বগুড়ায় হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি : বগুড়া সোনাতলা থানার মামলা নং-০৯, তারিখ-১২/০৪/২০২০ ইং, জিআর-৬৫/২০ ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড এর মামলার ঘটনার সহিত জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রিপন হাসান (২২) কে গ্রেফতার করলো পিবিআই বগুড়া জেলা।


বিজ্ঞাপন

ভিকটিম মৃত পারভেজ ইসলাম @ সুমন বগুড়া জেলার সোনাতলা থানাধীন ঠাকুরপাড়া গ্রামস্থ মোঃ বাদশা মিয়া এর ছোট ছেলে। ভিকটিম সুমন সোনাতলা থানার সিমান্তবর্তী সারিয়াকান্দি থানাধীন গনকপাড়া গ্রামের মোঃ ডাবলু মোল্লা এর ছেলে মোঃ রিপন হাসান এর সহিত এয়ারটেল কোম্পানীর সীমের এজেন্ট হিসাবে পার্টনারশীপ ব্যবসা করিতেছিল। ভিকটিম সুমন এর গ্রামের মোঃ মোক্তাদুর রহমান মাসুদ @ মাসুদ রানা ও মোঃ পাপ্পু দ্বয় ১০০০০/- টাকা বেতনে ভিকটিম সুমনের সাথে থাকিয়া এয়ারটেল কোম্পানীর সীম বিভিন্ন বাজারে বিক্রিয় জন্য সেলস্ ম্যান হিসাবে কাজ করত। তারা ভিকটিম সুমন এর সাথে ০১ মাস কাজ করার পর ভিকটিম সুমন তাহাদের ১০,০০০/- টাকা না দিয়া ৫,০০০/- টাকা দিতে চায়। কিন্তু তাহারা ৫,০০০/- টাকা নিতে অস্বীকার করে। যাহার ফলে ভিকটিম সুমনের সাথে তাহাদের বিরোধের সৃষ্টি হয়। পার্টনারশীপ ব্যবসার সুবাদে তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রিপন হাসান এর সহিত অনুরুপ ভাবে ভিকটিম সুমনের বিরোধের সৃষ্টি হয়। ইং-১১/০৪/২০২০ তারিখ দুপুর অনুমান ১২.০০ ঘটিকার সময় উক্ত আসামী সহ তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম @ মঞ্জু, মোঃ রাজিব, মোঃ আলিফ, মোঃ তারাজুল গন সোনাতলা থানাধীন করমজা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বসে থাকাবস্থায় তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রিপন ও মোঃ পাপ্পু দ্বয় পরিকল্পনা মোতাবেক বাদীর ছেলে মৃত পারভেজ ইসলাম @ সুমনকে একটি মোটর সাইকেলে করিয়া ইং- ১১/০৪/২০২০ তারিখ ১৩.০০ ঘটিকার সময় উক্ত বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যে লইয়া আসে এবং বাদীর ছেলে মাঠের মধ্যে মোটর সাইকেল হইতে নামাইয়া দিয়া তাহারা এজাহার নামীয় আসামী সহ তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম @ মঞ্জু, মোঃ রাজিব, মোঃ আলিফ ও মোঃ তারাজুল গনদের স্কুলের একটি ক্লাসরুমে ডেকে নিয়ে যায়। উক্ত সময় বাদীর ছেলে উক্ত বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যে থাকা মেহগনী গাছের নিকট অবস্থান করে । তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রিপন এর সহিত বাদীর ছেলের পার্টনারশীপ ব্যবসা থাকায় আসামী মোঃ মোক্তাদুর রহমান মাসুদ @ মাসুদ রানা আসামী রিপনকে বলে যে, ”আপনি যেহেতু মোঃ পারভেজ এর সাথে পার্টনারশীপ ব্যবসা করেন, পারভেজকে বলেন আমার পাওনা ১০০০০/- টাকা দিয়ে দিতে” । তখন তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রিপন জানায় যে, বাদীর ছেলের সহিত ব্যবসার বিষয়ে তাহার ঝামেলা চলিতেছে । সে বাদীর ছেলের নিকট হইতে নিজের পাওনা টাকা আদায় করিতে পারিতেছে না। টাকা আদায়ের বিষয়ে তাহাদের মধ্যে আলোচনা চলাকালে একপর্যায়ে বাদীর ছেলেকে হত্যা করার জন্য তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রিপন এজাহার নামীয় আসামী মোঃ মোক্তাদুর রহমান মাসুদ @ মাসুদ রানাকে প্রস্তাব দেয়। প্রাথমিক ভাবে আসামী মোক্তাদুর রহমান @ মাসুদ রাজি না হওয়ায় তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ পাপ্পু জানায় যে, বাদীর ছেলে তাহাকেও কম টাকা দিয়াছে। তখন এজাহার নামীয় আসামী সহ তদন্তে প্রাপ্ত সকল আসামীগন উল্লেখিত বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে বসিয়া বাদীর ছেলেকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করে। আসামীগন তাহাদের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক পরষ্পর যোগ সাজসে বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যে থাকা মেহগনী গাছের নিকটবসে থাকা বাদীর ছেলের চারপার্শ্বে অবস্থান নেয় পূর্বের টাকা লেনদেনের বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা মোতাবেক বাদীর ছেলের সাথে তর্ক বিতর্ক শুরু করে।একপর্যায়েতদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রাজিবের নিকট পূর্ব হইতে রক্ষিত একটি ধারালো বার্মিজ চাকু বাহির করিয়া আসামী রাজিব এজাহার নামীয় আসামী মোঃ মোক্তাদুর রহমান মাসুদ @ মাসুদ রানাকে দিলে সে ধারালো চাকু দ্বারা বাদীর ছেলে মৃত পারভেজ ইসলাম @ সুমন এর পিঠের বাম পাজরে আঘাত করিয়া গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। উক্ত সময় বাদীর ছেলে মৃত পারভেজ ইসলাম @ সুমন আতœরক্ষার্থে আসামী মোঃ মোক্তাদুর রহমান মাসুদ @ মাসুদ রানার সহিত ধস্তাধস্তি করিতে থাকিলে উক্ত সময় আসামী মোঃ মোক্তাদুর রহমান মাসুদ @ মাসুদ রানা পুনরায় বাদীর ছেলে মৃত পারভেজ ইসলাম @ সুমন এর বুকের বাম পার্শ্বে আঘাত করিয়া ০২ ইঞ্চি পরিমান কাটা ও গভীর ক্ষত রক্তাক্ত জখম করে। অতঃপর আসামী মোঃ মোক্তাদুর রহমান মাসুদ @ মাসুদ রানা, মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম @ মঞ্জু, মোঃ রাজিব, মোঃ আলিফ, মোঃ তারাজুল ও মোঃ পাপ্পু গন দ্রুত ঘটনাস্থল হইতে পালাইয়া গেলেও তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রিপন হাসান মামলার ঘটনাটি ভুল দিকে ধাবিত করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা মোতাবেক উল্লেখিত ঘটনাস্থলে দাড়াইয়া চিৎকার করিয়া আশপাশের লোকজন একত্রিত করে। ঘটনাস্থলে থাকা কতিপয় ব্যাক্তি বিষয়টি বাদীকে অবগত করিলে বাদী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাহার ছেলেকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করিয়া অজ্ঞাত সিএনজি যোগে ইং- ১১/০৪/২০২০ তারিখ ১৪.৩০ ঘটিকার সময় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বগুড়ায় নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাহাকে মৃত বলিয়া ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে আসামী মোঃ রিপন হাসান ঘটনার সাক্ষী হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করিয়া ঘটনার সহিত জড়িত থাকার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যায়। মামলার এজাহার নামীয় আসামী মোঃ মোক্তাদুর রহমান মাসুদ @ মাসুদ রানাাকে সোনাতলা থানা পুলিশ গ্রেফতর করিয়া বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ্দ করিলে সে স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করিয়া উল্লেখিত ঘটনার বিষয়ে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দী প্রদান করে। উক্ত জবানবন্দী পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসামী মোঃ মোক্তাদুর রহমান মাসুদ @ মাসুদ রানা ঘটনার সহিত জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম @ মঞ্জু, মোঃ রাজিব, মোঃ আলিফ, মোঃ তারাজুল ও মোঃ পাপ্পু এবং মামলার এজাহার বর্নিত ১নং সাক্ষী মোঃ রিপন হাসান এর নাম ঠিকানা প্রকাশ করে । সেই মোতাবেক দীর্ঘদিন অভিযান পরিচালনান্তে তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ রিপন হাসানকে ইং-০৫/১১/২০২১ তারিখ ১৯.২০ ঘটিকার সময় বগুড়া সারিয়াকান্দি থানাধীন গনকপাড়া তালতলা মোড় নাম স্থান হইতে গ্রেফতার করা হয়।