বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের পৃথক অভিযানে ইয়াবা ও বিয়ার সহ ১ জন আটক

Uncategorized আইন ও আদালত


নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর টেকনাফ ব্যাটালিয়ন কর্তৃক পরিচালিত পৃথক তিনটি অভিযানে ২,১০,০০০ পিস ইয়াবা ও ৩৬০ ক্যান আন্দামান গোল্ড বিয়ারসহ একজন মাদক পাচারকারী আটক হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।

জানা গেছে, বর্তমান সরকারের মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি যথাযথভাবে বাস্তবায়নকল্পে মাঠ পর্যায়ে বিজিবি’র অভিযানিক কর্মকাণ্ড এবং গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার ১৩ এপ্রিল, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) কর্তৃক পরিচালিত পৃথক ৩ টি অভিযানে ২,১০,০০০ (দুই লক্ষ দশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩৬০ ক্যান আন্দামান গোল্ড বিয়ারসহ ১ জন মাদক পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে।

বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) গতকাল বৃহস্পতিবার ১৩ এপ্রিল, রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, অত্র ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ সাবরাং বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৫ হতে আনুমানিক ০১ কিঃ মিঃ দক্ষিণ দিকে আচারবুনিয়া নামক এলাকা দিয়ে মাদকের একটি চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে পাচার হতে পারে।

উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে সাবরাং বিওপি হতে একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বর্ণিত এলাকায় গমন করতঃ কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে।

আনুমানিক রাত ২ টা ৩০ মিনিটের সময় টহলদল সীমান্তের শূন্য লাইন হতে ৭০০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুইজন ব্যক্তিকে নাফ নদী পার হয়ে দু’টি বস্তা কাঁধে নিয়ে উল্লেখিত এলাকার বেড়ীবাঁধ অতিক্রম করে লবণ মাঠ দিয়ে আসতে দেখে এবং তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে।

উক্ত ব্যক্তিরা দূর হতে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই তাদের কাঁধে থাকা বস্তাগুলো ফেলে রাতের অন্ধকারের সুযোগে দ্রুত দৌড়ে নাফ নদীতে ঝাপ দিয়ে মায়ানমারের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়।

এরপর বিজিবি’র টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে চোরাকারবারীদের ফেলে যাওয়া গামছা দিয়ে মোড়ানো দু’টি প্লাষ্টিকের বস্তা উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত বস্তার ভিতর হতে ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট (মালিকবিহীন অবস্থায়) জব্দ করা হয়।

পরবর্তীতে টহলদল কর্তৃক উক্ত এলাকায় রাত ৩ টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন চোরাকারবারী কিংবা তাদের সহযোগীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে চোরাকারবারীদেরকে সনাক্ত করার জন্য অত্র ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

অপরদিকে, রাত ১ টা ২৫ মিনিটের সময় উল্লেখিত ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ শাহপরীরদ্বীপ বিওপি’র একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বিআরএম-৪ হতে আনুমানিক ৫০০ গজ দক্ষিণ দিকে জালিয়াপাড়া নামক এলাকায় নাফ নদীর কিনারায় নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছিল।

এ সময় টহলদল ৪-৫ জন ব্যক্তিকে নাফ নদী পার হয়ে বস্তা কাঁধে নিয়ে বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন কেওড়া বাগানের দিকে আসতে দেখে এবং তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে।

উক্ত ব্যক্তিরা দূর হতে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই তাদের কাঁধে থাকা বস্তাগুলো ফেলে দিয়ে কেওড়া বাগানের ভিতর দিয়ে নাফ নদীতে লাফিয়ে মায়ানমারের দিকে পালিয়ে যায়।

এরপর টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে ৫টি প্লাষ্টিকের বস্তা উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত বস্তার ভিতর হতে ৩৬০ ক্যান আন্দামান গোল্ড বিয়ার জব্দ করা হয়। উক্ত স্থানে অন্য কোন অসামরিক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি বিধায় চোরাকারবারীদের সনাক্ত করাও সম্ভব হয়নি।

অপর একটি অভিযানে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে,উক্ত ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ দমদমিয়া বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৯ হতে আনুমানিক ১.৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে জালিয়ারদ্বীপ নামক স্থানে মাদকদ্রব্যের একটি চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে বালুর নীচে লুকায়িত রয়েছে।

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে দমদমিয়া বিওপি’র একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল উল্লেখিত এলাকায় গিয়ে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে সন্দেহভাজন একজন ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা অবস্থায় দেখতে পায়।

পরবর্তীতে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জালিয়ারদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব পার্শ্বে বালুর নীচে প্লাষ্টিকের পলিব্যাগ দিয়ে মোড়ানো একটি পোটলা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত পোটলা হতে ১০,০০০ (দশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।

আটককৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, উক্ত ইয়াবার চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে এনে দুইজন পলাতক আসামীর নিকট পৌঁছে দেয়ার নিমিত্তে ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা চুক্তির বিনিময়ে ভোর ৫ টার সময় মায়ানমারের শোয়ারদ্বীপ হতে সাঁতরিয়ে নাফ নদীর শূন্য লাইন অতিক্রম করে বাংলাদেশের জালিয়ারদ্বীপে বর্ণিত স্থানে পলাতক আসামীদের নিকট ইয়াবার চালান বুঝিয়ে দেয়ার নিমিত্তে লুকিয়ে রাখে। আটককৃত ব্যক্তির পরিচয়- মো: আব্দুর শুক্কুর (১৯), পিতা-মোঃ হোসেন, মাতা-হাসিনা খাতুন, ২৭ নম্বর জাদিমোড়া এফডিএমএন ক্যাম্প, ব্লক-বি/৪, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *