নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ৬ জুন রাষ্ট্রপতির এক আদেশবলে যুক্তরাজ্যের রয়েল কলেজ গুলোর আদলে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জনস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশে স্নাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরী ও দেশের সর্বস্তরের জনগণের জন্য বিশেষজ্ঞ সেবা প্রদানের দূরদর্শিতা ও অদম্য আকাঙ্ক্ষা, তাঁকে এ মহান কাজে ব্রতী হবার প্রেরণা যুগিয়েছিল।
তৎকালীন সময়ে বিসিপিএস প্রতিষ্ঠার ফলে স্বল্প খরচ ও সময়ে উচ্চ ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরীর পথ উন্মোচিত হয়। বঙ্গবন্ধুর এ সময়োচিত সিদ্ধান্তের ফসল “বিসিপিএস” আজ স্বমহিমায় উজ্জ্বল।
কলেজ প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ৫০ বছর পূর্তিতে পেছন ফিরে দেখি, দেশের সকল সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহে নিরলস, নিরন্তর চিকিৎসা শিক্ষা ও সেবা দানে এবং গবেষণা কার্যক্রমে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞগণ এ কলেজের ফেলো ও মেম্বার, যার সংখ্যা প্রায় ৮৫ ভাগেরও বেশী। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কলেজের ফেলো ও মেম্বারগণ অত্যন্ত সুনামের সাথে কাজ করছেন।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই কলেজ নিজস্ব ঐতিহ্য গড়ে তুলতে এবং তা সংরক্ষণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষা, সেবা ও গবেষণার উন্নয়নে দক্ষ ও মানসম্মত চিকিৎসক তৈরীর লক্ষ্যে চিকিৎসা শিক্ষা, কাঠামোবদ্ধ ও যুগোপযোগী কারিকুলাম, মানসম্মত প্রশিক্ষণ, গবেষণা, কর্মশালা, সেমিনার ও সর্বাধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন প্রভৃতি কারণে এই কলেজ দেশের শিক্ষাঙ্গনে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এ কলেজ থেকে ৫৯ টি বিষয়ে ফেলোশীপ ও ১৬ টি বিষয়ে মেম্বারশীপ ডিগ্রী প্রদান করা হয়। বর্তমানে কলেজের এফসিপিএস ডিগ্রীপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞের সংখ্যা ৭৮৮৭ জন এবং এমসিপিএস এর সংখ্যা ৩৩২২ জন। বাংলাদেশের বহু প্রথিতদশা, স্বনামধন্য ফেলো চিকিৎসকগণের দায়িত্বশীল নেতৃত্ব ও নিরলস পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে বিসিপিএস আজ দেশের মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
সর্বশক্তিমানের অপার মহিমা এবং কলেজের ফেলো এবং কাউন্সিলরদের সুগভীর প্রজ্ঞা ও কঠোর অধ্যবসায়ের ফলে এই কলেজ দর্শন ও ধারণায় এবং শিক্ষা ও সেবা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এক অনন্য ঐতিহ্য গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছে। দেশ বিদেশের সমগোত্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সঙ্গতি রেখে দেশের স্নাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা ও গবেষণা কার্যক্রমে অনন্য অবদান রেখে আসছে। কলেজ প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জল ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সোমবার ৬ জুন, সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন এবং ৭ ই জুন, কলেজের ১৪ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে।
কলেজের এই দুইটি মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সোমবার ৬ ই জুন, সকাল ৯ টার সময় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, আগারগাঁও, শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করতে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জনস-এর সভাপতি অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদ। উল্লেখ্য যে, এ অনুষ্ঠানে কলেজের প্রায় পাঁচ হাজার ফেলো ও মেম্বার তথা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অংশগ্রহণ করবেন।
তাছাড়া ও ৭ই জুন, কলেজের ১৪তম সমাবর্তনে ১৯ জন গোল্ড মেডেলিস্ট, ২১৪৯ জন এফসিপিএস এবং ৩৬২ জন এমসিপিএস এবং ২৩ জন দেশী বিদেশী বলো ব্যক্তিবর্গ অনারারি ফেলোশীপ সনদ গ্রহণ করবেন।
