রাজধানীর উত্তরায় রিসোর্টের ফার্নিচার বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে ২৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রতারণার দায়ে প্রতারক চক্রের ১ সদস্য কে গ্রেফতার করলো পিবিআই 

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক : রিসোর্টের ফার্নিচার বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে ২৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রতারণা। পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর), কর্তৃক সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের এক সদস্য গ্রেফতার হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, সুসজ্জিত ভূয়া অফিস বানিয়ে রিসোর্টের ফার্নিচার ক্রয়ের প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের এক সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন জামান (৫৫), পিতা-মৃত আব্দুল হামিদ, মাতা-মৃত আমেনা বেগম, সাং-বাড়ী নং-০৬, রোড নং-০১, ১৩সি, থানা-কাফরুল, ঢাকা কে গত ২৪ মে, রাত আনুমানিক ১১ টা .১৫ মিনিটের সময়  মিরপুর মডেল থানা এলাকা হতে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর), ঢাকা এর একটি বিশেষ টিম অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে।


বিজ্ঞাপন

তদন্তে প্রকাশ পায় যে, অত্র মামলার বাদী জনৈক মোঃ সাহাদাত হোসেন একজন ফার্নিচার ব্যাবসায়ী। তিনি রিলায়েবল ফার্নিচার নামক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অনলাইনে ফার্নিচার ব্যবসা করেন।

গত ২২/০৬/২০২২ সালের বেলা অনুমানিক ১১ টায় তার কাছে আব্দুর রহমান নামক একজন লোক অনলাইন পেইজে দেওয়া মোবাইল নম্বরে কল করে একটি রির্সোট এর ফার্নিচার ক্রয় সংক্রান্তে কথা বলার জন্য তাদের অফিস বাড়ী নং-৮৩, রোড নং-১৭, সেক্টর -১১, উত্তরা মডেল টাউন, থানা- উত্তরা পশ্চিম, ঢাকায় বাদীকে যাওয়ার জন্য বলেন। বাদী সেখানে গিয়ে বজলুর রহমান (৫৫) এবং আরো কয়েক জন লোককে উক্ত অফিসে দেখতে পায়। বজলুর রহমান ঐ অফিসে থাকা অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে বাদীকে পরিচয় করিয়ে দেয়।

বাদীকে রিসোর্টের ১৩০ টি রুমের ফানির্চার কেনার জন্য বাদীর ব্যাবসায়িক প্যাডে ১,৬৯,৭৭,৬০০ (এক কোটি উনসত্তর লক্ষ সাতাত্তর হাজার ছয়শত) টাকার কোটেশনসহ এ সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা দিতে বলে।

বাদী তার ব্যবসায়িক প্যাডে কোটেশন দাখিল করেন। পরবর্তীতে তাদের অফিসেই ব্যবসায়িক আলোচনার একপর্যায়ে বাদীকে তাদের সাথে কেমিক্যাল ব্যবসা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ব্যবসায় অংশিদার হওয়ার প্রস্তাব করেন। বাদী তাদের উক্ত প্রস্তাবে সরল বিশ্বাসে রাজী হয়।

পরবর্তীতে বাদীর দোকানের ম্যানেজার সফিকুল ইসলামকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে আসামীদের অফিসে গিয়ে প্রতারক চক্রের নিকট সর্বমোট ২৫,৫০,০০০ (পচিশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা প্রদান করেন।

পরবর্তীতে আসামীদের বিভিন্ন কার্যকলাপ দেখে সন্দেহ হওয়ায় বাদী তার প্রদানকৃত টাকা ফেরৎ চাইলে আসামীরা সময় নিয়ে কৌশলে উল্লেখিত ঠিকানার ভূয়া অফিস ছেড়ে আসবাবপত্র সহ অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যায়।

বাদীর পাওনা টাকা উদ্ধারের জন্য উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেন। পরবর্তীতে বাদী আসামীদের নিকট হতে টাকা উদ্ধার করতে না পেরে প্রতারনার ঘটনার বিষয়ে আইনি সহায়তা চেয়ে র‌্যাব-১, সিপিসি-৩ (পূর্বাচল ক্যাম্প), রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এর কোম্পানী কমান্ডার বরাবরে একটি অভিযোগ করে।

উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১,সিপিসি-৩ (পূর্বাচল ক্যাম্প) ১৮/০৮/২০২২ তারিখে  ডিএমপি ঢাকা’র উত্তরা পশ্চিম থানাধীন সাহিদা ম্যানসন, বাড়ী নং-০১, রোড নং-১৫ সেক্টর-১২, উত্তরা মডেল টাউনস্থ ৬ তলা ভবনের ৪ তলার উত্তর পার্শের ফ্ল্যাট হতে এজাহারভুক্ত  আসামী  আব্দুল বারেক @ এবি বারী @ আব্দুল বারেক প্রধান @ মোমিন খান @ মোঃ বারেক @ বারী @ আফসার উদ্দিন খান (৬৪),  আমিনুর ইসলাম আমিন @ মোঃ আমিনুল ইসলাম @ আমিন @ বাদল (৪৪) এবং  সালাউদ্দিন (৪৩) দের গ্রেফতার পূর্বক আদালতে প্রেরণ করেন।

এ বিষয়ে রাজধানীর  উত্তরা পশ্চিম থানার মামলা নং-৪৯(৮)২২, ধারা-৪০৬/৪২০/৩৪ পেনাল কোড) অনুযায়ী একটি মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার পূর্ববর্তী তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে অত্র মামলার এজাহারভুক্ত ৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ প্রমানিত হলেও তার তদন্তকালে অত্র মামলার এজাহারভুক্ত  পলাতক আসামী মোয়াজ্জেম হোসেন জামান (৫৫) ও আসামী মাসুদ (৫১) দ্বয়ের পূর্নাঙ্গ নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে না পারায় তাদেরকে অত্র মামলার দায় হতে অব্যহতির আবেদন করে। উত্তরা পশ্চিম থানার অভিযোগপত্র নং-৪২২, তারিখ-৩০/১০/২০২২,  ধারা-৪০৬/৪২০/৩৪ পেনাল কোড আদালতে দাখিল করেন।

বাদীর নারাজীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই, ধানমন্ডি ঢাকা’কে নির্দেশ প্রদান করেন। গত ২২ মে, এসআই (নিঃ)/মোঃ রবিউল ইসলাম, পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর), ঢাকাকে তদন্তকারী কর্মমর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

বিশেষ পুলিশ সুপার পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর), ঢাকা এর দিক নির্দেশনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার ডকেট প্রাপ্তির ২ (দুই) দিনের মধ্যে পলাতক আসামী মোয়াজ্জেম হোসেন জামান (৫৫), কে গত ২৪ মে মিরপুর মডেল থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ০১ (এক) দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামী কে জিজ্ঞাসাবাদে এজাহারভুক্ত  ৫নং পলাতক আসামী মাসুদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ন তথ্য পাওয়া যায় এবং তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামীকে  আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *