ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুলের আমলনামা : ‘মি. ২০ পার্সেন্ট’ খেতাবের আড়ালে কোটি টাকার ঠিকাদারি কারসাজি

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম।


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :  ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বিদ্যমান আইন-বিধি ভঙ্গ করে নিজ প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদারি করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দায়ের হওয়া এক আবেদনে বলা হয়েছে, রফিকুল ইসলাম বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট, ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন, যা তার ঘোষিত আয়ের সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

মি. ২০ পার্সেন্ট’ খেতাবধারী প্রকৌশলী : অভিযোগকারীদের ভাষায়, ডিএনসিসির বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যাদেশ পেতে হলে ঠিকাদারদের প্রথমেই যেতে হয় প্রকৌশলী রফিকুলের কাছে। কথিত আছে, তিনি মোট বিলের ২০ শতাংশ কমিশন রেখে দেন—যার জন্যই সহকর্মীদের মধ্যে তার খেতাব হয়েছে ‘মি. ২০ পার্সেন্ট’।


বিজ্ঞাপন

বেয়াইয়ের লাইসেন্সে ঠিকাদারি :  সরকারি চাকুরিজীবী হয়েও রফিকুল গত ১৩ বছর ধরে বেয়াইয়ের লাইসেন্স ব্যবহার করে পরোক্ষভাবে ঠিকাদারি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘ইউনিম্যাক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ নামে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৩ সাল থেকে ডিএনসিসিতে অন্তত ২০টি কাজ পেয়েছে, যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১১ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার ১৩টি কাজের কার্যাদেশ সরাসরি দিয়েছেন রফিকুল নিজেই।


বিজ্ঞাপন

ইউনিম্যাকের মালিক কাগজে-কলমে জাহিদুল ইসলাম পরশ হলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রফিকুলের। পরশ আসলে তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর ভাই (বেয়াই)।

দরপত্রে কারসাজি ও ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি : সরকারি ক্রয় বিধিমালা (পিপিআর-২০০৮) ভঙ্গ করে একক দরদাতা বা যোগসাজশপূর্ণ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এসব কাজ বাগিয়ে আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়—২০১৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত একাধিক আলোকসজ্জা, সড়কবাতি স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ ইউনিম্যাককে দেয়া হয়েছে। প্রকৌশলী রফিকুল নিজে আহ্বান করেছেন দরপত্র, নিজেই মূল্যায়ন করেছেন, আবার নিজেই কার্যাদেশ ও তদারকি করেছেন। কাজের বড় অংশ বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয় কমিশনের বিনিময়ে।

শুধু ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই বিদ্যুৎ বিভাগে আহ্বানকৃত ১৮টি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির বেশিরভাগই পেয়েছে একই চক্রের ৬টি কোম্পানি। এর মধ্যে ৮টি দরপত্রে অংশ নিয়েছে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান।

অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ :  দুদকে জমা দেওয়া আবেদনে বলা হয়েছে, রফিকুল ও তার পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে অনুসন্ধান করলে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল সম্পদের প্রমাণ মিলবে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তার বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি ও ব্যাংক ব্যালেন্স ইতিমধ্যেই আলোচনায় রয়েছে।

অভিযোগের জবাব নেই :  এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তার হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগপত্র সম্বলিত বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *