মানিকগঞ্জে নৌকা প্রতিকের সমর্থককে হত্যার হুমকি :  উত্তাল হরিরামপুর

Uncategorized আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি সারাদেশ

 

আরিফুর রহমান অরি (মানিকগঞ্জ) :  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দেশ বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের (নৌকা) নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবিদ হাসান বিপ্লবকে দলীয় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদের সমর্থক হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানের পুত্র নবীনুর দেওয়ানসহ তার অনুসারীদের দেয়া হত্যার হুমকির প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত ।


বিজ্ঞাপন

আজ  সোমবার ২৫ ডিসেম্বর, সকালে উপজেলা আ. লীগের দলীয় কার্যালয়ে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আ. লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবাদ সভায় জেলা ও উপজেলা আ. লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দএ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

এ ঘটনায় সকাল উপজেলা চত্বরে পাশাপাশি অবস্থান নেয় মমতাজ বেগম ও দেওয়ান জাহিদ আহমেদের সমর্থকেরা। এতে উপজেলা চত্ত্বরে উত্তেজনা দেখা দিলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে অবস্থান করে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ।

জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে অবস্থান নেয় আ. লীগের দলীয় প্রার্থী মমতাজ বেগমের কর্মী-সমর্থক এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের পাশেই দলীয় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদের (ট্রাক প্রতীক) নির্বাচনী ক্যাম্পে অবস্থান নেয় তার কর্মী-সমর্থকেরা।

এতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভবনা দেখা দেওয়াই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী রাবেয়া, ওসি শাহ নূর এ আলম। নিরাপত্তার কারণে উপজেলা সদরের পাটগ্রাম মাঠ এলাকায় ট্রাক দিয়ে রাস্তা রোধ করে যানচলাচল বন্ধ রাখে থানা পুলিশ।

প্রতিবাদ সভা শেষে নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবিদ হাসান বিপ্লব গণমাধ্যমকে জানান, গতকাল রোববার বিকেলে আমি উপজেলা চত্বরে এসে আমার গাড়ি থেকে নেমে খাবার হোটেলের দিকে যেতে থাকি। পেছন থেকে আমাদের উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে নবীনুর দেওয়ান আমাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করতে থাকে। সে বলতে ছিল, নৌকার নির্বাচন করতেছোস। উপজেলায় আইছোস ক্যান? উপজেলার মাটি আমাগো, ঘাঁটি আমাগো। বেশি বাড়াবাড়ি করলে গুলি করে দেব। বিষয়টি আমি খেয়াল করিনি। এরপরে আমার ড্রাইভারকেও বলে তোরে গুলি করমু, তোর বসরেও গুলি করমু। ড্রাইভার এসে আমাকে এ সব কথা বলে। হোটেলে তখন আমাদের জেলা ও উপজেলা আ. লীগের নেতৃবৃন্দসহ অনেক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এরপর আমাদের দিকে এগিয়ে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। বলে, এখান থেকে এখনই চলে যাবি, নইলে গুলি কইরা দিমু। হুমকি ধামকি দিয়ে সে চলে যায়। এরপর আস্তে আস্তে আমাদের দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত হতে থাকে। পরবর্তীতে আমরা একটা প্রতিবাদ মিছিল করি এবং রাতেই আমি থানায় একটা মামলা করি।”

উপজেলা চত্বরে আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ের পাশেই দলীয় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদের নির্বাচনী ক্যাম্প করা নিয়ে দলীয় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদের সমর্থক জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক, হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আ. লীগের দলীয় কার্যালয় তাদের ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. গোলাম মহীউদ্দীন ভাই। কারণ আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় হয়েছে দেওয়ান জাহিদ আহমেদের টাকা দিয়ে। এর আগে অফিস তালা দেয়া ছিল। গতকাল মমতাজ বেগমের লোকজন তালা ভেঙ্গে অফিস দখল করছে।

নির্বাচনী মাঠ এখনও অত্যন্ত জাকজমক ও উৎসবমুখুর আছে। কিন্তু কতিপয় কিছু লোক নির্বাচনের উৎসবটা নষ্ট করছে। নির্বাচনী মাঠে ট্রাক মার্কার মাঠের অবস্থা ভাল। আমার বিশ্বাস তারা পরাজয় বরণ করব। এই কারণেই তারা এ রকম আচরণ করে পরিবেশ নষ্ট করছে বলেও তিনি দাবি করেন।

হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নূর এ আলম বলেন, আপাতত কোনো সমস্যা নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। পাশাপাশি দুটি অফিস থাকলে নেতাকর্মীদের পদচারণা একটু বেশিই থাকবে। তবে কিছু মোটরসাইকেলের বহর আসায় নির্বাচনী আচরণ বিধি পালনে সাময়িক কিছু সময়ের জন্য ট্রাক দিয়ে রাস্তা আটকে দেয়া হয়। যেন মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে কেউ উপজেলা চত্বরে ঢুকতে না পারে।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, দুই পক্ষেরই অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো ইলেকটরাল কমিটির নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *