কুটনৈতিক প্রতিবেদক ঃ সোমবার ১৫ মে জাপানের নাগাসাকি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ‘ ইন্টারন্যাশনাল সিম্পোজিয়াম এডভানসিং দি গ্লোবাল হেল্থ এজেন্ডা ফ্রম নাগা সাকি টু দি ওয়ার্ল্ড ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে বাংলাদেশ, কেনিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া ও জাপানসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিগণ অংশ নেন।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম অংশ নেন।
সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য প্রতিনিধিগণ স্বাস্থ্যসেবায় তাঁদের নিজ দেশ ও সংস্থার কার্যক্রম তুলে ধরেন।
উক্ত সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১০ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়নে জাপান সরকার ও বিশ্ব ব্যাংক ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
গত ৩ বছরে স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি করতে প্রায় ৭০ হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২০ হাজার চিকিৎসক, ৩০ হাজার নার্স ও ২০ হাজার জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, দেশের প্রায় ৫০০টি উপজেলায় ২৫ বেড থেকে বর্তমানে ৫০ বেডের আধুনিক হাসপাতাল করা হয়েছে। প্রতিটি জেলা হাসপাতালকে ২৫০ বেডে উন্নীত করা হয়েছে।
২২টি ৫০০ বেডের আধুনিক মানের চিকিৎসা ইনস্টিটিউট, এক হাজার বেডের ৩৭ টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৫ টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধিতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১৪ হাজার ২৮০ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে ৩২ রকমের ওষুধ দেওয়া হয়। এই ক্লিনিকগুলোতে প্রায় ৫০ হাজার লোকবল স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে।
এর সাথে ৪,৬৫০টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের বিনামূল্যে ওষুধ, পরামর্শ ও ডেলিভারি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্য মন্ত্রী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সময়োপযোগী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের ফলে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক বিবাহিত নারী গড়ে ৬.৯ জন সন্তান জন্ম দিতেন। বর্তমানে প্রতিটি নারী গড়ে ২ জন সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। এতে দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে ভারসাম্য রক্ষা পেয়েছে।
বাংলাদেশ শিশু মৃত্যু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসে অভাবনীয় সাফল্য লাভ করায় জাতিসংঘের কাছ থেকে ২০১০ সালে এমডিজি পুরস্কার লাভ করে।
টিকা প্রদানে বাংলাদেশের সফলতা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ১৯৮৪ সালে টিকাদানে বাংলাদেশের সফলতা ছিল মাত্র ২ ভাগের নিচে। বর্তমানে ২০২২ সালে সেটি দাঁড়িয়েছে ৯২ শতাংশে। বর্তমানে দেশের ৯২ শতাংশ ১২-১৩ বছর বয়সী শিশু যক্ষ্মা, হাম, পোলিও, টিটেনাস, হেপাটাইটিস রোগ মুক্ত।
দেশে ওষুধ শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দেশে বর্তমানে ৩.১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ওষুধ উৎপাদন হচ্ছে। এসব ওষুধ দেশের ৯৭ ভাগ চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।