ফেসবুকে প্রতারণা বাড়ছে আশংকাজনকভাবে

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি : ইদানিং ফেসবুক একাউন্ট এর মাধ্যমে প্রতারিত হবার ঘটনা আশংকাজনকভাবে বেড়ে গিয়েছে। নিচের ঘটনাটি কোন কল্পিত গল্প নয়, বরং সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনে এই ধরনের অভিযোগ এবং ভিক্টিম প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। জনস্বার্থে এবং সাইবার ক্রাইম দ্বারা যেন সাধারন জনগণ প্রতারিত না হন, সেই লক্ষে সচেতনতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে আমাদের এই কাল্পনিক চরিত্রের বলে যাওয়া গল্পকে নিছক গল্প হিসেবে না নিয়ে শিক্ষনীয় হিসেবে গ্রহন করবার আহবান জানাচ্ছি।


বিজ্ঞাপন

লতিফ সাহেব পেশায় ব্যাংকার। দুই বাচ্চা – বউ সহ ভালই আছেন সংসার জীবনে। বাবা-মা কে দেখাশনার দায়িত্ব হিসেবে গ্রামে মাঝে মাঝে যান, কিছু টাকা পয়সাও দেয়ার চেস্টা করেন। এদিকে বাচ্চাদের খরচ প্রতিবছর বেড়ে যায় স্বাভাবিকভাবে। স্ত্রীর সাথে এসব নিয়ে মাঝে মাঝে ঝগড়া হয়, স্বাভাবিক জীবনের অংশ হিসেবেই। মাঝে এতো মানসিক যন্ত্রনায় অস্থির লতিফ সাহেবের সাথে ফেসবুক ফ্রেন্ড হিসেবে হিমাদ্রী নীলা নাম এর একটি আইডির সখ্যতা হয় মাসখানেক যাবত। হাই – হ্যালোতেই সীমাবদ্ধ ছিলো তাদের পরিচয়। আইডিটি পরিচয় দেয় সে স্বনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী।
একদিন হটাৎ করেই নীলা নামধারী আইডিটি ভিডিও কল এর আহ্বান জানায়। লতিফ সাহেব এড়িয়ে গেলে নীলা নিজেই ভিডিও কল দেয় ফেসবুক মেসেঞ্জার এ। লতিফ সাহেব দেখতে পেলেন অপর পাশে একজন সম্পূর্ণ বিবস্ত্র মহিলা যার মুখমণ্ডল সুকৌশলে ঢেকে রাখা। লতিফ সাহেব অপ্রস্তুত হয়ে যান এবং নীলা তাকে অনুরোধ করে যেন সেও বিবস্ত্র হয়ে যায়। তাহলে নীলা তার মুখমণ্ডল দেখাবে। এমন হানি ট্র্যাপ এ পা পিছলে যায় লতিফ সাহেবের। সেও বিবস্ত্র হয়ে নীলা আইডির সাথে ভিডিও কল চালিয়ে যান কিছু সময়। কল শেষ হবার সাথে সাথে লতিফ সাহেব এর মোবাইলে কিছু স্ক্রীনশট । স্ক্রীনশটের মধ্যে তার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্ট যেখানে তার অসংখ্য ব্যাংকার বন্ধু, সিনিয়র, পারিবারিক অনেক মানুষ রয়েছেন। আর পাঠিয়েছে ৫ মিনিট এর একটি ভিডিও কল এর রেকর্ড যেখানে লতিফ সাহেবকে দেখা গেলেও ভিডিও কলের অপর প্রান্তের কাওকে দেখা যাচ্ছেনা, শুধু একটি সাদা পর্দা। এরপর শুরু হয় অসম্ভব মানসিক যন্ত্রনা। নীলা আইডিটি বলে টাকা না পেলে এই ভিডিও সবার কাছে ভাইরাল হবে। লতিফ সাহেব টাকা দেয়ার জন্য বিকাশ নাম্বার চাইলে, নীলা আইডিটির সন্দেহ হয়। বিকাশ নাম্বার না দিয়ে বরং সেই ভিডিও লতিফ সাহেবের পরিচিত অনেকের কাছে পাঠিয়ে দেয় নীলা।

জীবনের স্বাভাবিকতা ঠিক রাখতে এমন অস্বাভাবিক কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখতে হবে। খুব সহজেই ফেসবুক ফ্রেন্ড নির্ধারণ করা উচিৎ নয়। আপনার ফ্রেন্ড লিস্টের যাদের আপনি ব্যক্তিগত জীবনে চিনবেন না, তাদেরকে ফ্রেন্ডলিস্ট এ রাখা বাঞ্ছনীয় নয়।

১. ফেসবুক একাউন্টের পাসওয়ার্ড টু স্টেপ ভেরিফাইড করে নিবেন।
২. অযাচিত কারো সাথে বন্ধুত্ব এর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
৩. অনলাইনে ব্যক্তিগত কন্টেন্ট শেয়ার না করা শ্রেয়।
৪. সোশ্যাল মিডিয়াতে টাকা দাবি করে শুধুমাত্র সাইবার ক্রিমিনালরা, যারা এইসকল নীলা নাম এর ফেইক আইডির মাধ্যমে চটকদার প্রলোভনে সাধারন জনগনকে “হানি ট্র্যাপ” এ ফেলে টাকা আদায় করে।
৫. সুস্থ, স্বাভাবিক যোগাযোগ এর মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবার আহ্বান জানাচ্ছি।