পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা অনন্ত বাজার পাঁচ রাস্তার মোড়ে ব্যস্ততম রাস্তায় বেপোরোয়া গতিতে আসা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চাপায় এক পথচারি নিহত হয়। নিহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি তবে আনুমানিক বয়স ৫০ বছর ও বাড়ি পার্শ্ববর্তী এলাকা শ্রীপুর। বাসটি দ্রুত গতিতে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী দৌড়ে বাসটিকে ধরতে না পারলেও বাসের নাম্বারের ছবি তুলতে সক্ষম হয়।
জানা যায় ১২ ফেব্রুয়ারী বুধবার সকাল ৯:৩০ ঘটিকার সময় শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পথে পাবনা-স ১১-০০০৯ নাম্বারের বাসটি এ দূর্ঘটনাটি ঘটায়। মৃত ব্যক্তিটিকে পাবনা সদর থানার হেফাজতে পাবনা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস পরবর্তীতে যাতায়াতে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটবার আশংকা করছে কিছু পথচারী। তাদের থেকে বিস্তারিত জানতে চাইলে জনৈক হাফিজ রিক্সাচালক জানান “এই প্রযুক্তির বাস টাউনের মদ্দি যায়ে জাম লাগা দেয়, কিছু কলিই ছাত্ররা গাড়িরতেন নামে খারাপ ব্যবহার করে। আমারে গায়েও হাত দেয়”
পথচারী আরেকজন হামিদ রোডে হকার ব্যবসায়ী শরিফুল জানায় “এখন অফিস, স্কুল, কলেজ ও ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততম সময়, এই সময়ে শহর ও বাজার এলাকায় একেরপর এক প্রযুক্তির বাস ঢুকায়ে যাতা অবস্থা করে ফালায়। কাউকে মানুষই মনে করে না। কিছু কলিই আমারে বকে। যেনেসেনে বাসে ছাত্র ওঠে-নামে, কিছু কওয়াও যায়না। বাসের ড্রাইভারদের আচরন যেন মাস্তানের মত।
ইর আগে এআর কর্ণারের সামনে পান্তোয়া মিষ্টির দোকান ম্যানেজার সাধারণ পথচারীদের পক্ষে কথা বলছিলো আর ড্রাইভারকে এক ধমক দেয়ায় ভার্সিটির তেন শতশত ছাওয়ালপল লিয়ে আসে ঐ দোকান ঘিরে মারবির লাগিছিলে। সারা বাজার বন্দ করে দিছিলে উরা। পরে বাজারের লোকজন আর থানারতেন পুলিশ আসে ঐ মানেজারেক বাঁচায় আর ছাত্ররে কাছে মাপ চাওয়ায়। এই গাড়িগুলে যদি শহর বাদ দিয়ে বাইপাস দিয়ে যাতে তাইলে আর কারও কোন সমস্যা হতে না। যেহেতু উরে ভার্সিটিও বাইপাস রোডেই। বিষয়ডা আপনেরা একটু তুলে ধরেন।”
এ বিষয়ে টার্মিনালের বাসের হেল্পার মানিক জানায় বাস টার্মিনাল পাবার আগেই এই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আর ঢাকা কোচ সহ লোকাল সকল বাস এদিক দিয়েই যাওয়া লাগে। বাসের যাত্রী যদি এই প্রযুক্তির ছাত্র থাকে তালিপরেই গ্যালজাম লাগা দেয় আমারে সাতে। এই কয় হেনেই থামা নামবো, কোন কোন সময় যেনে সেনে রাস্তা বন্দ করে গাড়ি ঠেকা দিয়ে বাসে ওঠে। ভাড়া লিয়ে ক্যাচাল করে, আমরা কিছু কলেই থাপ্পর মারে। কিছু কলেই ভার্সিটিত ফোন দিয়ে রাস্তারপর ছাওয়ালপল লিয়ে আসে লাঠি হাতে খাড়া থাকে। ইরা বলে মেধাবী, ইরা বলে শিক্ষিত, ইরে বাপ মা কি এসব খোঁজ রাহেনা? আপনারা এসব লিয়ে লেকপের পারেন না? খালিপারেন গরীব আর অশিক্ষিত মাইনসের সাথে গরম লিবের?”
স্থানীয় একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ সালাউদ্দিন জানান “সবাই আমাদের পরিবারের মত, সবার কথাই ভাবতে হবে। ছাত্ররা কিছুটা পথ হেটে, অটোরিকশা বা রিক্সায় গিয়েইতো বাসে উঠতে পারে, তাছাড়া দূরের পথেতো শহরের বাইরের হাইওয়ে রোড ধরেই যেতে পারে। আর এমন ব্যস্ততম রাস্তায় এতো বেপোরোয়া গাড়ি চালানো ভয়ানক বিষয়। কতৃপক্ষের এ বিষয়ে এখনই কিছু ভাবা দরকার। যিনি মারা গেলেন তার পরিবারের কথা ভাবুন। এমনও তো হতে পারে এই মৃত ব্যক্তিটির সন্তানও এই ভার্সিটিতেই পরে বা এই বাস চসলকের আত্মীয়? তাহলে এসব নিয়ে এতো তাচ্ছিল্য করা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।”
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান “আমরা বিষয়টি জেনেছি এবং তৎক্ষনাৎ আমাদের মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি এবং আমাদের তত্বাবধানে লাশটি হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এছাড়া এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি আমাদের কাছে। আমরা মৃত ব্যক্তিটির পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা করছি।”
এ বিষয়ে পাবনা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আব্দুল আওয়াল এবং পরিবহণ প্রশাসক প্রফেসর কামরুজ্জামান কে মোবাইলে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি এমনকি ভার্সিটিতেও পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান “আমাদের ভার্সিটিতে এখন তেমন কোন বাসের ড্রাইভার নাই, হেল্পার দিয়ে বাস চালানো হয়। কারও কোন লাইসেন্স নেই, কমন সেন্সও নেই। এমনকি গাড়ির ফিটনেসও নেই। এ বিষয়ে দায়িত্বরত কতৃপক্ষের কোন ভ্রুক্ষেপও নেই।
বর্তমান যিনি পরিবহণ প্রশাসক হিসেবে আছেন তার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এর আগেও আরেকটি গুরুতর দূর্ঘটনা হয়েছে তবুও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এনার আমলেই পরিবহণ সেক্টরে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা চলছে।
আমরা যদি গাড়ির ফিটনেস ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত ড্রাইভার নিয়োগের পরামর্শ দিতে যাই আমাদেরকেই হুমকি দেয়া হয়। আজকের ঘটনা আমি হত্যাকান্ড হিসেবেই অভিহিত করতে চাই। এভাবে চললে আরও দূর্ভোগের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।