গোপালগঞ্জে ইউএনও ও প্রকৌশলীর ছত্রছায়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত খুলনা বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী :  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীর ছত্রছায়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নালিশী ভূমিতে অবৈধভাবে পাকা সড়ক নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়   গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দিন ও উপজেলা প্রকৌশলী এস এম জাহিদুল ইসলাম  নালিশি ভূমিতে অবৈধভাবে এডিবি প্রকল্পের আওতায় পাকা সড়ক  নির্মাণে সহায়তা করেছেন।


বিজ্ঞাপন

অভিযোগ সূত্রে আরও  জানা যায়, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৭নং উরফি ইউনিয়নের ডুমদিয়া মৌজার এস.এ ১৬৯ নং খতিয়ান বি.আর.এস. ৪০ নং খতিয়ানে আর.এস ৮৫১ নং দাগ যাহার বি.আর.এস ১২৮৫ নং দাগে ১২ শতাংশের মধ্যে ২.৬২ শতাংশ ভূমি। উক্ত ২.৬২ শতাংশ নালিশি ভূমি নিয়ে গোপালগঞ্জ সদর সহকারী জজ আদালতে প্রায় এক যুগ ধরে একটি দেওয়ানী মামলা নং ২১১/১২ চলমান রয়েছে।

এছাড়াও উক্ত মামলায় চলতি বছরের ১৫ জুন পর্যন্ত বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক “স্থিতিতাবস্তা” বজায় রাখার নির্দেশ থাকলেও বিবাদী গং দের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হওয়ার সুবাদে স্থানীয় ৭নং উরফি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির গাজী ও গোপালগঞ্জ শহরের থানাপাড়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা শিবলী সরদার পরস্পর যোগসাজসে ইউএনও ও উপজেলা প্রকৌশলীকে  ম্যানেজ করে থানা পুলিশের প্রবল বাঁধা সত্বেও নিম্নমানের ইট, বালু, সিমেন্ট দিয়ে গত ২ ও ৩ জুন সাপ্তাহিক ছুটির দিন পাকা রাস্তা নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করে। ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্থ বিবাদীপক্ষকে সুষ্ঠু সমাধান দেওয়ার কথা বলে মাসের পর মাস মিথ্যা আশ্বাসে ঘুরাতে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।

পরে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে সাংবাদিক কে এম সাইফুর রহমান চলতি বছরের  ৬ আগস্ট,  গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর অবৈধভাবে নির্মিত উক্ত পাকা রাস্তাটি দ্রুত অপসারণ চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

উক্ত অভিযোগ প্রাপ্ত হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জুডিসিয়াল মুন্সিখানা থেকে গোপালগঞ্জ সদর ইউএনও অফিস বরাবর “বর্ণিত অভিযোগের বিষয়ে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়ে” চলতি বছরের  ১০ অক্টোবর,  স্বাক্ষরিত একটি দাপ্তরিক পত্র  সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পৌঁছালেও অদ্যবধি কোন ব্যবস্থা নেননি সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং উপজেলা প্রকৌশলী। পক্ষান্তরে পুলিশ নিয়ে বাঁধা দেওয়ার জেরে বাদীর আপন ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, সাংবাদিক কে এম সাইফুর রহমানের (৪৪) বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ সি.আর ৭৬২/২৩ ধারা ৪০৬/৪২০ দঃ বিঃ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে।

উক্ত মামলায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও উপযুক্ত প্রমাণাদি না থাকায় সাংবাদিকের আপন চাচা অসুস্থ বয়োবৃদ্ধ ছোহরাব কাজী (৫৭) কে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তার বিরুদ্ধেও গোপালগঞ্জ সি.আর ৯৫৭/২৩ ধারা ৪০৬/৪১৭ দঃ বিঃ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। এ বিষয়ে তৎকালীন সময়ে একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় এবং দৈনিক শতবর্ষ নামে স্বনামধন্য একটি অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রচারিত হয়। সর্বোপরি বিজ্ঞ আদালতের স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ থাকা নালিশি ভূমিতে অবৈধভাবে নির্মিত পাকা রাস্তা অপসারণের জন্য ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিক কে এম সাইফুর রহমান দৌড়ঝাপ করায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশে স্থানীয় প্রভাবশালীরা নানাভাবে তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে চলেছেন। এমতাবস্থায় গত ২ নভেম্বর গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর অবৈধভাবে নির্মিত পাকা রাস্তাটি দ্রুত অপসারণ সহ সাংবাদিক ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক কে এম সাইফুর রহমান বলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীকে উক্ত নালিশিভূমিতে বিজ্ঞ আদালতের স্থিতিতাবস্তা বজায় রাখার নির্দেশ থাকার বিষয়টি তাদেরকে জানানোর পরও বিজ্ঞ আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা রাস্তা নির্মাণ করেছে। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক স্যার আমার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত রাস্তাটি অপসারণের জন্য বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আমি সহ গ্রামবাসীদের ধারণা এখানে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়েছে বিধায় এ ধরনের অবৈধ কাজ সংগঠিত হয়েছে। আমি দৌড়ঝাপ করায় মিথ্যা মামলা খেয়েছি আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় প্রধান বিচারপতি ও মাননীয় শেখ সেলিম এমপি মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এবিষয়ে অভিযুক্ত গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দিন এর কাছে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা বলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই্। ডিসি মহোদয় এব্যপারে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বলেছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই।

অপর অভিযুক্ত উপজেলা প্রকৌশলী এস এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি জানতাম না যে এই জায়গার উপর আদালতের নিষেধাঞ্জা আছে। পরবর্তীতে সাইডে গিয়ে লাল পতাকা টাঙ্গানো আছে দেখতে পাই, ততক্ষনে কাজ সম্পর্ন হয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসকের বরাবর সাংবাদিকের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাষকের দেওয়া অনুলিপিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে সে বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সমস্ত কাগজাদী রেডি করে উপজেলা পরিষদের নিকট পাঠিয়ে দিয়েছি। সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট ফাইলটি আছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *