মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইল সদর মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী-লীগের সভাপতি আক্তার হোসেন কিংকুর বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত অপপ্রচার করায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।আজ (৩ জুলাই) শনিবার সকাল ১১ টার সময় মির্জাপুর বাজারে আক্তার হোসেন কিংকু এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,আমি মোঃ আকতার হোসেন,সহকারী অধ্যাপক,মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ও বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী-লীগের সভাপতি। আমি গত (১৮ জুন) ২০২২ তারিখে শ্রী রাহুল দেব,পিতা- শ্রী বাবুল রায়,বিছালী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা,রাহুল দেব,ভারতের নূপুর শর্মার সমর্থনে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) কে অপমানে নিজ ফেসবুক আইডিতে প্রোষ্ট দেয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উল্লেখিত কলেজে একটি আন্দোলন সংগঠিত হয়। ঘটনার দিন আমি ৯ টা ৫২ মিনিটের সময় কলেজে উপস্থিত হয়ে এবং নির্ধারিত ১০:০০ টার সময় ২য় বর্ষের ক্লাসে যায় এবং ১০.৪০ মিনিটে ক্লাস শেষে উক্ত কলেজের শিক্ষক কাজী তাজমুল ইসলাম আমাকে বলে অধ্যক্ষের রুমে তাড়াতাড়ি আসেন কলেজে একটা বিশেষ ঘটনা ঘটেছে। আমি তাড়াতাড়ী ক্লাস থেকে বেরিয়ে দ্রুত অধ্যক্ষের রুমে গিয়ে উল্লেখিত ঘটনা অধ্যক্ষের মাধ্যমে জানতে পারি। পরে অধ্যক্ষ মহোদয়কে স্থানীয় ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই মোরসালিনকে ডেকে আনতে বলি,অধ্যক্ষ মহোদয়ের ফোন পেয়ে মোরসালিন খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন। এবিষয়ে অধ্যক্ষসহ আমরা কতিপয় শিক্ষক আন্দোলনকারী ছাত্র ছাত্রীদের সাথে আলোচনা করে পুলিশ হেফাজতে রাহুল দেব কে হস্তান্তরের চেষ্টা করি। কিন্তু আন্দোলনকারীদের মধ্যে আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং আন্দোলনকারী’রা আামাদের উপর আক্রমন করে,আক্রমনে আমিসহ ক্যাম্প ইনচার্জ ও কতিপয় শিক্ষক গেটের পাশে সিঁড়িতে পড়ে যায় এবং আমি পায়ে প্রচন্ড আঘাত পায়। পরবর্তীতে ক্যাম্প ইনচার্জ আইসি মোরসালিন নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে ঘটনাটি জনান এবং ওসি শওকত কবির ফোর্সসহ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন। তিনিও প্রায় ২ ঘন্টা আমাদের সংঙ্গে আন্দোলনকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান হোসেন ঘটনাস্থলে পৌছান এবং আন্দোলন কারী ছাত্র ছাত্রীদের বিভিন্ন ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। উল্লেখ্য যে,ইতোমধ্যে কলেজের আন্দোলনে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর পরিমানে বহিরাগত মানুষ এসে আন্দোলন কারীদেরকে আরো তীব্রতর করে তোলে। এরপর সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় পিপি এম (বার) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে আন্দোলন কারীদের বাবা সোনা বলে নিবৃত্ত ও ছত্রভঙ্গ করার জোর চেষ্টা করেন। পথিমধ্যে নড়াইল জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং এলাকার আন্দোলনকারীদের সাথে এলকার কিছু সুশীল ব্যক্তিদের নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা করে পরিবেশ কিছুটা নমনীয় করে এবং তার ভিতর দিয়ে কড়া নিরাপত্তার মাধ্যমে অভিযুক্ত রাহুল দেব রায় ও অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে আইনে হেফাজতে নড়াইল নিয়ে যায়। উল্লেখিত ঘটনায় সকাল ১০.৪৫ মিনিট থেকে আমি পতাক্ষভাবে একজন শিক্ষক হিসাবে ও আওয়ামী-লীগের সভাপতি হিসাবে সর্বসময় প্রশাসন ও এলাকার মানুষেকে সাথে নিয়ে আন্দোলনকারীদের নিবৃত করার চেষ্টা করি। যার প্রমান হিসাবে প্রতিটি ভিডিও ফুটেজে আমার ভুমিকা দৃশ্যমান। তবে কে বা কারা কলজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস এর গলায় জুতার মালা পরিধান করান পুলিশে হেফাজতে,তাহা আমার জানা নেই। উল্লেখিত ঘটনা যাদের সংশ্লিষ্টতায় সংগঠিত হয়েছে তাহা ভিডিওতে প্রমানিত। উক্ত ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের প্রচলিত আইনে শাস্তির দাবী করছি এবং আমি এর তিব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। এদিকে,পরের দিন নড়াইল কালিয়া ১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে আসেন এবং এলাকার জন প্রতিনিধি,ও মসজিদের ইমামসহ সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা করেন এবং এলাকায় শান্তি শৃংখলা রক্ষার্থে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন এবং এরপর থেকেই এলাকায় শান্তি শৃংখলা বিদ্যমান। এলাকায় আর কোন প্রকার বিশৃংখলা দেখা যাচ্ছে না তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য কলেজের সার্বিক পরিস্থতি বিবেচনা করে মোঃ আকতার হোসেনকে পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে আগামীতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে প্রস্তাব করায় এলাকার রাজনৈতিক বিরোধী ও আমার বিরোধী শিক্ষক মন্ডলী এটাকে পুজি করে বিভিন্ন প্রকার অপপ্রচার,মিথ্যা,ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে প্রচার করছে যা আমার আত্ম মর্যাদা ও সম্মান নষ্ট হচ্ছে। আমি অনুরোধ করবো আপনারা প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করে সংবাদ প্রকাশ করুন। উল্লেখিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার রাজনৈতিক ও সামাজি বিরোধী’রা অর্থাৎ যারা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী-লীগের সভাপতি হতে চায় এবং আগামীতে কলেজের অধ্যক্ষ হতে চায়,এই ঘটনা ঠেকাতে তাদের কোন ভূমিকা দেখিনাই,বরঞ্চ আমি সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত প্রশাসনের সাথে থেকে সক্রিয় ভূমিকা রেখে প্রাণপন চেষ্টা করি এবং আমি নিজেও ইটের আঘাতে আহত হই। তারপরও আমার এই বিরোধী’রা উক্ত ঘটনায় আমার উসকানি আছে বলে শোসাল মিডিয়া ফেসবুক ও আমাদের আওয়ামী-লীগ নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন মিডিয়া ও পত্র পত্রিকায় প্রচার করে। যার কারণে নড়াইল থানা আওয়ামী-লীগ আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। যাহার জবাব আমি যথা সময়ে পৌঁছে দিবো,তবে এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য আমি জোর প্রতিবাদ জানাই ও তিব্র নিন্দা জ্ঞাপন করি। বর্তমানে অস্থায়ীভাবে কলেজে একটি পুলিশ ক্যাম্প বসানো আছে। এই মুহুর্ত পর্যন্ত এলাকার সার্বিক পরিস্থতি ভালো বলেও সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সাংবাদিকদের জানান।