ঢাকা ওয়াসার রাজস্বে ধস : কোড বাণিজ্যে ‘রাজস্ব সম্রাট’ মাহবুবুর রহমান

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

 

প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (সিআরও) মো: মাহবুবুর রহমান।


বিজ্ঞাপন

 

 

নিজস্ব  প্রতিবেদক  : ঢাকা ওয়াসার রাজস্ব আদায়ে হঠাৎ নেমে এসেছে ভয়াবহ ধস। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আয় আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২০০ কোটি টাকা কম। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে—প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (সিআরও) মো: মাহবুবুর রহমানের অনিয়ম, কোড বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনাই এই ধসের মূল কারণ।

ছাত্রলীগ থেকে রাজস্ব অফিস :  কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রাক্তন নেতা মাহবুবুর রহমান পরবর্তীতে বিসিএস কৃষি ক্যাডারে যোগ দিয়ে প্রশাসনে প্রবেশ করেন। রাজনৈতিক আশীর্বাদে উপসচিব পদে উন্নীত হয়ে ২০২৪ সালের নভেম্বরে ঢাকা ওয়াসার সিআরও হিসেবে যোগ দেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তিনি “রাজস্ব উদ্ধার” নয়, বরং “রাজস্ব ধ্বস” নামিয়ে এনেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


বিজ্ঞাপন

কোড-বাণিজ্যের অভিযোগ :  ওয়াসার ভেতরে রাজস্ব সাইট কোড এখন পরিণত হয়েছে প্রকাশ্য বাণিজ্যে। অভিযোগ রয়েছে, মাহবুবুর রহমান নিজ ভাগ্নে প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন এবং দুই উপ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা—তানবির আহম্মেদ সিদ্দিকি ও এনায়েত করিমকে সঙ্গে নিয়ে কোড বরাদ্দের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তারা বলছেন, “রাজস্বের টাকা ওয়াসায় আসে, কিন্তু গন্তব্য অন্য কোথাও।”


বিজ্ঞাপন

আত্মীয়কেন্দ্রিক সাম্রাজ্য :  প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর মাহবুবুর রহমান ন্যূনতম ১৫ জন আত্মীয়কে বিলিং সহকারী ও পাম্প অপারেটর পদে নিয়োগ দিয়েছেন। ফলে ওয়াসার ভেতরে এখন মজা করে অনেকে বলছেন, “এটা আর ওয়াসা নয়, মাহবুবুর রহমান ফ্যামিলি লিমিটেড।”

প্রটোকল ভাঙার অভিযোগ :  ওয়াসার কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন, মাহবুবুর রহমান প্রটোকল ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা মানতে অনীহা প্রকাশ করেন। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর অনুষ্ঠানেও তিনি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। এমনকি ব্যক্তিগত সহকারীকে নির্ধারিত স্থানে না বসিয়ে নিজের কক্ষের ভেতরেই বসান, যা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে নানা গুঞ্জন চলছে।

রাজস্ব লক্ষ্য বৃদ্ধি নিয়ে দ্বন্দ্ব :  রাজস্বে ধস নামার পর ওয়াসা কর্তৃপক্ষ যখন আদায়ের লক্ষ্য ২০ শতাংশ বাড়াল, তখন মাহবুবুর রহমান প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করেন। জানা গেছে, এ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে তার বাকবিতণ্ডা হয়েছে। অভিযোগ আছে, সিবিএ নেতাদের মাধ্যমেও তিনি কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে চেষ্টা করছেন।

তদন্ত দাবি :  রাজস্ব আদায়ে ভয়াবহ ধস, আত্মীয়কেন্দ্রিক নিয়োগ এবং কোড বাণিজ্যের অভিযোগে ওয়াসার সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইতিমধ্যে এলজিআরডি মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে দ্রুত তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে এ বিষয়ে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো: মাহবুবুর রহমানের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *