বঙ্গবন্ধু’র হত্যাকান্ড একটি দেশকে হত্যা করার সুগভীর ষড়যন্ত্র ছিল-নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

Uncategorized জাতীয়

বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ঃ গতকাল শনিবার ২১মে, শিক্ষা ছাড়া একটি দেশ কখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনা। সে উপলব্দি থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের পর একটি শাসনতন্ত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কি হবে-সেজন‍্য বিখ্যাত বিজ্ঞানী ড. কুদরত ই খুদাকে দিয়ে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন এবং এই শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট সরকারের কাছে দেয়া হয়েছিল, কিন্তু সেটা আর বাস্তবায়ন হয় নাই, আলোর মুখ দেখে নাই। কারণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজকের শিশুরা ও ছাত্ররা সেই নির্মমতার কথা হয়তো সেভাবে জানেনা।

এই নির্মম হত্যাকান্ড একজন ব্যক্তি কিংবা একটি পারিবারিক হত্যাকান্ড নয়। এই হত্যাকান্ড একটি দেশকে হত্যা করার সুগভীর ষড়যন্ত্র ছিল। আমাদের মুক্তিযদ্ধ ছিল আমাদের গর্বের ও অহংকারের। এই মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছিলাম।

একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে, সেই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ একটি সোনার বাংলা হবে, যে বাংলাদেশ সকলে মিলে একটি মানসম্পন্ন জাতিতে পরিণত হবে। বিশ্ব ভূখন্ডে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, এটাইতো ছিল আমাদের স্বপ্ন।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে আমরা দেখলাম একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যারা আমাদের গণহত্যা সংঘটিত করেছে, মা-বোনের ইজ্জত লুন্ঠন করেছে, তাদের বিচারের জন্য যে দালাল আইন করা হয়েছিল সেই দালাল আইন বাতিল করে দেয়া হলো এবং ঐ দালালদেরকে ঐ অপরাধীদেরকে রাজনীতিতে পূণর্বাসিত করা হলো।

পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর খুনিদের বিচার করা যাবেনা সংবিধানের মধ্যে ইনডেমনিটি এ্যাক্ট ঢুকিয়ে দেয়া হলো। এর মধ্য দিয়ে একটি গর্বিত জাতির গর্বিত যে ইতিহাস সেই ইতিহাসকে ভুলন্ঠিত করা হলো, ক্ষমতায় কুক্ষিগত করে থাকার জন্য। তরুণদের হাতে মাদক এবং অস্ত্র তুলে দিয়ে বাংলাদেশের সব সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দেয়া হলো।

আমাদের মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া হলো, অর্থ তুলে দেয়া হলো। এইভাবে বাংলাদেশের তরুণ এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়া হলো। এই মাদক এবং অস্ত্রের রুপকার হলো বঙ্গবন্ধুর খুনি জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, “রাজনীতি আমি জটিল করে দিবো, রাজনীতিবিদদের জন্য”। রাজনীতি যদি জটিল হয়ে যায়, কেমন হয়? এইরকম জিয়াউর রহমান একটি জটিল অবস্থা বাংলাদেশে তৈরী করতে চেয়েছিল।

কি একটি জটিল অবস্থা বাংলাদেশে তৈরী করতে কিছু মুক্তিযোদ্ধা, কিছু রাজাকার, কিছু খুনি, কিছু বামপন্থি, কিছু ডানপন্থি, নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করলেন। তাদের কাজই হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দেয়া। এইভাবে বাংলাদেশকে একটা প্রকৃত জায়গায় না নিয়ে একটা বিকৃত জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এই ধারাবাহিকতা একুশ বছর যাবৎ বজায় রয়েছে। এই ধারাবাহিকতার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যুদ্ধ করেছে। আজকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই ফান্ডামেন্টাল লাইফ বাংলাদেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছে।

আজকে বাংলাদেশে খাদ্যের কোন অভাব নাই, বিনা কাপড়ে কেউ চলাফেরা করে না, প্রতিটা শিশু স্কুলে যায়, আমাদের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চলে গেছে, ভূমি এবং গৃহ প্রদানের মধ্য দিয়ে গৃহহীন এবং ভূমিহীনদের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, বছরের প্রথম দিন আমাদের শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বই পায়, উপবৃত্তি মোবাইলের মাধ্যমে পৌছে যাচ্ছে। বাংলাদেশে মাত্র কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, আজকে বাংলাদেশে দেড়শটি বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে কলেজ একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় শেখ হাসিনা সরকারি করেছে। বাংলাদেশের ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে একইসাথে সরকারিকরণ করেছে।

এই ব্যবস্থা ৭৫ পরবর্তী কোন সরকার একুশ বছরে করে নাই, সেটা শেখ হাসিনা করেছে। আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি গতকাল শনিবার দিনাজপুরেল বিরলের রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কানাইবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভিত বিশিষ্ট ১ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

রামপুর ইচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমা কান্ত রায় এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম শাহিনুর ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ আফছানা কাওছার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুজন সরকার, উপজেলা আওয়ামী লগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব সুবজার সিদ্দিক সাগর, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুকিল চন্দ্র রায়।

এর আগে প্রতিমন্ত্রী ৪ নং শহরগ্রাম ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে স্বর্গীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা অমল চন্দ্র রায়ের বিদেহী আত্মার সৎ গতি ও শান্তি কামনার্থে আদ্যশ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং পরে উপজলা পরিষদ চত্ত্বরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক স্থানীয় কৃষকদের মাঝে কম্বাইন হারভেস্টর বিতরণ, বিরল মডেল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট বালক (অনুর্দ্ধ-১৭) এর চুড়ান্ত খেলার পুরষ্কার বিতরণ এবং শ্রী শ্রী কান্তজিউ মন্দিরে মহানামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন