লুমিনাস’র এমএলএম সিসটেমে ভেজাল ঔষধ, প্রসাধনী সামগ্রী, সার ও মৎস্য ফিড পণ্যের বাহারি কারবার : রহস্যজনক ভূমিকায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী স্বাস্থ্য

লুমিনাসের এমডি রাকিব হোসেন।


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  এমএলএম প্রতিষ্ঠান লুমিনাস’র ছদ্মাবরনে রাকিব হোসেন গংদের সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন ব্যতিত ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধ, প্রসাধনী, সার, মৎস্য ফিড সহ নানা বাহারী পন্য বহুস্তর বিপনন পদ্ধত্বিতে বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।আর এসব অবৈধ কর্মকান্ডে সহোযোগিতা করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবৈধ সুবিধাভোগী কর্মকর্তারা, এ খবর সংশ্লিষ্ট একটি সুত্রের।


বিজ্ঞাপন

জানাগেছে, পিরোজপুরের নলচিরাস্থ ইউনানী ঔষধ কোম্পানী মেডিসেফ(পূর্বের নাম নাবাতি ল্যাবরেটরীজ, (ময়মনসিংহ) ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এর অনুমোদন ব্যতিত ভেজাল ও নিম্ন মানের ঔষধ ও প্রসাধনী উৎপাদন করছে।আর তা বাজারজাত করছে লুমিনাস। এমনকি বিদ্যমান ঔষধ আইনে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ব্যক্তি উদ্যেগে গৃহে তৈরী ঔষধও লুমিনাসের লেবেল কার্টুন সেটে তা চড়া দামে বাজারজাত করছে। ফেসবুকে,ইউটিউব সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে জনসাধারনকে প্রতারিত করছে।

লুমিনাসের এমডি রাকিব হোসেনের এমএলএম টীম।

 

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে কবিরাজ আব্দুল মোতালেবের আবেদনের প্রেক্ষিতে লুমিনাসের অফিসে তদন্তে যান এক কর্মকর্তা। নিয়ম বহির্ভূতভাবে আগের দিনে টেলিফোন করে লুমিনাসের অফিসে তদন্ত করতে যাবার কথা বলেন নিম্নস্তরের উক্ত কর্মকর্তা। যাওয়ার পূর্বে অবৈধ পণ্য সামগ্রী অন্যত্র সরিয়ে রাখেন লুমিনাস কর্তৃপক্ষ। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ”ম” আদ্যক্ষরের একজন উপপরিচালকের আশির্বাদের কারনে লুমিনাস ভেজাল ঔষধ বাজারজাত করার সুযোগ পাচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে।

সার,ফিস ফিড ও প্রসাধনী বিভিন্ন ট্রেডনাম দিয়ে বহু-স্তর বিপণন পদ্ধত্বিতে(এমএলএম) বাজারজাত করছে বলে জানাগেছে। প্রচলিত বাজারদরের তিন থেকে চারগুন মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে। এমনকি তাদের প্রশাধনীর দাম বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভার,ডাবর,ইমামী ও দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্রান্ডের চেয়েও দ্বিগুণ,তিন গুণ। তাদের বেশির ভাগ ঔষধ আইটেম ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত নয়। আবার উৎপাদিত ও বাজারজাতকৃত প্রসাধনী আইটেমও বিএসটিআই বা ঔষধ প্রশাসন কর্তৃক অনুমোদিত নয়।আবার সার ও ফিস ফিড কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ও প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের কর্তৃক অনুমোদিত নয়।

মেডিসেফ ইউনানী ব্যালেন্স প্লাস,গো ফ্রেস,উইম্যান হেলথ,সেফটিক্যাল-ডি,পেইন ফ্রেস,মেডিসেফ ডায়া,জিরো পাইলস,ইজি সিলিম,ইয়ো ফ্রেস,ব্যালেন্স প্রেসার,এ্যাজমা সেফ,থ্রোম্যাক্স ও সেফ হার্ট ট্রেডনামে ঔষধি আইটেম এবং টুথপেস্ট, সোপ, শ্যাম্পু, বডিলোশন, হেয়ার অয়েল, ডিটারজেন্ট সহ বিভিন্ন প্রসাধনী ট্রেডনামে এমএলএম প্রতিষ্ঠান ”লুমিনাস” উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।

লুমিনাস এর ঔষধ ও প্রসাধনী সামগ্রী।

 

উল্লেখ্য, ইউনানী ঔষধ কোম্পানী মেডিসেফ এর মালিকানা লুমিনাসের মালিক রাকিব হোসেনের নয়।ফয়সাল আহম্মেদ’র মালিকানা প্রতিষ্ঠানের ঔষধ তিনি নিজের নামে বাজারজাত করেন। মেডিসেফ’র কারখানা পিরোজপুরে। ঠিক সারের কোম্পানির মালিকও রাকিব নয়। আলাউদ্দিনের মালিকানাধিন মিরাক্কেল এগ্রো কোম্পানির সার, ফিস ফিড নিজের লুমিনাসের ব্যানারে চড়া দামে বাজারজাত করেন।

উপরোক্ত প্রসাধনী ও ঔষধে ইউনানী ফর্মুলারী অনুযায়ী ভেষজ উপকরন ব্যবহারের পরিবর্তে অনুনোমোদিত ক্ষতিকর কেমিকেল ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া,ঔষধের ট্রেডনাম অতিব বিদঘুটে যা ইউনানী ঔষধের নামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রচলিত আইনে এমএলএম পদ্ধত্বিতে ঔষধের বাজারজাতকরন বেআইনী।

ইউনানী ঔষধ কোম্পানী ”মেডিসেফ” এবং এমএলএম প্রতিষ্ঠান ”লুমিনাস” কর্তৃক অনুনোমোদিত,ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধ ও প্রসাধনী বাজারজাতকরনের ফলে একদিকে জনসাধারন প্রতারিত হচ্ছে অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।

আবারর ‘কৃষক বাঁচাও মাটি বাঁচাও দেশ বাঁচাও’- স্লোগান দিয়ে লুমিনাস মিরাক্কেল এগ্রো অ্যান্ড কসমেটিকস লিমিটেড কর্তৃক সরকারের কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ও প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের অনুমোদন ব্যতিত ভেজাল ও নিম্ন মানের মিরাক্কেল গ্রোথ সার,মিরাকেল ফিস ফিড উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।

লুমিনাস গ্রুপের চেয়ারম্যান রেজওয়ানা শারমিন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিব হোসেন। ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ।পরিচালক সেরাজাম মুনির ওরফে ডেসটিনি মুনির।তবে কাগজ পত্রে কোম্পানির মালিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিব হোসেন।

বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শেয়ার দেয়া ছাড়াই পরিচালক বানান। আবার বাদ দিয়ে দেন।পাওনা টাকা পরিশোধের জন্যে চেক দেন। ব্যাংকে জমা দিলে টাকা না থাকায় বার বার ডিজঅনার হয়। পাওনা টাকা ফেরত পাবার জন্যে দিনের পর দিন রাকিবের অফিসে ধর্না দিতে হয়। স্টাফদের কারনে অকারনে চাকুরীচ্যুত করেন।তাদের পাওনা ঠিকমত পরিশোধ করেন না।

বৃহত্তর জনস্বার্থে ইউনানী ঔষধ কোম্পানী ”মেডিসেফ”,মিরাকেল এগ্রো এবং লুমিনাস গ্রুপের এর অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর,কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ও বিএসটিআই’র প্রতি দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টমহল।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *