গণপরিবহন সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাজধানীবাসী
বিশেষ প্রতিবেদক : বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিপুল সংখ্যক বাস লিজ দিয়ে রাখায় বিআরটিসি’র গণপরিবহন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রাজধানীবাসী। এতে, প্রশ্ন উঠছে রাষ্ট্রায়ত্ত সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য নিয়েই। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, জনগণের স্বার্থেই লিজ বাতিল করে সব বাস রাস্তায় নামিয়ে পরিবহন সংকট দূর করা দরকার। বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবছে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার চাইলে লিজ বাতিল করতে প্রস্তুত বিআরটিসি।
অফিস শেষে রাজধানীর কারওয়ান বাজার সার্ক ফোয়ারার পাশে ঘরে ফেরার প্রতীক্ষায় মানুষ। এক একটি বাস আসে আর এভাবেই হুমড়ি খেয়ে তাতে ওঠার প্রাণান্তকর চেষ্টা প্রতিমুহূর্তেই। কেউ উঠতে পারেন, কেউ পরবর্তী বাসে ওঠার লড়াইয়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন। গণপরিবহন সংকটের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিনই এমন অবস্থার শিকার হয় মানুষ।
বাসের অপেক্ষায় থাকা এক যাত্রী বলেন, বাস সহজে পাওয়া যায় না। পারসোনাল গাড়ি বেশি দেখা যায়। পাবলিক পরিবহণ খুবই কম যার কারণে অনেকক্ষণ বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা বাস দেখে বিআরটিসি’র বাস ডিপো মনে করতে পারেন যে কেউ। একই অবস্থা দেখা যায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ ও সচিবালয়ের সামনেও। সকালে যাত্রী নিয়ে এসে বিকেল পর্যন্ত অলস বসে থাকে লিজ দেয়া বাসের অধিকাংশই। বিষয়টিকে বিআরটিসি’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থী বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন। তিনি বলেন, এই বাসগুলোকে বসিয়ে রাখার জন্য প্রাইভেট বাস কোম্পানির যোগ সাজে রয়েছে। তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বিটিআরসি এই কাজগুলো করে।
এ নিয়ে বিআরটিসি চেয়ারম্যান এড়িয়ে গেলেও মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন সীমাবদ্ধতা ও সংকট স্বীকার করে বলেন, সরকার চাইলে লিজপ্রথা বন্ধ করে দেয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। তিনি বলেন, বাস লিজ দেওয়া হচ্ছে সরকারের সিদ্ধান্তে। সেই সাথে যেভাবে রাজস্ব আদায় দরকার সেভাবে দেওয়া হচ্ছে।
বিআরটিসি’র দেয়া তথ্যমতে, চলার উপযোগী প্রায় ১৬০০টি বাসের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক হাজার বাস সচল থাকে। এর মধ্যে বেশ কিছু বাস দীর্ঘ মেয়াদে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে।