জঙ্গিরা যে নামেই আসুক না কেন, বাংলাদেশে তাদের স্থান হবে না———–ডিএমপি কমিশনার!  

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

গুলশানের জঙ্গি হামলার স্মৃতি স্তম্বে পুস্পস্তবক অর্পন।


বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ   নিউ জেএমবি বা শারক্বীয়া যে নামেই জঙ্গিরা আসুক না কেন, বাংলাদেশে তাদের স্থান হবে না। দেশবাসীকে সাথে নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের প্রতিহত করবে।


বিজ্ঞাপন

শনিবার সকালে গুলশান হলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার সাত বছর পূর্তিতে গুলশান নতুন থানা ভবনের সামনে ‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্যে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, বিপিএম(বার), পিপিএম। এরপর ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন ও বিদেশি কূটনীতিগণ।

ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞ্যাপন করেন পুলিশ পরিবার।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে দেশি-বিদেশি চক্রান্তের ফলে ২০১৫-১৬ সালে বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার ঘটনাগুলো ঘটানো হয়। ২০১৬ সালে হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলার ফলে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীরা উন্নয়ন কর্মকান্ড বন্ধ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ জনগণকে সাথে নিয়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। ফলে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আসে, উন্নয়ন সহযোগীরা পুনরায় ফেরত এসে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জঙ্গিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার ফলে জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তিনি বলেন, নিউ জেএমবি বা শারক্বীয়া নামে দু’একটি জঙ্গি সংগঠন মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ, র্যা ব তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। শারক্বীয়ার প্রধানকেও ডিএমপির সিটিটিসি ইউনিট ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, জঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) নামে পুলিশের আলাদা একটা ইউনিট রয়েছে। এছাড়া ডিএমপির সিটিটিসি ও র্যা বের গোয়েন্দা টিমগুলো অনবরত তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে। পাশাপাশি সিটিটিসি পথনাটক, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এ সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) ড. খঃ মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহাঃ আশরাফুজ্জামান বিপিএম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম(বার); যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার সর্ববৃহৎ এ ঘটনাটি ঘটে ২০১৬ সালের ১ জুলাই। সেদিন ছিল শুক্রবার। রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় পাঁচজনের একটি সন্ত্রাসী দল অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীদের নৃশংসতার বলি হয় দেশি-বিদেশিসহ মোট ২২ জন নাগরিক। যার মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয়, বাংলাদেশ-আমেরিকার দ্বৈত নাগরিক ১ জন এবং ২ জন বাংলাদেশীসহ ২ জন পুলিশ কর্মকর্তা। রাতভর এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ অভিযানে উদ্ধার হওয়া জীবিত ৩২ জন।

যার মধ্যে প্রথমে পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হয় ২ জন বিদেশিসহ ১৯ জন, এরপর সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার হয় দেশি-বিদেশি মোট ১৩ জন। এই সন্ত্রাসী হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে অকালে আত্মত্যাগ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দুই নির্ভীক কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ রবিউল করিম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সালাহ উদ্দিন খান। হলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশের আত্মত্যাগকে স্মরণ করতে গুলশান নতুন থানা ভবনের সামনে ২০১৮ সালের ১ জুলাই ‘দীপ্ত শপথ’ নামে একটি ভাস্কর্য উদ্বোধন করা হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *