বিশেষ প্রতিবেদক : বিআইডব্লিউটিএ, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর ও নৌ পুলিশের দায়িত্বহীনতার কারণেই নৌ পথের দুর্ঘটনা থামছে না বলে মনে করেন নৌপথ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কিভাবে একজন অদক্ষ চালক সার্চ লাইটবিহীন যাত্রীবোঝাই লঞ্চ নিয়ে শরিয়তপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো সেটিই বিস্ময়কর। সব দায় চালকের ওপর চাপিয়ে বিআইডব্লিউটিএ বলছে, তদন্ত করে দুটি লঞ্চের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি রুটের মধ্যে তুলনামূলক সবচেয়ে ছোট ও ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলাচল করে ঢাকা-শরিয়তপুর নৌ রুটে। পদ্মা ও মেঘনা পারি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে এই রুট অতিক্রম করতে সময় লাগে ৪ থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা।
শনিবার ভোররাতে এই রুটের মানিক-৪ লঞ্চটি দুর্ঘটনার জন্য প্রাথমিকভাবে লঞ্চের মাস্টারের অদক্ষতা ও ফিটনেস না থাকাকেই দায়ী করেছে বিআইডব্লিউটিএ। তবে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইন্সটিটিউট বলছে, ফিটনেসবিহীন লঞ্চ নিয়ে কিভাবে একজন অদক্ষ চালক ঘাট ত্যাগ করলো তার জবাব দিতে হবে বিআইডব্লিউটিএ ও সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরকেই। এছাড়া লঞ্চটি যখন লেন না মেনে চলছিলো তখন নৌ পুলিশও উদাসীন ছিলো বলে মনে করে সংস্থাটি।
বুয়েটের নৌপথ বিশেষজ্ঞ মো. ইমরান উদ্দিন বলেন, যে শ্রেণির মাস্টার লঞ্চ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তিনি সে শ্রেণীর জন্য উপযুক্ত ছিলেন না। এর পাশাপাশি লঞ্চটা নির্ধারিত ডান পাশ দিয়ে চলার কথা ছিলো সে দিক দিয়ে চলছিলো না। সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের কর্মকর্তা আরেকটু সতর্ক হলে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
লোক দেখানো তদন্ত কমিটির রিপোর্ট কখনই আলোর মুখ দেখে না বলে দুর্ঘটনা বন্ধ হয় না বলেও মনে করেন তিনি।
বুয়েটের নৌপথ বিশেষজ্ঞ বলেন, দুর্ঘটনা ঘটার পর ড্রাইভারকে শাস্তি দিলেই শেষ হয়ে যায় না। এটাকে ফলোআপ করার জন্য মনিটরিং গ্রুপ গঠন করলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
ত্রুটি নিয়ে যেসব কর্মকর্তারা লঞ্চ ছাড়ার অনুমতি দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক পরিচালক আবু জাফর হাওলাদার বলেন, লঞ্চ দুর্ঘটনার বিষয়ে আমরা কঠোরভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নৌ পথে ২৬৮ টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ হাজার ৪৩১ জন। নিখোঁজ হয়েছে ২৭৮ জন।