আগুন লাগার ২৪ ঘন্টা পর অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রনে আসছে বলে দাবি বনবিভাগের

Uncategorized খুলনা গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় দুর্ঘটনার সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

নইন আবু নাঈম তালুকদার, (বাগেরহাট) :  পুর্ব-সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া এলাকায় দুই কিলোমিটার জুড়ে ১০ একরেরও অধিক এলাকা দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে বনবিভাগ দাবি করলেও অন্যদিকে জেলে বাওয়ালী ও এলাকাবাসী বলেছেন কোথাও কোথাও আগুন জ্বলছে।


বিজ্ঞাপন

গতকাল শনিবার ৪মে বিকাল তিনটা থেকে জ্বলতে থাকা আগুন ১৫ ঘন্টা পর ৫ মে সকাল ছয়টা থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্য দুপুর তিনটা পর্যন্ত বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার, ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট, নৌবাহিনী, বনরক্ষী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মামুন মাহমুদ জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস সুন্দরবনে প্রবেশ করলেও পানি সংকটসহ নানা কারণে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেনি। এক পর্যায়ে রবিবার সকাল থেকে আগুন নেভাতে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট। ঘটনাস্থল থেকে পানির উৎস দুরে থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রনে চরম সমস্যা হওয়ায় নৌ বাহিনী ও কোষ্ট গার্ড নদীপথে তাদের জাহাজ নিয়ে ফায়ার সার্ভিস কে সহযোগিতা করতে সুন্দরবনে এসে পৌছেছে। তবে রবিবার বেলা ১১ টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রন হয়নি।

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি সংলগ্ন লতিফের ছিলা নামক এলাকায় এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা দেখতে পায় বন বিভাগ। শুরুতে বন বিভাগ ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও পরে মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলা ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বন রক্ষায় দায়িত্বরত বনরক্ষীদের উদাসিনতায় এদিন আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করতে না পারলেও পরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় রবিবার সকাল থেকে ব্যাপক আয়োজনে এবং ফায়ার লেন কেটে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চলছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

অন্যদিকে স্থানীয় নিশান বাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, সুন্দরবনের লতিফের ছিলা এলাকার অনেক জায়গা জুড়ে আগুন লেগেছে। বনের মাটিতে পড়ে থাকা বিভিন্ন গাছের পাতার স্তুপের মধ্যে আগুন জ্বলছে। অন্তত ৫০টি জায়গায় আগুন জ্বলছে বলে দৃশ্যমান হয়েছে।

তিনি আরো বলেন তার নেতৃত্বে ৩শ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে। আগুন নেভাতে যাওয়া সিপিজি সদস্য মণিময় মাল বলেন, আগুন যাতে নতুন এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য শনিবার সন্ধ্যা ও রবিবার সকালে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে তারা শুকনো গাছ অপসারণ করে। বিভিন্ন স্থানে ছোট ড্রেন কেটে রাখা হয়েছে।

অপরদিকে, আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে জানতে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেবকে প্রধান করে ইতোমধ্যে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭ দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম জানান, ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতার জন্য কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও যোগ দিয়েছেন। বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার বন এলাকায় আগুন লাগার স্থানে পানি দিয়ে সহযোগিতা করছে। স্থানীয় তিন শতাধিক সাধারণ মানুষ নিশান বাড়িয়ার চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে অংশগ্রহণ করেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স খুলনার উপ-পরিচালক মামুন মাহমুদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ তদারকি করছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *