মন্তব্য প্রতিবেদন ঃ সরকারের দমন-পীড়নসহ নানা কারণে কোণঠাসা বিএনপি পালাবদলে আশাবাদী হয়ে রাজপথে নেমেছে

Uncategorized অন্যান্য



নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের দমন-পীড়নসহ নানা কারণে তৈরি ক্ষোভের প্রেক্ষিতে গত চার বছর ধরে কোণঠাসা বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষমতার পালাবদলে আশাবাদী হয়ে রাজপথে নেমেছেন, যা রাজনীতিতে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। যদিও সরকারি দল মনে করছে, বিএনপির এই আন্দোলন তারা যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বদিউল আলম মজুমদার গণমাধ্যম কে বলেন,ক্ষমতাসীন দল এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বাত্মক প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে বিএনপি মাঠের কর্মসূচি পালন করতে সক্ষম হয়েছে। এখন ক্ষমতাসীনরা যেমনই দাবি করুক না কেন, এ যাত্রায় বেশি ক্ষতি আওয়ামী লীগেরই হয়েছে। তাঁর মতে, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে দেওয়া পরিবহন ধর্মঘটসহ নানা প্রতিবন্ধকতার পরও যে বিপুল সংখ্যক লোকসমাগম করতে দলটি সক্ষম হয়েছে, তা মোকাবেলায় আওয়ামী লীগকে রীতিমতো রাজনৈতিক বিরোধী দল, গণমাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থা ও নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়েছে।
এতে করে যা হয়েছে, ক্ষমতাসীন দলটির নিয়ন্ত্রণমূলক ও স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ আরও উন্মোচিত হয়ে পড়েছে,যোগ করেন তিনি। আওয়ামী লীগবিরোধী ঐক্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এটা খুব স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে তার গতিপথ পরিবর্তন করতে আগ্রহী না। বিরোধী দলগুলোকে কোনো বাধা ছাড়া তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং মানবাধিকারকে সম্মান করার বিষয়ে বিরুদ্ধ অবস্থান স্পষ্ট।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক তোফায়েল আহমেদের মতে, মানুষ যখন দেখেছে যে, বিএনপি সব বাধা উপেক্ষা করে কর্মসূচি সফল করে তুলছে তখনই বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে ক্রমান্বয়ে উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে।
এই বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে সমাবেশগুলো শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে পারা বিএনপির জন্য একটি সাফল্য,গণমাধ্যমে বলেন তোফায়েল আহমেদ। বিএনপির সাম্প্রতিক সমাবেশগুলোর প্রতিটিতে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে, জানিয়ে এ প্রসঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু গণমাধ্যম কে জানান,অমাদের কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষও অংশ নিতে শুরু করেছে।
দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এখন খুবই সংগঠিত,বলেন তিনি।
ভবিষ্যতে সংঘাতের আশঙ্কাঃ
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে দেশের প্রধান দুই দলের মুখোমুখি অবস্থান বর্তমানে দেশে সবচেয়ে বড়ো রাজনৈতিক সংকট বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিরোধী দলগুলোর চলমান আন্দোলন কর্মসূচিতে সহিংসতা আগামীতে সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে তাঁদের। বাংলাদেশে যে সংঘাতপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতি, তাতে এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে, ১০ তারিখের সমাবেশে বিএনপিকে চাপে ফেলার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ সংঘাত এড়ানো সম্ভব হবে, গণমাধ্যম কে জানান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ।
তিনি মনে করেন, সামনের দিনগুলোতে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক ময়দানে শক্তি প্রদর্শনে আরও সক্রিয় হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির ঢাকার সমাবেশে দেওয়া ১০ দফা নতুন দাবি না হলেও একত্রিত করে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আন্দোলনের একটি পরিষ্কার রূপরেখা হাজির হলো। এর ভিত্তিতে সমমনা বা আওয়ামীবিরোধী অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও রাজপথে ‘গণতন্ত্র উদ্ধারের’ আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার উপলক্ষ পাবে। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার গণমাধ্যমে বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার পথ উন্মুক্ত রাখা এবং গণতন্ত্র সুরক্ষায় প্রত্যেকেরই এগিয়ে আসা। এ ধরনের মুখোমুখি অবস্থান কোনো ভালো ফল দেবে না।
সংসদ থেকে বিএনপি এমপিদের পদত্যাগ একটি বার্তা, তবে বড়ো সমস্যা নয়, যোগ করেন তিনি। উল্লেখ্য, প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ৭ জন সংসদ সদস্য রোববার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। গত ১০ ডিসেম্বর দলটির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সর্বশেষ ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে তাঁদের পদত্যাগের ঘোষণা আসে।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল, ক্ষমতাসীন দলের পদত্যাগ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনসহ ১০ দফা দাবিও জানানো হয় ওই সমাবেশ থেকে। বিএনপি নেতাদের ভাষ্য, এর মধ্য দিয়ে তাঁদের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছেছে।আমরা মনে করি, এই অনির্বাচিত সংসদ জনগণের প্রত্যাশা পূরণে পুরোপুরি ব্যর্থ এবং একটি স্বৈরতান্ত্রিক অবস্থাকে গণতন্ত্র বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা, তাই আমরা নিজেদের ইচ্ছায় এবং দলীয় সিদ্ধান্তে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছি,গণমাধ্যম কে জানান, বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা।অপরদিকে সংসদ থেকে বিএনপি দলীয় সদস্যদের এই পদত্যাগ কোনো প্রভাব তৈরি করবে না বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক হারুন।
তিনি বলেন, এই পদত্যাগে কিছুই যাবে বা আসবে না। এটা বিএনপির অদূরদর্শী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সংসদ থেকে পদত্যাগ একটি রাজনৈতিক বার্তা হতে পারে কিন্তু এটা কোনো সমাধান নয়, বলেন আলী ইমাম মজুমদার।

নির্বাচনেই ফাইনাল খেলা হবে: ওবায়দুল কাদেরঃ নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুরনো দাবি তুলে বিএনপির পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত না হলে বিএনপি তাতে অংশগ্রহণ করবে না। কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, ইতোমধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। দাবি আদায়ে আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলন শুরু হবে।আওয়ামী লীগের দাবি, দেশে গণতান্ত্রিক ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপির ৭ সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছেন।
বিএনপির ৭ সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলে সরকার পতন হয় না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ৩৫০ জন সদস্য নিয়ে সরকার গঠিত হয়েছে। জাতীয় পার্টি, বিকল্প ধারা আছে। সোমবার চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছেন, “১০ ডিসেম্বরের খেলায় আমরা জিতে গেছি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *