বিসিকে স্বৈরাচারী কায়দায় কমিটি গঠন !

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

বিশেষ প্রতিনিধি : স্বৈরাচারী কায়দায় কমিটি গঠন করার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে বিসিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ১ লা সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে জারীকৃত বিসিক অফিস আদেশ স্মারক নং-৩৬.০২.০০০০.০০৩.০৬.০০৩.২১.১০৬৪১ এর মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত কমিটির আকার, কমিটির সদস্য এবং সহযোগী সদস্যদের বিষয়টি নিয়ে অফিস আদেশ জারীর পর পরই বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিসিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে।উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত কমিটির অবাস্তব সাংগঠনিক কাঠামো এবং কর্মচারী চাকুরী প্রবিধানমালার কারণে কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।


বিজ্ঞাপন

কমিটিতে চারজন পরিচালককে সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে, যারা সকলে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের অন্যতম দোসর এবং স্বেচ্ছাছারিতা এবং মানবাধিকার লংঘনের মতো ঘটনার সাথে যুক্ত ছিলেন, এখনও আছেন, যা তাদের কার্যক্রমে প্রমাণ মিলে। বিসিকের পরিচালক (অর্থ) মোঃ কামাল উদ্দিন বিশ্বাস যিনি কুটকৌশলে সবার উপরে এবং যিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়েও পদোন্নতি প্রাপ্ত হননি যথার্থ কারণে। পরিচালক(প্রশাসন) শ্যামলী নবী তিনি নিজেকে আইনের উর্ধে মনে করেন বিধায় ধরাকে স্বরাজ্ঞান মনে করে কাজ করে যাচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন

পরিচালক (প্রশাসন) হিসাবে তার ধারনা থাকা উচিৎ কোন বিষয়ে কি পরিমাণ সদস্য নিয়ে, কাদেরকে সদস্য পদে রাখার বিধান আছে, বিতর্কিত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোন কমিটির সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা? কোন বিষয়ে অফিস আদেশ জারী করা হচ্ছে-তা বাস্তবতার আলোকে বিবেচনায় রেখেই কমিটি গঠনের বিধান আছে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে ব্যর্থ হয়েছেন বিসিকের পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী। অপরদিকে উপ-সচিব পদমর্যাদার ২ জন জি স্যার, হ্যাঁ স্যার বলতে বলতেই তাদের দিন পার করছেন এবং স্যারদের সাথে সুর মিলিয়ে অমানবিক আচরণ করে যাচ্ছেন। বেশ কিছু অনলাইন দৈনিক এবং দৈনিক সংবাদপত্রে (প্রিন্ট মিডিয়ায়) তাদের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে তারা কোন প্রকার প্রতিবাদলিপি পাঠাতে সক্ষম হননি।

সরকারী এবং বেসরকারী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই একটি সাংগঠনিক কাঠামো থাকে, থাকে একটি চাকুরী প্রবিধাণমালা। অথচ বিসিক হতে অফিস আদেশ জারী করা হয়েছে বিসিক আইন-২০২৩ বাস্তবায়নের জন্য বিসিক সাংগঠনিক কাঠামো ও বিসিক প্রবিধানমালা হালনাগাদকরণের বিষয়ে কমিটি পুনর্গঠন করা হলো মর্মে-যা কোন মতেই সঠিক নয়।

কেননা বিসিক আইন-২০২৩ একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন। অপরদিকে বিসিকের সাংগঠনিক কাঠামো এবং বিসিক কর্মচারী প্রবিধানমালা হালনাগাদ করার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের ২২ আগষ্ট ২০২৪ তারিখের ৭৩৩ নং স্মারকের পত্রে নির্দেশনা প্রদান করা আছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে বিসিকের সাংগঠনিক কাঠামো এবং বিসিক কর্মচারী প্রবিধানমালা হালনাগাদ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারী প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামো এবং চাকুরী প্রবিধানমালা প্রণয়ন বা হালনাগাদ করণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ষ্টেকহোল্ডারদের মতামত নিয়ে তা প্রণয়ন বা হালনাগাদ করার নির্দেশনা আছে।

গঠিত অফিস আদেশে স্বৈরাচারী মনোভাবাপন্ন এবং বিতর্কিত কর্মকর্তাদের সদস্য এমনকি সদস্য-সচিব পদে রাখা হলেও বিসিক কর্মকর্তা সমিতি এবং বিসিক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কোন প্রতিনিধিকে কমিটির সদস্য পদে রাখা হয়নি। গঠিত কমিটিতে স্বৈরাচারী সরকারের অন্যতম তাবেদার বর্তমানে পলাতক ডিবি হারুন এর কাছের লোক বলে পরিচিত মোঃ মেরাজ উদ্দিনকে সদস্য-সচিব হিসাবে এবং তথাকথিত ১৫ ব্যাচের মোট ৫ জনকে (ক্রমিক নং-০৭,০৮,০৯,১১ ও ১২) গঠিত কমিটির সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে। যারা সকলে ৬ষ্ঠ গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা। সংগত কারণে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বিসিক পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী এর আন্তরিকতা, সততা এবং যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে।

অপরদিকে সহযোগী কর্মকর্তা হিসাবে রাখা হয়েছে মোঃ মেরাজ উদ্দিনের পছন্দের লোকজনকে। যাদের মধ্যে কর্মী ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোঃ আরিফ হোসেন নামক একজনের বিষয়ে অদক্ষতা, অযোগ্যতা, নিয়োগ বানিজ্য, সংসদীয় কমিটির কাছে জনবল বিষয়ে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনকারী, চরমভাবে কর্মচারী বিদ্বেষী মনোভাবাপন্ন আচরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি কমিটিতে ৫ম গ্রেডের একজন কর্মকর্তাকেও রাখা হয়নি, যা অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অন্যতম নিদর্শন। তাছাড়া গঠিত কমিটি বৈষম্যমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ।

হাউন আংকেল (ডিবি হারুন) এর মতাদর্শে বিশ^াসী মোঃ মেরাজ উদ্দিন এবং তার পছন্দের লোকজন কোন অবস্থাতেই সুষ্ঠ ও সঠিকভাবে বিসিকের সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাসের জন্য এবং বিসিক চাকুরী প্রবিধানমালা হালনাগাদ করণের উপযুক্ত ব্যক্তি হতে পারেনা। যেমনি উপযুক্ত ব্যক্তি হতে পারেনা তথাকথিত ১৫ ব্যাচ নামধারী কাজী শাহীনুর আলম, মোঃ নাজমুল হোসেন, মোঃ আসিফ উল হাসান, এ,কে,এম, ফজলুর রহমান গংরা।

পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ মেরাজ উদ্দিন এবং নাজমুল হোসেন এর প্ররোচনায় ৫ম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে এবং নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তাদেরকে গঠিত এ কমিটির সদস্য এবং সহযোগী কর্মকর্তা হিসাবে স্থান দেয়া হয়েছে সরকারের অর্থ অপচয়ের জন্য। কারণ প্রচলিত বিধানমতে প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন এ জাতীয় প্রশাসনিক কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের বিধান আছে। পরিচালক (প্রশাসন) তথাকথিত ১৫ ব্যাচকে প্রাধান্য দেয়ার কারণটি পরিষ্কার নয়।

সাংগঠনিক কাঠামো এবং চাকুরী প্রবিধানমালার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কমিটি গঠন বা কমিটি পুনর্গঠনকালে ১ জন পরিচালকের নেতৃত্বে দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং আন্তরিকতা সম্পন্ন কর্মকর্তা এবং ষ্টেক হোল্ডার প্রতিনিধি সমন্বয়ে ৫ থেকে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের বিষয়টি অনুধাবনপূর্বক ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে পুনর্গঠিত কমিটি বাতিল করে নতুনভাবে কমিটি গঠনের ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব বিসিক চেয়ারম্যান এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের। কর্মকর্তা কর্মচারিরা এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা,সচিব ও বিসিক চেয়ারম্যানের পদক্ষেপ কামনা করেছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *