সিএস ম্যাপ অনুযায়ী আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনঃখনন এগিয়ে নেবো ——-ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ আমাদের খাল-নদীগুলো সংস্কার করতে হবে। সংস্কারে কারও ব্যক্তিগত ক্ষতি করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়। আমিসহ আমারদের মেয়রদেরও উদ্দেশ্য নয় বলে মন্তব্য করেছন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বুধবার (২৯ জুন) নগরীর শহীদ নগর এলাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের পুনঃখনন কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “এসব খাল-নদী দখলের মাধ্যমে যারা অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন, আমাদের কার্যক্রমে তারা মনক্ষুন্ন হতেই পারে। তাদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি জানানো ছাড়া আর কিছুই করার নেই। আমি মনে করি, এর মাধ্যমে সবার উপকার হবে। ঢাকা শহরের অবস্থার পরিবর্তন হবে।”
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, “ঢাকা শহর বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগরী। এ নগরীকে আমাদের গড়তে হবে। এর পরিবেশ ঠিক করতে হবে আমাদের। ঢাকা শহরকে সুন্দর করার মাধ্যেমেই আমারের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে পুরো বাংলাদেশে।”
ঢাকাকে একটি উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে খাল-নদী হতে অবৈধ দখলমুক্তি ও সংস্কারের গুরুত্ব আলোকপাত করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “ঢাকা শহরকে সুন্দর করে গড়ে তোলার অনেক সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- আমাদের খাল এবং নদীগুলোকে সংস্কার করা। সেজন্য কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের মেয়রগণ ঢাকা শহরকে একটি উন্নত নগরী হিসেবে রূপান্তরিত করার জন্য দৃঢ় প্রত্যয় নিয়েছেন।”
অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সিএস ম্যাপ অনুযায়ী আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনঃখনন কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে বলে জানান।
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের ২.৭ কিলোমিটার অংশের পুনঃখনন কার্যক্রম নেওয়া হবে এবং আমরা এর সাথে সাথে সীমানাটা নির্ধারণ করব। আমরা সিএস মানচিত্র (ম্যাপ) দেখে পরিপূর্ণভাবে আদি বুড়িগঙ্গার সীমানা নির্ধারণ করব। তারপর সীমানা বেষ্টনী দেবো এবং এই খনন কার্যক্রম আমরা এগিয়ে নিয়ে যাবো।”
দক্ষিণ সিটির নিজস্ব অর্থায়নে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনঃখনন কাজ শুরু করা হয়েছে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনঃখননে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন। সেই অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে সাড়ে ২১ কোটি বরাদ্দ দিয়ে আমরা এই কার্যক্রম শুরু করেছি। আগামী অর্থবছরে আরও বেশি বরাদ্দ রাখা হবে এবং পরিপূর্ণভাবে যেন খনন করা যায় সে কার্যক্রম আমরা গ্রহণ করব। তবে এটা আনন্দের বিষয় যে, আমরা কাজটি শুরু করতে পেরেছি।”
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল নিয়ে বড় ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “এখানে একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করব। আপনারা জানেন, পুরো কামরাঙ্গীরচর নিয়ে মহাপরিকল্পনা আলোকে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। সুতারাং আদি বুড়িগঙ্গা, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, হাজারীবাগ, চকবাজার ও পুরান ঢাকা ঘিরে কিভাবে একটি নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়, কিভাবে নদীর প্রবাহ ও নদী পুনরুদ্ধার করে ঢাকাবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি বাসযোগ্য নগরী উপহার দেওয়া — তা নিয়ে আমরা কাজ করে চলেছি।”
এরপর ঢাদসিক মেয়র নগরীর ৬২ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ,সচিব আকরামুজ্জামান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডসমূহের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।