নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা এখন এটি নিয়ে কাজ করবো।
ভারত সফর শেষে ঢাকায় ফিরে সোমবার রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ পরামর্শক কমিশন-জেসিসি বৈঠকে যোগ দিতে ১৮ জুন দিল্লি যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ অধিবেশনের আগেই সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যাবেন। আমরা দিল্লির সঙ্গে এটা নিয়ে আলাপ করেছি। তারাও সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ভারত থেকে ১০ লাখ টন গম আমদানি করবে। মাঝে তারা কিছু বিধিনিষেধ দিয়েছিল। এখন তুলে নিয়েছে। যারা ইতোমধ্যে এলসি খুলেছেন তারা আমদানি করতে পারবেন। ভারত এটা যাচাই-বাছাই করবে। এছাড়া পি কে হালদারকে আমরা ফিরিয়ে আনার কথাও বলেছি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সব নদী পথ উন্মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা চাই, এসব নদী পথ দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ুক। এছাড়া পদ্মা সেতুর জন্য অভিনন্দনও জানিয়েছে দেশটি।
বৈশ্বিক সমস্যার কারণে এ অঞ্চলে যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে সেটা নিয়ে জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। অন্য জায়গায় সংঘাত হলে আমাদের ওপর কম প্রভাব পড়ে। আমরা এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবো। এ অঞ্চলে একটা দেশ সমস্যায় পড়েছে এবং এ ধরনের ঝামেলা যেন আর না হয় সেজন্য আমাদের একে অপরকে সহায়তা করতে হবে। আমাদের সাপ্লাই চেইন ও স্থিতিশীলতা যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য একসঙ্গে কাজ করতে আমরা সম্মত হয়েছি।
মোমেন বলেন, আমরা বারবার উদ্যোগ নিয়েছি জেআরসি বৈঠক করার। কিন্তু তারা শুধু বলে যে হবে। এখনও নির্দিষ্ট তারিখ পাইনি। আশা করবো প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে জেআরসি বৈঠক হবে। কয়েকটি নদীর সীমানা চিহ্নিত করা নিয়ে সমস্যার কথা উঠেছে। এবারের বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়েছে যে যৌথভাবে এটি পর্যবেক্ষণ করা হবে। বাংলাদেশে বন্যা ঠেকানো যাবে না।
কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারতকে অনুরোধ করেছি তারা যদি আগেভাগে আমাদেরকে ঢলের বিষয়ে সতর্ক করে তবে আমরা প্রস্তুতি নিতে পারি। এ বিষয়ে তারা নীতিগতভাবে সম্মত।
দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে মোট বাণিজ্য ১৬০০ কোটি ডলার এবং ভারতের হিসাব মতে ১৮০০ কোটি ডলার। এরমধ্যে আমাদের রফতানি ২০০ কোটি ডলার। এটি বাড়ানো দরকার। বাংলাদেশের কিছু পণ্যের ওপর ভারত অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে এবং সেটা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছি।
রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তাদের বলেছি এর দ্রুত সমাধান না হলে এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ বাড়তে পারে যা কারও জন্য ভালো হবে না। এজন্য তাদেরও এগিয়ে আসা উচিত। তারা চেষ্টা করবে বলেছে।