মহসীন আহমেদ স্বপন : সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গ্যাস বিড়ম্বনায় পড়েছে রাজধানীবাসী। ফলে রান্নার কাজ না করেই দিন পার করেছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে আবার হোটেল থেকে রান্না করা খাবার কিনতে বাধ্য হয়েছেন। এসব এলাকার খাবার হোটেলগুলোতে দুপুর থেকে ছিল প্রচন্ড ভীড়। গতকাল মানিকনগর-রামপুরা-বনশ্রীসহ বেশ কিছু এলাকায় গ্যাস সরবরাহই ছিল না। পরবর্তীতে গ্যাস আসলেও চাপ ছিলো অত্যন্ত কম। এছাড়া মিরপুর, মোহাম্মাদপুর, বাড্ডা, হাজারিবাগ, ঝিগাতলা, মালিবাগ, আজিমপুরসহ বেশকিছু এলাকায় প্রায়ই গ্যাসের চাপ কম থাকে বলে অভিযোগ জানিয়েছে এলাকাবাসী। রাজধানীর বনশ্রীর বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী আহমেদ তাহের হাসিব বলেন, সপ্তাহের অন্যান্য দিন সকাল সকাল অফিসে জন্য বের হয়ে যাই। সাপ্তাহিক ছুটির দিন, বাসায় আছি। সেই সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় আত্মীয়-স্বজনও আসার কথা। এ উপলক্ষে আমার স্ত্রী সকালে রান্না করতে গিয়ে দেখছে গ্যাস নেই। পরে যখন গ্যাস এসেছে তখনও রান্না করার উপায় নেই, কারণ গ্যাসের চাপ কম। আমাদের বনশ্রী, রামপুরা, মালিবাগ এলাকায় প্রায়ই গ্যাসের চাপ কম থাকে। পল্লবী এলাকার সাইফুল হক জানান, সারাদিন গ্যাস থাকে না বললেই চলে। গ্যাসের চাপ কম থাকায় রান্না-বান্নাও ঠিক মতো করা যায় না। এতে করে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এদিকে রাজধানীর মানিকনগরের বাসিন্দা লাকী আহমেদ জানান, গ্যাস না থাকায় সকালের নাস্তা ছাড়াই তার স্বামী বের হয়েছেন। গত বুধবার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গ্যাস পাইপলাইন ও পিটসহ ভালভ স্থানান্তর কাজের টাই-ইন এর জন্য রাজধানীর জুরাইনসহ বেশকিছু এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছিল তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। কিন্তু শুক্রবার রামপুরা-বনশ্রী এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকবে, বা কিছু সময় গ্যাস থাকবে না এসব বিষয়ে কিছু জানায়নি তারা।
সেখানে বলা হয়েছিল, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড গ্রাহকদের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জুরাইন ও ধোলাইরপাড় এবং ইকুরিয়া ও ধোলাইপাড় এলাকার বিদ্যমান গ্যাস পাইপলাইন ও পিটসহ ভালভ স্থানান্তর কাজের টাই-ইনের জন্য, সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জিয়া স্মরণী, জুরাইন, ধোলাইপাড়, জুরাইন মেডিকেল রোড, জুরাইন মাদরাসা রোড, এ কে স্কুল রোড এবং মীর হাজারীবাগসহ তদসংলগ্ন এলাকার শিল্প ক্যাপটিভ, সিএনজি ও আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির পাইপ লাইন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সামিউল হক সম্প্রতি এ বিষয়ে দরপত্র আহ্বান করে বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত, ঝুঁকিপূর্ণ অথবা লিকেজ গ্যাস পাইপলাইন পরিবর্তন, স্বল্প চাপজনিত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যামান ২ ইঞ্জি/৮ ইঞ্জি ব্যাসের পাইপলাইন স্থাপন, প্রতিস্থাপন, পুনর্নির্মাণ এবং সার্ভিস লাইন স্থানান্তরের কাজের জন্য ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে এই কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হবে। তখন আর গ্যাসজনিত আর সমস্যা থাকবে না বলে আশা করা যায়।