বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের বিচার বিভাগীয় অঙ্গনে সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত 

Uncategorized আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  বাংলাদেশ সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ আল-হাব্বাশ (H.E. Dr. Mahmoud Al-Habbash) এর সম্মানে বাংলাদেশের  প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ  গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর,  হেয়ার রোডস্থ প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনে এক নৈশভোজের আয়োজন করেন।


বিজ্ঞাপন

উক্ত নৈশভোজে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের  বিচারপতি  জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মোঃ রেজাউল হক, বিচারপতি ফারাহ মাহবুব,  ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতির সফরসঙ্গী হামজা ডানা (Mr. Hamza Daana, Director General, Office of the Chief Justice) ও সুহাইব সারহান (Mr. Suhaib Sarhan, Director, Information Systems Unit – Office of the Chief Justice); বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত মোঃ ইউসুফ রামাদান (H.E. Mr. Yousef Ramadan), ডেপুটি হেড অফ মিশন জিয়াদ হামাদসহ (Mr. Ziad Hamad) মিশনের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ; বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া বিভাগের পরিচালক জনাব মোস্তফা জামিল খান উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি’র  সাথে ফিলিস্তিনের মাননীয় প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ আল-হাব্বাশের বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়। বিশেষ করে, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানউত্তর বাংলাদেশে বিচার বিভাগের উপর সাধারণ মানুষের আস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে একটি গণমুখী বিচার ব্যবস্থা বিনির্মাণে তাঁর গৃহীত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে সকলকে অবহিত করেন।


বিজ্ঞাপন

এছাড়া,  প্রধান বিচারপতি  সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতিকে জানান যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণের মৌলিক মানবাধিকারসহ ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণ সবসময়ই তাদের প্রতি সহমর্মী ও সংহতিশীল। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের দীর্ঘদিনের সুদৃঢ় কূটনৈতিক সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেন।


বিজ্ঞাপন

অপরদিকে, ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশে একটি গণমুখী ও মানবিক বিচারব্যবস্থা গড়ে তুলতে  প্রধান বিচারপতির নিরলস প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে তিনি ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের কল্যাণে ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ সহজতর করা এবং দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহারের বিষয়ে ফিলিস্তিন সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, গাজা উপত্যকায় একটি সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ফিলিস্তিন সরকার কার্যকর রাজনৈতিক সমাধান নিশ্চিত করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করেন যে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিউইয়র্কে একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বৈধতা নিশ্চিতকরণ, এ অঞ্চল সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়ন এবং আরব শান্তি উদ্যোগের আলোকে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি এই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের জনগণের অব্যাহত সমর্থন প্রত্যাশা করেন।

উক্ত নৈশভোজ ও দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের বিচার বিভাগীয় অঙ্গনে সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। উভয় দেশের প্রধান বিচারপতির মধ্যে অনুষ্ঠিত সৌহার্দ্যপূর্ণ মতবিনিময় ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে এবং ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও শান্তি প্রতিষ্ঠার যৌথ প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

উল্লেখ্য, আজ সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটের সময়  বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের কনফারেন্স কক্ষে সফররত ফিলিস্তিনের  প্রধান বিচারপতির সফরসঙ্গী এবং ইনফরমেশন সিস্টেম ইউনিটের পরিচালক সুহাইব সারহান (Mr. Suhaib Sarhan, Director, Information Systems Unit – Office of the Chief Justice) বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রির কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কর্মশালা পরিচালনা করবেন।

কর্মশালায় ফিলিস্তিনের বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া কীভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং সম্পূর্ণ ডিজিটাইজড বিচারব্যবস্থা সেখানে কীভাবে কার্যকরভাবে পরিচালিত হচ্ছে তা উপস্থাপন করা হবে।

এর মাধ্যমে উভয় দেশের বিচার বিভাগীয় অঙ্গনে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এক নতুন মাত্রা লাভ করেছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *