মোদিকে আমন্ত্রণ ব্যক্তি হিসেবে নয় : ওবায়দুল কাদের

রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং সে দেশের সরকার প্রধান হিসেবে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রধান মিত্র দেশ ছিল ভারত, তাই ভারতের সরকার প্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বাংলাদেশ, কোনও ব্যক্তি বিশেষকে নয়।’ তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা তৈরিতে কাউকে উসকানি না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
একটি গোষ্ঠী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আমন্ত্রণ বাতিল করার দাবির পরিপেক্ষিতে মঙ্গলবার ওবায়দুল কাদের অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন বা অন্য কোনও বিষয়ের সঙ্গে যোগসূত্র নেই, তিনি আমন্ত্রিত অতিথি।
সরকারকে পরাজিত করতে বিএনপির সংগঠিত হওয়ার দাবিকে স্বাগতম জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হলে ভালো, কিন্তু দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিবর্তে অস্থিরতা তৈরি করার জন্য যদি সহিংসতার উপাদান যুক্ত করা হয়, তাহলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যে কোনও অপচেষ্টা মোকাবিলা করবে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আওয়ামী লীগ অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী ও সুসংগঠিত।’
বিএনপি নেতাদের প্রশাসনে রাজনীতিকরণের অভিযোগ খ-ন করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি প্রথম প্রশাসনে রাজনীতিকরণ শুরু করে, আর শেখ হাসিনা সরকার প্রশাসনকে রাজনীতিমুক্ত করে এবং মেধার সন্নিবেশ ঘটায়।’ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন অনেক দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন। রূপকল্প ২০২১, এসডিজি, রূপকল্প ২০৪১, তথা ডেল্টা প্ল্যানসহ দীর্ঘমেয়াদি ভিশন বাস্তবায়নের জন্য সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান প্রশাসন।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রশাসন নয়, বিএনপিই আগাগোড়া ব্যর্থ।’
‘সরকার বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্যাতনের জন্য আদালতকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে’, বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। উচ্চ ও নি¤œ আদালতে সরকারের কোনোরূপ হস্তক্ষেপ নেই। এজন্যই আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আদালত রায় দিয়েছে এবং অনেকে সাজা ভোগ করছে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার বা আওয়ামী লীগ স্বাধীন বিচারব্যবস্থায় বিশ্বাসী বলেই বিশ্বজিৎ, নুসরাত, আবরার ও বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকা-ে দলীয় কর্মীদের রক্ষা করতে যায়নি। আইনের প্রতি সম্মান আছে বলেই বিচারিক প্রক্রিয়াকে কোনোভাবেই বাঁধাগ্রস্ত করতে চায় না, বরং বিএনপিই দ্বিচারিতার আশ্রয় নেয় আইন আদালতকে ঘিরে।’ বিএনপি মামলায় জিতলে বলে বিচারবিভাগ স্বাধীন, আর হারলে বলে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
কাদের বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত এবং প্রাণহানির সংখ্যা নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে, তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদারের কোনও বিকল্প নেই। লোকসমাগম, মার্কেট, স্টেশন, ফেরি ইত্যাদি এলাকায় অনেকেই মাস্ক পরিধান করছে না, যে জীবন-যাপনের জন্য আমরা ব্যস্ত, মাস্ক পরিধান না করার মতো অবহেলা আমাদের প্রিয় জীবন থেকে ছিটকে দিতে পারে।’ ওবায়দুল কাদের নিজের এবং পরিবার পরিজন, সন্তানদের কথা ভেবে হলেও শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে সচেতনতা তৈরিমূলক প্রচার অভিযান চালানোর অনুরোধ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এখন থেকে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য দলীয় সভাপতির নির্দেশে আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডসহ সকল শাখা এবং সহযোগী সংগঠনগুলোকে জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে সেদিন সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আলোচনা হবে বলে তিনি জানান।


বিজ্ঞাপন