নড়াইলে শিক্ষকের অনিষমের বিষয়ে সাংবাদিককে হুমকি দেন,আওয়া-মীলীগ নেতা মিটুল কুন্ডু

Uncategorized আইন ও আদালত

মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী থাকা সর্ত্বেও স্কুলে বছরের পর বছর ক্লাস করেন না,বা স্কুলে যান না,শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস,এ অনিয়মের বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে,নড়াইল জেলা আওয়ামী-লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ কুন্ডু মিটুল দলীয় ক্ষমতা খাটিয়ে সাংবাদিক মো:রফিকুল ইসলামকে সংবাদ প্রচার না করতে তুলারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের মধ্যে উপস্থিত,ইউপি সচিব,ইউপি সদস্য,অভিযুক্ত শিক্ষকের সামনে হুমকি দিয়ে বলেন,দলীয় লোকজন কি করলো তোর দেখার দরকার নেই,তুই তেল খরচ নিয়ে চলে যা বলে উচ্চস্বরে হুমকি প্রদান করেন এবং বলেন তোর চেয়ে বড় বড় সাংবাদিক আমার কথায় উঠাবসা করে।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস নিজে স্কুলে শিক্ষকতা না করে,বাইরের একজন মহিলাকে কিছু টাকা বেতন দিয়ে স্কুলে শিক্ষকতা করাচ্ছেন কিন্তু তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়া সর্ত্বেও অনিয়ম ও দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ অনিয়ম দূর্নিতি করে আসছেন।

নড়াইল সদর উপজেলা তুলারামপুর ইউনিয়নের দেবীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস,স্কুলের শিক্ষক হলেও স্কুলে ক্লাস করেন না বছরের পর বছর এবং টিওনো সাহেবের কাজে ব্যস্ত থাকেন বলে স্কুলে ক্লাস করতে পারেন না বলেও দাবি করেন।

জানা যায়,দেবীপুর গ্রামের মৃত,মনিবাবু বিশ্বাস এর ছেলে দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস অজানা অপশক্তির দারা স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস না করিয়ে এবং বছরের পর বছর স্কুল ফাকি দিয়ে বহাল তবিয়াতে আছেন।
দেবীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের দিয়ে প্রতিদিন স্কুল শেষে বিকালে হাজিরা খাতা নিজের বাড়িতে আনিয়ে প্রতিদিনের মত হাজিরা খাতায় সই করেন এবং সকালে শিক্ষিকাদের দিয়ে স্কুলে নিয়ে যান এ শিক্ষক। অনুসন্ধানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস তুলারামপুর বাজার এবং নড়াইল শহরে তার বেক্তীগত কাজ করেন কিন্তু সরকারি চাকরিরত শিক্ষক হয়েও শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস স্কুলে উপস্থিত হন না,দির্ঘ বছর। সাংবাদিক মো:রফিকুল ইসলাম,গত (১৩ জুন) সোমবার সকাল ১০ ঘটিকা থেকে দুপুর ৩ ঘটিকা পর্যন্ত স্কুলের সামনে অবস্থান করলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাসকে স্কুলে পাওয়া যায়নি। এভাবেই গত ১০ দিন যাবৎ তথা (২৩ জুন) দেবীপুর স্কুলে অবস্থান করলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাসকে স্কুলে দেখা যায় নি। সর্বশেষ (২৩ জুন) বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ প্রতিবেদক স্কুলে অবস্থান করলেও স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস কে পাওয়া যায়নি,পরে একই দিনে শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাসকে তুলারামপুর ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবি’র মালামাল বিতরণ করতে দেখা যায়। এসময় মহিতষ বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে চেয়ারম্যান টিপু সুলতান এর অফিস কক্ষে সকলের সামনে হুমকী দিয়ে বলেন,আমাকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: মকসুদুল হক স্যার এখানে টিসিবির মালামাল বিতরণের জন্য এনেছেন এজন্য স্কুলে যেতে পারিনি,কিন্তু সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: মকসুদুল হক তাকে ডাকেন নি বলেও শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাসের সামনেই মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদ করেন। স্কুল চলাকালে স্কুলের কমলমতি শিশুদের কাছে স্যার মহিতষ বিশ্বাসের স্কুলে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে কমলমতি বাচ্চা’রা বলে,স্যার স্কুলে আসে না। স্কুলের অন্যান্ন শিক্ষিকাদের সাথে কথা হলে,শিক্ষিকা’রা জানান,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছুই বলতে পারবো না,কিন্তু স্কুলের অফিস কক্ষে শিক্ষিকাদের সাথে শিক্ষকের অনিয়মের বিষয়ে যে সকল কথাবার্তা হয়েছে সেই সব কথাবার্তা সত্য প্রমানিত হয় এবং সকল কথার রেকোডিং সাংবাদিকদের কাছে সংগ্রহীত রয়েছে।

সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: মকসুদুল হক জানান,আমি শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাসকে ডাকিনি,কোন ক্ষমতা বলে শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস বছরের পর বছর স্কুলে না যেয়ে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস না করিয়ে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা শিক্ষক নাম ভাঙ্গিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান,শিক্ষক মাহিতষ এর নামে এমন অনিয়ম এর অভিযোগ আগেও পেয়েছি এবং আমি নিজে স্কুলে অডিট করতে গিয়েও তাকে পাইনি এবং শিক্ষক মহিতষকে অর্নিং দিয়ে সাবধান করে দিলেও শিক্ষক মহিতষ কোন সংসধন হয়নি,এবিষয়ে আমি উর্ধতন কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করবো বলেও জানান। স্থানীয় একাধীক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন,কিষের শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস,যে কি না,স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস না করিয়ে নিজের কাজ করতে ব্যস্ত থাকেন,এমন শিক্ষকদারা ছাত্র-ছাত্রী’রা কি শিক্ষা পেতে পারে। এমন সরকারি বেতনধারী দূর্নিতিবাজ শিক্ষকের অপশারন চাই এবং সেই সাথে শিক্ষকতা না করে সরকারি বেতন উত্তলনের দায়ে কঠিন বিচার দাবি করেন বলেও জানান। দেবীপুর স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত মহিতষ বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে উচ্চস্বরে হুমকি দিয়ে বলেন,আমি নির্বাচনের ডিউটি করি,আমার সরকারি কাজ থাকে এবং স্কুলের বিভিন্ন কাজে নড়াইল যায় এজন্য আমি ঠিক মত ক্লাস করাতে পারি না। টিওনো স্যারের কাজ করি বলেও উচ্চস্বরে হুমকী দিয়ে বলেন,তার কেউ কিছু করতে পারবে না বলেও জানান। দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি প্রোফেসার সন্দীপ বিশ্বাস,জানান,আগে আমি আমাদের গ্রাম দেবীপুর স্কুলের একজন শিক্ষার্থী’র অভিভাবাক ছিলাম,সেই সময় স্কুলের সহকারী শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস প্রতিদিন স্কুলে আসতো না,এজন্য আমি শিক্ষক মহিতষকে বার বার বলা সর্ত্বেও সংসধন না হলেও তাকে হুমকি সরুপ আমি স্কুলে ক্লাস করতে বলেছি এবং সপ্তাহে অন্তত ৩দিন স্কুলে আসতে হবে অনেক অনেক অনুরোধ করি,কিন্তু আমার কোন কথা শোনেননি,শিক্ষক মহিতষ। এদিকে,স্কুলের সভাপতি না থাকায়,আমার যোগ্যতায় গ্রাম বাসি আমাকে স্কুলের সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত করেন এবং আমার গ্রামের স্কুল হওয়ার সুবাদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস কে নিয়োমিত স্কুলে আসতে অনুরোধ করি এবং স্কুলে ৪ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও বর্তমান স্কুলে প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জন শিক্ষক শিক্ষকতা করেন,এর মধ্যে অনিয়মের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস স্কুলে আসেন না।

নড়াইল জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের নাম ব্যবহার করে স্কুলে শিক্ষিকাসহ স্কুল কর্তিপক্ষদের জানান,আমাকে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি কাজের জন্য পাঠানো হয় এজন্য আমি স্কুলের ক্লাস করাতে পারি না।

স্কুলের সাবেক,প্রধান শিক্ষক মো:মাহাবুর হোসেন জানান,আমি স্কুলে থাকা অবস্থায় স্কুলে মাঝে মধ্যে সহকারী শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস আসলেও প্রতিনিয়তই বলতেন আমার সরকারি কাজ করতে হয় বলে আমি স্কুলে আসতে পারবো না,বা পারিনা বলেও জানান।

এদিকে,এ অনিয়মকারী দূর্নিতিবাজ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গ্রামের কেউ প্রতিবাদ করলে পুলিশের ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখেন,এবং অনেক যুবককে এমন করে পুলিশের মাধ্যমে শাস্তি দিয়েছেন এ শিক্ষক মহিতষ,এজন্য গ্রামে তার বিরুদ্ধে কেউই প্রতিবাদ করতে সাহস পান না,বলেও জানা যায়।

এদিকে,তুলারামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান এর কাছে দেবীপুর স্কুলের শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাস কেন কিষের জন্য স্কুলে যাওয়া সহ স্কুলের ক্লাস নেন না,জানতে চাইলে চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন,১৫ বছরের মধ্যে আমি মহিতষ বিশ্বাসকে স্কুলে ক্লাস করতে দেখিনি,আমি অনেক বার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি এবং আমি মাঝে মাঝেই দেবীপুর স্কুলে যায় এবং শিক্ষক মহিতষ বিশ্বাসকে কোন সময় বা কোন দিন স্কুলে পাইনি,এমন ভাবে স্কুলের পড়ালেখা হলে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী’রা কোন দিনও মানুষ হবেনা,আমি অনিয়মকারী দূর্নিতিবাজ শিক্ষকদের বিচার দাবি করি বলেও জানান।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *