আস্থা অর্জনে বুস্টার ডোজ নিলেন ৫ মন্ত্রী

স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোববার থেকে বাংলাদেশও প্রবেশ করলো করোনাভাইরাসের বুস্টার ডোজ কার্যক্রমে। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ছয় মাস হয়ে গেলে টিকার বুস্টার ডোজ বা তৃতীয় ডোজ নেওয়া যাবে।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। তবে তার আগে ২৭ এবং ২৮ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে ৫৬৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়।
রোববার দুপুরে রাজধানী ঢাকার মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান’স অ্যান্ড সার্জন’স (বিসিপিএসএ) মিলনায়তনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
সেখানে প্রথমে বুস্টার ডোজ নেন দেশের প্রথম করোনাপ্রতিরোধী টিকা গ্রহণকারী কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা ডি কস্টা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে রোববার বুস্টার ডোজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম প্রমুখ।
দেশে আপাতত যাদের বয়স ষাটোর্ধ্ব এবং ফ্রন্টলাইনার হিসেবে যারা রয়েছেন তাদেরই প্রথম পর্যায়ে এই বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে, তবে ধীরে ধীরে এর আওতা আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুসরণ করে দেশে বুস্টার ডোজ হিসেবে আপাতত ফাইজারের টিকাই দেওয়া হবে। তবে আমরা শুনেছি মডার্নার টিকাও বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া যায়। আমাদের স্টকেও মডার্নার টিকাও আছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, প্রথমে বয়স্ক ও সম্মুখসারির যোদ্ধাদের বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় ২৮ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৮৫ ভাগই ষাটোর্ধ্ব, তাদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। এ জন্যই বুস্টার ডোজের তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
তবে বুস্টার ডোজের পাশাপাশি নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রমও চালু থাকবে, চালু থাকবে শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য টিকাদান কর্মসূচিও। কোথাও কিছু ব্যাহত হবে না, পাশাপাশি বুস্টার ডোজ চলবে, বলেন জাহিদ মালেক।
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওমিক্রন বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়েছে, খুবই সংক্রমণশীল। ইউরোপে বহু দেশে এতে আক্রান্ত হয়েছে। আমরা আমাদের দেশকে নিরাপদ রাখতে চাই। কিন্তু যদি সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়, তাহলে কিন্তু মৃত্যুর হারও বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে ষাটোর্ধ্বদেরই মৃত্যু বেশি হয়। দেশে ২৮ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৮৫ শতাংশই ষাটোর্ধ্ব। কাজেই তাদের আগে সুরক্ষিত করতে হবে। সেইসঙ্গে যারা ফ্রন্টলাইনার ওয়ার্কার যারা রয়েছেন, তাদেরও সুরক্ষিত রাখতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি কয়েকজন মন্ত্রী মহোদয়কেও আহ্বান জানিয়েছি বুস্টার ডোজ নেওয়ার জন্য, তারা আজ আছেন এখানে। তাদেরও আজ টিকা দেওয়া হবে। যাতে লোকে না মনে করে যে, বুস্টার ডোজ বয়স্কদেরতোৃ আপনারা কেউ এখনও দিলেন না। সে কথা যাতে করে কেউ না বলতে পারে, সেজন্য কয়েকজন মন্ত্রী আছেন আজ এখানে। তাদেরও বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।
এরপর বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়। প্রথমে রুনু ভেরোনিক কস্টাকে টিকা দেওয়ার পর টিকা নেন জাতীয় অধ্যাপক ডা. শায়লা বেগম। এরপর একে একে বুস্টার ডোজ নেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। পরে এসে বুস্টার ডোজ নেন ডাক ও টেলি যোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।


বিজ্ঞাপন