৪০টি অস্ত্রাগার পাচ্ছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী

অপরাধ এইমাত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক : আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য ৪০টি অস্ত্রাগার নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪ কোটি ৬৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিরাপদে সংরক্ষণের জন্য অস্ত্রাগার নির্মাণ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ জন্য ‘আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অস্ত্রাগার’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।
জানা গেছে, জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং গণপূর্ত অধিদফতর।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি স্বেচ্ছাসেবী বৃহৎ বাহিনী। এ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। এ বাহিনীর ৩৮টি পুরুষ আনসার ও দুটি মহিলা আনসার ব্যাটালিয়নসহ মোট ৪০টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। তাছাড়া ৬৭২ জন মহিলা আনসার ৬০০ জন হিল আনসার রয়েছে। প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়নে একটি আনসার প্লাটুন ও একটি ভিডিপি প্লাটুন এবং প্রতিটি গ্রামে ৩২ জন আনসার ও ৩২ জন মহিলা ভিডিপি প্লাটুনসহ ৬৪ জনের দুটি প্লাটুন রয়েছে। শুধুমাত্র আনসার ব্যাটালিয়নে নিযোজিত সদস্য ছাড়া অন্যান্য সকল আনসার ও ভিডিপি সদস্যগণ প্রায়ই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
এ বিশাল বাহিনীর সদস্যগণ জাতীয় নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচনসহ সকল নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকেন। এছাড়া দুর্গাপুজা, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কেপিআই সংস্থাগুলো, মেট্রোপলিটন এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণসহ জাতীয় প্রয়োজনে দুর্যোগ মোকাবেলা, রেলপথ রক্ষাসহ ইত্যাদি কাজ খুবই দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে থাকে।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু আধুনিক অস্ত্র-গোলাবারুদ ক্রয় করা হয়েছে। ক্রয় করা এবং বিদ্যমান অস্ত্র-গোলাবারুদ আনসার-ভিডিপি একাডেমির কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগার, সংশ্লিষ্ট ব্যাটালিয়ন সদর দফতরের কোয়াটার গার্ড এবং জেলার পুলিশ লাইন অস্ত্রাগারে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে এই সকল অস্ত্রাগারের ধারণ ক্ষমতার তুলনায় অস্ত্রের সংখ্যা বেশি। এছাড়াও নির্বাচনকালীন সময়ে অথবা জরুরী প্রয়োজনে ও দুর্যোগ মোকাবেলায় অস্ত্র-গোলাবারুদ সংগ্রহ ও স্থানান্তর ঝুঁকিপূর্ণ এবং সময় সাপেক্ষে। এ জন্য আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অস্ত্র-গোলাবারুদের যথাযথ সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ৩৯ হাজার ৭৮৭ দশমিক ৮০ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, ১১ হাজার ৪১৪ বর্গমিটার অনাবাসিক ভবন, ৪০টি অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা, দুটি যানবাহন ক্রয়, ৪০টি অস্ত্রাগারে পানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং বনায়নসহ অন্যান্য কাজ করা হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশীদ বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জেলাসদরে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অস্ত্রাগার নির্মাণ করা হলে বাহিনীর অস্ত্র-গোলাবারুদ সুরক্ষিত থাকবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ও জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত অস্ত্র-গোলাবারুদ সংরক্ষণ ও সরবরাহ করা সম্ভব হবে।


বিজ্ঞাপন