সুমন হোসেন, অভয়নগর (যশোর) : যশোরের দুঃখ খ্যাত অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুর, যশোর সদর এবং খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার লাখ লাখ মানুষের দূর্ভোগের নাম ভবদহ। এ অঞ্চলের মানুষ বছরের পর বছর জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করলেও স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। ফলে একের পর এক চলে আসছে আন্দোলন সংগ্রাম। এরই ধারাবাহিকতায় ভবদহ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের দূর্দশা লাঘবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করে পাঁচ উপজেলায় একযোগে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে যশোর সদর, অভয়নগর, মণিরামপুর, কেশবপুর ও খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করেন ভবদহ পানি নিস্কাশন সংগ্রাম কমিটি। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভবদহ পানি নিস্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রনজিৎ বাওয়ালী, উপদেষ্টা ইকবাল কবীর জাহিদ, যুগ্ম আহবায়ক কাজী আব্দুল হামিদ, সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল সহ প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে ভবদহ পানি নিস্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, রাজনৈতিক দূর্বৃত্তায়ন, ঘেরমালিকরা স্থানীয় সরকার পল¬ী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রীর সাথে যোগসাজশে সিন্ডিকেট গড়ে তুলে লাখ লাখ মানুষকে জিম্মি করে প্রতিবছর সরকারের কোটি কোটি টাকা লুটপাটের স্থায়ী ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবদহ স্লুইচ গেটকে ‘ সোনার ডিম পাড়া হাঁস’ উলে¬খ করে নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, এ স্লুইচ গেটের কোন কার্যকারিতা নেই। ভবদহ স্লুইচ গেটই এ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার অন্যতম কারন।
একযোগে যশোর সদর, মণিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় প্রদানকৃত স্মরকলিপিতে দাবি করা হয়, ভবদহ অধুস্যিত এ বৃহদাঞ্চলের ১২০ টি গ্রাম জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে। আর এতে দূর্বিষহ জীবন যাপন করছে আনুমানিক ১০ লক্ষাধিক মানুষ। তারা জলাবদ্ধতা থেকে উত্তোরণে স্মারকলিপিতে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেছেন।
দাবিগুলো হলো- এখনই বাড়ি ঘরের পানি নামানোর জন্য ২১ ভেন্টের সকল কপাট খুলে দিতে হবে। ভাটিতে ৭-৮ কি.মি. নদীতে চ্যানেল কাটতে হবে।
অবিলম্বে বিল কপালিয়ায় টিআরএম প্রকল্প গ্রহন ও হরি শ্রী নদী ভরাট হয়ে যাওয়া পলি অপসারণ করতে হবে।
জমি অধিগ্রহন করে আমডাঙ্গা খাল গভীর ও প্রশ্বস্থ করতে হবে। আমডাঙ্গা খালের স্লুইচ গেটের পূর্বাংশে অবিলম্বে খালের দুইপাশে স্থায়ী টেকসই প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
লুটপাটের লক্ষে প্রস্তাবিত ৫০ কোটি টাকার সেচ প্রকল্প বাতিল করতে হবে।
ভবদহ এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিল কপালিয়ায় টিআরএম করার সরকারি সিদ্ধান্ত বানচালকারীদের বিচার করতে হবে।
সমগ্র কাজ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কার্যকর করতে হবে। এবং আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোকে কাজ মনিটরিংয়ে সম্পৃক্ত করতে হবে।