ফাইভস্টারের প্রধান ফটক যা বর্তমানে ফুলতলা উপজেলাবাসীর দুর্ভোগের মুল কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
মামুন মোল্ল্যা (খুলনা) : ফুলতলা ইউনিয়নে ড্রেনেজ ব্যবস্হা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় ৫ গ্রাম, উপজেলা ফুলতলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে তাদের জীবনযাপন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে । গ্রামগুলোর কয়েক হাজার বিঘা জমি ও শতাধিক নার্সারি পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়ির উঠানেও উঠেছে পানি। দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা থাকায় চরম বিপাকে পরেছে হাজারো মানুষ।
এলাকারবাসির অভিযোগ, ফাইভ স্টার এর প্রধান ফটক ও একটি ঘেরের বাঁধ বড় আকারে দেওয়া কারণে-ই তারা এই ভোগান্তিতে পড়েছেন। ফাইভস্টার নামক প্রতিষ্ঠানটি বিলের জমি ভরাট করে গরু ও মাছের খামার করেছে।
এলাকাবাসী আরও জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ফুলতলা ইউনিয়নের মালিয়া বিলে অল্প অল্প জমি কিনতে শুরু করেন ঢাকার ব্যবসায়ী ও নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।বর্তমানে তিনি এই বিলে ৭০ একর জমি কিনেছেন। বিলের জলাশয় ভরাট করে ২ বছর আগে একটি গরুর ফার্ম করেন। নাম দেন ফাইভ স্টার।পরবর্তীতে ক্রমশ তিনি পুরো বিলটি-ই ভরাট করে নেন।
গত বছর খুলনা – যশোর মহাসড়কের রাড়ীপাড়া এলাকায় ফুলতলা ইউনিয়নের পিছনে ভরাট করে ফাইভ স্টারের প্রধান ফটক করা হয়। ওই স্থানে পানি নিস্কশনের একটি কালভার্ট দিয়ে এ এলাকার পানি বিস্কাশন হতো। কিন্তু প্রধান ফটকের কারণে তা আংশিক বন্ধ হয়ে যায়। এখন কালভার্টটি দিয়ে শুধু ফাইভ স্টারের ফার্মের বর্জ্য ও পানি এবং এলাকার সামান্য পানি নিস্কশন হয়।
বর্তমানে গ্রামের ভেতরে একটি বড় ঘেরের বাঁধ উঁচু করে দেয়ার ফলে আশেপাশে রাড়ীপাড়া, দক্ষিণডিহি, নউদাড়ী ও সরদার বাড়ি গ্রামে জলবদ্ধতা দেখা দিয়েছিলো।এ সময় জলবদ্ধতায় থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গতো রোববার চার পাঁচ গ্রামের শত শত লোক জনপ্রতিনিধি একএিত হয়ে ঘেরটি কেটে দেয়।
পরবর্তীতে গত মঙ্গলবার স্কেটেভেটর দিয়ে ৪ ফুট চওড়া ও ৬ ফুট গভীর করে একটি ড্রেন কাঁটার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ ড্রেন কাটা শেষ হলে এলাকার জলবদ্ধতা দুর হবে বলে সরদার মোবারক হোসেনসহ এলাকার বাসির অভিমত।
এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ সম্পর্কে ফুলতলা ৪ নাং ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবুল বাশার জানান ফাইভ স্টারের প্রধান ফটকের সামনে দিয়ে যে ড্রেনটি নির্মিত আছে ওই ড্রেন দিয়ে আস্তে আস্তে পানি নিষ্কাশন হতো।
কিন্তু স্থানীয় ইট ভাটা মালিক শহিদুল ইসলাম মহলদারের একটি ঘেরের ভেড়িভাঁধের কারণে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।এ ব্যাপারে শহিদুল ইসলামের ছেলে নাজিমুজ্জামান শাহিন পুরো ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন, সামগ্রিক এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টির কারণে আমাদের বাড়িও জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের ঘরের কয়েক লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
ফাইভ ষ্টারের ব্যবস্হাপক তরিকুল ইসলাম বলেন, এভাবে পানি জমে থাকার আমাদের ও ক্ষতি হয়েছে। আমাদের মালিক বারবার বলেছে এ জলবদ্ধতা কিভাবে সমাধান করা যায় তার পথ খুঁজে বের করতে আমরা খুব শিগগিরই জনগণের সুবিধার জন্য আমাদের ড্রেনটি গভীরতা বাড়ানো হচ্ছে । ড্রেনটির গভীরতা বাড়ানো হলে আশা করা যায় জলবদ্ধতা অনেকাাংশে কমে যাবে।
আইয়ান জুট মিলের ব্যবস্হাপানা পরিচালক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ রাজীব ভূঁইয়া বলেন আমাদের জুট মিলটা প্রায় ১৪ বছর আগে করা। তখন কিন্তু এখানে জলবদ্ধতা হয়নি। আমরা সামগ্রিকভাবে সকলের সাথে আলাপ আলোচনা করে স্হায়ী সমাধান কিভাবে করা যায় সে চেষ্টা-ই করা হচ্ছে।
এলাকাবাসির সম্মিলিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফুলতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আকরাম হোসেন ও ইউএনও তাসনীম জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সুরাহ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।