ব্লক মার্কেটের কারিশমা

Uncategorized অর্থনীতি আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

 

বিশেষ প্রতিবেদন :  ব্লক মার্কেটে মূলত সর্বনিম্ন পাঁচ লক্ষ টাকার ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। ব্লক মার্কেটের মূল উদ্দেশ্য হল, পাবলিক মার্কেটে বাল্ক কোয়ান্টিটি ক্রয় বিক্রয়ের প্রভাব পড়তে না দেওয়া। ব্লক মার্কেটে ক্রেতা এবং বিক্রেতা দুজনেরই আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সার্কিট ব্রেকার এর মধ্যে শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, FORTUNE SHOE। গতকাল অর্থাৎ ১০-৮-২২ তারিখে FORTUNE ব্লক মার্কেটে লেনদেন হয়েছিল ৭৯.৫০ টাকা থেকে ৮৭.১০ টাকা পর্যন্ত। মোট শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৪,৪৭,৭২১ টি। যেখানে পাবলিক মার্কেটে ফ্লোর প্রাইসে ৭৯.৫০ টাকা বিক্রেতার পরিমাণ ছিল প্রায় ১০ গুণ বেশি।


বিজ্ঞাপন

এখন প্রশ্ন হল যেখানে ফ্লোর প্রাইসে অর্থাৎ ৭৯.৫০ টাকায় শেয়ার ক্রয় করার সুযোগ রয়েছে সেখানে কেন আমরা ৮৭.১০ টাকায় শেয়ার ক্রয় করতেছি।

আমরা কেমন বিনিয়োগকারী? যে কিনা প্রতি শেয়ারে ৭.৬০ টাকা বেশি দাম দিচ্ছি। এটা স্পষ্ট যে, এখানে কিছু স্টক ব্রোকার অথবা অথোরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ গন বিশেষ সুবিধা নিয়ে উক্ত বিষয়গুলো কারসাজির সাথে সম্পৃক্ত থাকে। অথবা নির্দিষ্ট শেয়ারের ভলিয়ুম বাড়িয়ে দেখানোর জন্য বিষয়টি করা হচ্ছে।

আবার এমন কিছু কিছু শেয়ার ব্লকে ট্রেড হয় যাহা পাবলিক মার্কেটে প্রভাবিত করা ছাড়াই ট্রেড করা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলি, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্স ১০-০৮-২২ তারিখে ৮,৪০০ শেয়ার ৫৯.৬০ টাকায় লেনদেন হয়েছিল। যাহার মূল্য দাঁড়ায় ৫,০০,৬৪০ টাকা। অথচ পাবলিক মার্কেটে ১,০৭,২১৯ টি শেয়ার ৫২.৫০ টাকা থেকে ৫৪.৮০ টাকায় লেনদেন হয়েছিল। উক্ত লেনদিনটি ৫৯.৬০ টাকায় লেনদেন হওয়াটা কোন যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। ব্লক মার্কেটের ৮৪০০ টি শেয়ার পাবলিক মার্কেটে লেনদেন হলে একটি ডিমান্ড-সাপ্লাই তৈরি হতো। যাহা পাবলিক মার্কেটের জন্য পজিটিভ পয়েন্ট ধরা যেত।

পাবলিক মার্কেটে শেয়ারের পরিমাণ এবং মার্কেট প্রাইস পর্যাপ্ত থাকা সত্ত্বেও ব্লক মার্কেটে লেনদে সংগঠিত করার ফলে যেসব সমস্যা হচ্ছে: ০১. মূল মার্কেটে ক্রেতা-বিক্রেতার চাহিদা ও সরবরাহ সংকট তৈরি হচ্ছে।

মূল মার্কেটে সঠিক শেয়ার দাম পাওয়া যাচ্ছে না। ব্লক মার্কেটে বেশি দামে শেয়ার লেনদেন হওয়া সত্ত্বেও ইনডেক্সে পজিটিভ প্রভাব পড়ছেনা।নির্দিষ্ট কমিশন পাওয়ার জন্য পাবলিক মার্কেটের চেয়ে ব্লক মার্কেটে কম-বেশি দামে শেয়ার লেনদেন সংঘটিত করা হচ্ছে, যাহার কারনে প্রতিদিন ব্লক মার্কেটের লেনদেন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে পাবলিক মার্কেট তাহার গতি হারাচ্ছে। ০৫. উক্ত বিষয়গুলোর জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নির্দিষ্ট শেয়ারের পাঁচ লক্ষ টাকার নিচে লেনদেনকারী ক্ষুদ্র বিনিয়োগ কারিগন।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, সমাধান কি? আমার মতে ব্লক মার্কেটের লেনদেনের সীমা সর্বনিম্ন এক কোটি টাকা করা উচিত, যাতে ছোট ছোট লেনদেনগুলো সংঘটিত হতে না পারে। এতে আজকে যারা ব্লক মার্কেটে কারিশমা দেখাচ্ছে তারা পাবলিক মার্কেটে লেনদেন করতে বাধ্য হবে এবং মূল মার্কেটে লেনদেনের ফ্লো ভালো থাকবে।

লেখক :  এস এম রাশেদুল ইসলাম, সহকারী ব্যবস্থাপক, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *