সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনা ফাঁস হওয়ায় কপাল পুড়েছে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিবিধ বিশেষ প্রতিবেদন শিক্ষাঙ্গন

নিজস্ব প্রতিবেদক : সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় কপাল পুড়েছে সাংবাদিক নেতা ও দৈনিক সংগ্রামের চীফ রিপোর্টার রুহুল আমিন গাজীর। সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে জীবনবৃত্তান্তের সঙ্গে দাখিলকৃত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জালিয়াতির পিলে চমকে দেয়া তথ্য ফাঁস হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাকে তাৎক্ষনিক চীপ রিপোর্টার পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করে।


বিজ্ঞাপন

এমনকি এই পদের অপব্যবহার করে যাতে দুরভিসন্ধিমূলক কর্মকাণ্ড বা স্বার্থ সিদ্ধি করতে না পারে, সেজন্য পত্রিকার ব্যুরো প্রধান ও ৬৪ জেলার প্রতিনিধিকে কর্তৃপক্ষের  এই সিদ্ধান্তের কথা লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিজের চীফ রিপোর্টার পদ ফিরে পাওয়ার জন্য রুহুল আমিন গাজী সর্বোচ্চ তদবির করেও শেষ রক্ষা হয়নি।


বিজ্ঞাপন

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, রুহুল আমিন গাজী দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক হওয়ার উদ্দেশ্যে গত জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে কর্তৃপক্ষের কাছে জীবনবৃত্তান্ত দাখিল করেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা সরকার ও রাজনীতি বিভাগে অনার্স এবং সমাজ বিজ্ঞানে মাস্টার্স বলে উল্লেখ করা হয়। শিক্ষা সনদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাশের বছর বিএ অর্নাস ২০০১ এবং মাস্টার্সে ২০০২ সাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

অথচ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০০৬ সালে। বিশ্ববিদ্যালয়টির আনুষ্ঠানিকতার সময় ২০০৭। এই অসংগতি যাচাইয়ের পর দৈনিক সংগ্রামের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাকে চীফ রিপোর্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ওনার স্থলে দায়িত্বভার প্রদান করা হয় সামছুল আরেফীনকে।

এদিকে, তার জালিয়াতকৃত সনদ ও ভুল তথ্য উপস্থাপন এবং অফিসে কলিগদের সঙ্গে পেশাগত অসদাচরণ করার অভিযোগে দৈনিক সংগ্রাম কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির সদস্যরা অভিযোগের সত্যতা পায় এবং সেই আলোকে ব্যবস্তা গ্রহণ করে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় এবং জালিয়াতি চক্রের রহস্য উদঘাটনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে জানিয়েছে। সেইসাথে দেশের শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সাহায্য নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, নিজেকে বীরমুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও তার কোন সার্টিফিকেট নেই। গত বছর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি থেকে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিতে চাইলে তিনি মুক্তিযুদ্ধের কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি।

এর আগে কয়েকবার দৈনিক সংগ্রাম কর্তৃপক্ষ রুহুল আমিন গাজীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র তলব করলেও তিনি দাখিল করেননি।তাছাড়া গাজী নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জনসভায় প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘এধরনের দাবি ভুয়া এবং উদ্দেশ্যমুলক।’

এছাড়াও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সপ্তম নিউজপেপার ওয়েজবোর্ডের সদস্য, সাংবাদিক শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ  প্রেস ইন্সটিউিট, শিশু কল্যান ট্রাস্ট, ফিল্ম সেন্সর বোর্ড, ওয়াসা পরিচালনা বোর্ডসহ নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে এবং আওয়ামীলীগপন্থী কয়েকজন সাংবাদিক নেতার সঙ্গে সখ্যতা থাকার দোহাই দিয়ে ব্যক্তিগত অপরাধ ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করে চলেছেন ধুরন্ধর এই নেতা।

সাম্প্রতিক সময়ে তিনি অফিসের এক জুনিয়র কলিগের সঙ্গে অপেশাদার আচরণ করে আলোচনায় আসেন। একেবারেই অপেশাদার, ব্যক্তিগত আক্রমনাত্নক, অশ্লীল ও অশালীন আচরণের জন্য তার বড় ধরণের খেসারত দিতে হয়। নিজের সহকর্মীকে বেয়াদব, বেয়াদবের বাচ্চা বলায় কেউ তার আচরণকে ভালভাবে নেয়নি। সবাই তার ব্যাপারে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানান।

কর্মস্থলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কারো কোন কথা তাঁর পছন্দ না হলেই তিনি চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করতেন। এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন, এমনকি বাবা-মা তুলে গালাগালি করতেন ।

সর্বোপরি তাঁর বয়সের ব্যাপক পার্থক্য এবং তার রূঢ় আচরণ অফিসের পরিবেশকে আরও জটিল করে তুলে।তবে বিষয়টি নিয়ে রুহুল আমিন গাজীর সাথে গণমাধ্যম কর্মীরা কথা বললে, তিনি তাদের জানান, তার  প্রতি আনা অভিযেগটি ডাহা মিথ্যা।

তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের আরও বলেন, তিনি  সংগ্রাম পত্রিকায় সম্পাদক হবার জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সার্টিফিকেট জমা দেননি এবং এজন্যে তাকে কোনো অব্যহতিপত্র দেওয়া হয়নি। তবে অনার্স মাস্টার্স করার কথা বায়োডাটায় উল্লেখ থাকলেও তিনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন তা উল্লেখ করেন নি। তিনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করেছেন গণমাধ্যম কর্মীদের এমন  প্রশ্নে তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং এ বিষয়ে কিছু বলতে ইচ্ছুক নন বলে গণমাধ্যম কর্মীদের সাফ জানিয়ে দেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *