নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ অভিযুক্ত প্রতারক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের নাম ভাঙ্গিয়ে তার কোম্পানীতে চাকুরী এবং শেয়ার দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আতœসাৎ করত এবং পরবর্তীতে তাদেরকে কোম্পানীর শেয়ারের টাকার লভ্যংশ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক প্রদান করত। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা চেক নিয়ে ব্যাংকে গেলে দেখা যেত তার দেয়া চেকের বিপরীতে একাউন্টে কোন টাকা নেই। এভাবে সে বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারনা করে আসছে।
তাকে যেন ভুক্তভোগীরা সহজে খুজে না পায় সেজন্য সে তার নিজ জেলার স্থায়ী ঠিকানায় অবস্থান না করে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল এবং বন্ধুদের বাসায় অবস্থান করত। উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রাম শহরেও তার নিজের একটি বাড়ি আছে সেখানেও সে থাকতো না এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়ানোর অন্য জায়গায় অবস্থান করতো।
মাসের বিভিন্ন সময়ে এই প্রতারক মোহাম্মদ আব্দুল হক ঢাকার গুলশান এবং বনানী এলাকার বিভিন্ন অভিজাত হোটেল এবং বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করত। এছাড়াও সে তার একাধিক মোবাইলে ঘন ঘন সিম পরিবর্তন করে ব্যবহার করত যাতে তার সাথে কেউ সহজে যোগাযোগ করতে না পারে।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম মহানগর এবং ঢাকার বিভিন্ন বিলাসবহুল এলাকায় অবস্থান করে মোহাম্মদ আব্দুল হক নামের একজন ব্যক্তি বিভিন্ন মানুষের সাথে এরুপ প্রতারণা করে আসছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত প্রতারককে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক নজরদারী অব্যাহত রাখে।
তারই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উক্ত প্রতারক মোহাম্মদ আব্দুল হক চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের মেইন গেইটের সামনে পাকা রাস্তা উপর অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার ২২ মে ৬ টা ৪৫ মিনিটের সময় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালান করে আদালত কর্তৃক সাজা পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামী মোহাম্মদ আব্দুল হক, পিতা-মজিবুল হক, সাং-বাড়ী নং ১৮, লেন ১, ব্লক -আই, হালিশহর, চট্রগ্রামকে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম ও অন্যান্য কার্ড, বিদেশী ডানহিল সিগারেট, চেক বই, আইপ্যাড ট্যাব, বিভিন্ন ব্রান্ডের হাতঘড়ি, আইফোন এবং এ্যান্ড্রয়েড মোবাইলসহ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে, উপরোক্ত ঘটনার কথা নিজ মুখে অকপটে স্বীকার এবং বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে প্রতারনা করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছে বলে জানায়।
উক্ত আসামীর নিজ স্বীকারোক্তী মতে, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভুক্তভোগী কর্তৃক ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার ১৫ টি চেক জাল-জালিয়াতির মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে ঢাকা ও চট্টগ্রামে চেক জালিয়াতির ১৫ টি মামলা পাওয়া যায়।
যার মধ্যে ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক ৯ টি মামলাতে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
বাকী মামলা গুলো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।