শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার 

Uncategorized আইন ও আদালত খুলনা জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

মামুন মোল্লা (খুলনা) : খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ  কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার  শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে,  আজ শনিবার  ২১ অক্টোবর, সকাল ১১ টায় খুলনা  মহানগরীর খুলনা থানাধীন দোলখোলাস্থ শ্রীশ্রী শীতলা মাতা ঠাকুরাণী মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৩ উপলক্ষ্যে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ  কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা।


বিজ্ঞাপন

মহাসপ্তমীর সকালে চন্ডিপাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এসময় উলু ধ্বনি দিয়ে এবং সুসজ্জিত ব্যান্ড দল বাদ্য বাজিয়ে পুলিশ কমিশনার কে স্বাগত জানায়।

শুরুতেই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বাংলদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রশান্ত কুমার কুন্ডু খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মত উপহার বিতরণের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে পুলিশ কমিশনার এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার উপস্থিত সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মহাসপ্তমীর এরকম একটি শুভ মুহূর্তে আজকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সনাতন ধর্মলম্বী ভাই বোনদের মাঝে উপহার বিতরণ করতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত।

প্রতিবছর শরতের এই শুক্ল পক্ষকে দেবী পক্ষ বলা হয়, সেই দেবী পক্ষে কৈলাশ সরোবর থেকে দেবী দুর্গা ধরাধামে আসেন এবং সন্তানদের বর দিয়ে আবার বিসর্জনের মাধ্যমে বিজয়া দশমীতে স্বর্গে ফিরে যান।

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভক্তি শ্রদ্ধার মাধ্যমে এসময় আরাধনা করেন এবং দেবীর নিকট মাঙ্গলিক বিষয় প্রার্থনা করেন। ষষ্ঠীতে বেল পাতার মাধ্যমে পূজা দিয়ে দেবী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সপ্তমীর সকালে ১৬টি উপাদান দিয়ে দেবীর অচর্ণা করা হয়।

হাজার বছর ধরে এই ভূখন্ডে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের সাথে সকল ধর্ম মতের মানুষ একসাথে বসবাস করে আসছে । আবহমানকাল ধরে পরস্পরের আনন্দ আমরা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। এ সময় তিনি কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এর ভাষায় বলেন, “কালো আর ধলো বাহিরে কেবল, ভিতরে সবারই সমান রাঙ্গা”।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরা মানুষ এবং মানুষের মানবিকতাকে ধর্ম বর্ণ গোত্র দ্বারা বিভক্ত করা যায় না। প্রত্যেক জীবের প্রতি যত্নবান হলে এবং তাদের ভালোবাসলে, তবেই সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করা হয়।

এ সময় তিনি স্বামী বিবেকানন্দের বিখ্যাত উক্তি “জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর” এর কথা সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন। অবিনশ্বর স্রষ্টার কাছে সকল মানুষ সমান। সাকার নিরাকার উভয়েরই আরাধনাকারী আমরা প্রত্যেকেই পরমাত্মাকে পেতে চাই।

দেবী দুর্গাকে বহুভুজা বা কাত্যয়নি শক্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেবী দুর্গা যেমন অশুভ শক্তি প্রতীক অসুরকে প্রতিহত করেন তেমনি আমরা পুলিশ সদস্য যারা আছি, আমরাও সমাজে অন্যায় তিরোহিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর।

পরিশেষে পুলিশ কমিশনার  উপহার গ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া উপহার গ্রহণ করে আপনারা আমাদের আনন্দিত করেছেন।

তিনি আবারও উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য সমাপ্ত করেন।এরপর পুলিশ কমিশনার অনুষ্ঠানে আগত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে শাড়ি বিতরণের পাশাপাশি দুর্গাপূজার অন্যতম অনুষঙ্গ নাড়ু তৈরীর উপকরণ নারিকেল ও চিনি হস্তান্তর করেন।

উক্ত উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ  কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও)  সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক এন্ড প্রটোকল)  মোছাঃ তাসলিমা খাতুন, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর)  মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বিশেষ পুলিশ সুপার (সিটিএসবি)  রাশিদা বেগম, পিপিএম-সেবা, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, পিপিএম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিবি) বি.এম নুরুজ্জামান, বিপিএম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস অ্যান্ড সাপ্লাই)  এম এম শাকিলুজ্জামান, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ)  মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ইএন্ডডি)  মোঃ কামরুল ইসলাম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক)  মনিরা সুলতানা, সার্বজনীন পূজা উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী শ্যামা প্রসাদ কর্মকার-সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সাংবাদিকবৃন্দ ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *