভিকটিম ইয়াসিন আলী মন্ডল @ মুন্না হত্যাকান্ডের সময় ব্যবহৃত ২ (দুই) টি সিএনজি (যার নম্বর যথাক্রমে ঢাকা-দ-১১-১৮০১ এবং ঢাকা-দ-১১-২৪৩৮) উদ্ধার করে। রবিবার ৫ মার্চ সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের সময় পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স এ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম পিবিআই এর ডিআইজি (পূর্বাঞ্চল) মোর্শেদুল আনোয়ার খান, ডিআইজি (পশ্চিমাঞ্চল) মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, বিপিএম, পিপিএম বিষেশ পুলিশ সুপার মোঃ আহসান হাবীব পলাশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এসআইএন্ডও (উত্তর),কল্যাণপুর, উপস্থিত ছিলেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে ভিকটিম ইয়াছিন আলী মুন্না তার গ্রামের বাড়ী বগুড়াতে যান এবং ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে বগুড়া হতে দুপুর অনুমান ৩ টার সময় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাত অনুমান ১১ টার সময় ভিকটিমের বড় বোন ভিকটিমের মোবাইল নাম্বার এ ফোন করেও কোন সাড়া পান নাই। পরবর্তীতে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে রাত অনুমান ২ টার সময় শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ ভিকটিম ইয়াছিন আলী মুন্না এর মোবাইল ফোন থেকে ভিকটিমের বড় বোন এর মোবাইলে জানান ভিকটিম ইয়াছিন আলী মুন্না এর মৃতদেহ শেরেবাংলা নগর থানাধীন শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল গেইটের অনুমান ৩০ গজ উত্তরে রাস্তার পাশে থাকা ময়লার স্তুপের পাশে পাওয়া যায়। সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের আত্মীয় স্বজন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা মৃতদেহ সনাক্ত করেন। এ বিষয়ে ভিকটিমের বড় বোন জামাই একেএম আমানুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে শেরে বাংলা নগর থানার মামলা নং-৪৬ দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ তদন্ত করে। প্রায় ২ মাস পর ডিবি, ডিএমপি, ঢাকা মামলাটির তদন্ত শুরু করে।মামলাটি ডিবি, ডিএমপি এর তদন্তকালীন সময়ে একই ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা নং-১২, জুলাই ২০২০ সালে শেরেবাংলা নগর থানায় রুজু হয়। মামলাটি শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ তদন্ত করে।
১২নং মামলায় শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ আসামী মোঃ আসাদ শেখ (৫৩), মোঃ দেলোয়ার হোসেন হাওলদার @ দেলু (৪০), মোঃ জলিল সিকদার (৪৩) এবং মোঃ মিজানুর রহমান সরদার @ মিজান (৪০) দের গ্রেফতার করে। উক্ত আসামীদের ডিবি, ডিএমপি, ঢাকা ৪৬ নং মামলায় গ্রেফতার দেখায়। ডিবি, ডিএমপির প্রায় ১০ মাস তদন্তের পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা এর আদেশে গত ২ নভেম্বর ২০২০ সালে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। গ্রেফতারকৃত ৪ জন আসামী পিবিআইতে মামলা যাওয়ার আগেই জামিন পায়। পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্ববধান ও দিক নির্দেশনায়, আহসান হাবীব পলাশ, বিশেষ পুলিশ সুপার (এসআইএন্ডও) এবং মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসআইএন্ডও (অগার্নাইজড ক্রাইম-উত্তর) এর নেতৃতে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ আমিনুল হক, এসআই (নিঃ) মেহেদী হাসান, এসআই (নিঃ) আবু সাঈদ, এসআই (নিঃ) বাসুদেব সর্ব এসআইএন্ডও (অগার্নাইজড ক্রাইম-উত্তর) চৌকস টিম গোয়েন্দা তথ্য, সিসি ফুটেজ ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামী কবির হোসেনকে হাজারীবাগ এলাকা হইতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামী কবির হোসেন ঘটনার বর্ণনা দেন। আসামী কবির হোসেন আদালতে কাঃবিঃ ১৬৪ ধারা মতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। তদন্তকালে জানা যায় যে, ভিকটিম বগুড়া থেকে ঢাকা গাবতলীতে পৌঁছানোর পর তার বাসায় যাওয়ার জন্য রাত অনুমান ৯ টর সময় অত্র মামলায় পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামী ড্রাইভার আসাদ শেখের সিএনজিতে উঠে। সিএনজি শ্যামলীতে পৌঁছানোর পর শ্যামলী ক্রসিং এর আগে বাম পাশে ফাঁকা জায়গাতে থামে । সিএনজি নষ্টের কথা বলে আসাদ শেখ ভিকটিমসহ অপেক্ষা করতে থাকে। ইতোমধ্যে পিছনের সিএনজিতে থাকা অপরাপর আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন হাওলদার @ দেলু (৪০), মোঃ জলিল সিকদার (৪৩) এবং মোঃ মিজানুর রহমান সরদার @ মিজান (৪০) রা জোরপূর্বক আসামী ড্রাইভার আসাদ শেখের সিএনজিতে উঠে। আসাদ শেখ সিএনজিটি চালিয়ে যেতে থাকে। তখন পিছন থাকা সিএনজি’টি আসামী কবির হোসেন (৫০) চালিয়ে পিছনে পিছনে যায় পরবর্তীতে সিএনজি দুটি বিভিন্ন জায়গাতে ঘুরাঘুরির এক পর্যায়ে উক্ত আসামীরা ঘটনাস্থলে একত্রিত হয়ে ভিকটিম ইয়াছিন আলী মুন্নাকে মারধর করে । দেলোয়ার ও জলিল গলা ও মুখ চেপে ধরে টাকা-পয়সা, গলায় থাকা মোটা স্বর্ণের চেইনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। তারপর তারা ভিকটিমকে এবং ভিকটিমের মোবাইল ফোনটি ঘটনাস্থলে ফেলে পালিয়ে যায়। শেরেবাংলা নগর থানাধীন শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল গেইটের অনুমান ৩০ গজ উত্তরে রাস্তার পাশে রাত অনুমান ৯ টা ৫৮ মিনিটের সময় ফেলে রেখে যায় (সিসি ফুটেজ)। আসামীরা যথাক্রমে, মোঃ আসাদ শেখ, মোঃ দেলোয়ার হোসেন হাওলদার @ দেলু, মোঃ জলিল সিকদার এবং মোঃ মিজানুর রহমান সরদার @ মিজানরা দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা সহ আশপাশের এলাকায় সিএনজি দ্বারা ছিনতাই পরিচালনা করে আসছিল। উল্লেখিত আসামীদের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানার মামলা নং-১২, অভিযোগপত্র নং-৪২৩, তারিখ-৩১/১২/২০২০, ধারা-৩৯৫/৩৯৭/৪১২ পেনাল কোড দাখিল করা হয়েছে। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা আছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *