নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ গতকাল বুধবার ৩ রাত অনুমান সাড়ে ১১ টার সময় কুষ্টিয়া হতে ঢাকাগামী ঈগল পরিবহনের ১টি বাস সিরাজগঞ্জ রোডে জনতা নামক খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে।
উক্ত স্থানে অনুমান ৩০ মিনিট যাত্রা বিরতি শেষে বাসটি পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। তারপর ভিন্ন ভিন্ন স্থান হইতে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত যাত্রী বেশে বাসে উঠে এবং পিছনের দিকে খালি সিটে বসে।
বাসটি যমুনা সেতু পার হওয়ার ২০/৩০ মিনিট পরে গতকাল বুধবার ৩ রাতে অনুমান ১ টা ৩০ মিনিটের সময় টাঙ্গাইল জেলার সদর থানাধীন নাটিয়াপাড়া এলাকায় রাস্তায় চলন্ত বাসে উক্ত অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত ছুরি, চাকু, কাচি সহ আরো দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাসের ড্রাইভারকে সিট থেকে উঠিয়ে হাত-পা বেধে পিছনে সিটের নিচে ফেলে রাখে এবং ডাকাতরা বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরবর্তীতে উক্ত বাসটিকে গোড়াই হতে ইউর্টান করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে।
এই সময়ের মধ্যে ডাকাতদল বাসটির জানালার পর্দা ও যাত্রীদের পরনের বিভিন্ন কাপড় ছিড়ে চোখ এবং হাত বেঁধে ফেলে।
পরবর্তীতে ডাকাতরা বাসে থাকা ২৪ জন যাত্রীর নিকট হতে টাকা, মোবাইল, কানের দুল, হাতের বালা, গলার চেইন ইত্যাদি সহ নগদ টাকা ডাকাতি করে নেয় এবং উক্ত বাসে থাকা ১ জন মহিলাকে বাসের মধ্যে ৫/৬ জন ডাকাত সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
এই সংক্রান্তে মধুপর থানার মামলা নং-০৩, তারিখ-০৩-০৮-২০২২, ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড তৎসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) ধারা- ৯(৩) রুজু হয়।
উক্ত ডাকাতি ও গণধর্ষণ মামলার ঘটনাটি লোমহর্ষক এবং চাঞ্চল্যকর হওয়ায় অফিসার ইনচার্জ ডিবি (উত্তর), টাঙ্গাইল এর নেতৃত্বে ডাকাতি ও গণধর্ষণ ঘটনার রহস্য উঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করার জন্য ডিবি (উত্তর), টাঙ্গাইলের একটি চৌকস টিম নিরন্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে ডাকাতি ও গণধর্ষণ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তির অবস্থান সনাক্ত পূর্বক আসামী মোঃ রাজা মিয়া (৩২), পিতা- মৃত হারুন অর রশিদ, মাতা- হেলেনা বেগম, গ্রাম- বল্লা গোরস্থান পাড়া, থানা- কালিহাতি, জেলা- টাঙ্গাইল, বর্তমান বসবাসের ঠিকানা- মোর্শেদের বাড়ির ভাড়াটিয়া, দেওলা, টাঙ্গাইল সদর, টাঙ্গাইল হতে অদ্য ৪ আগস্ট ভোর ৫ টার সময় তার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার হেফাজত হতে ডাকাতি করিয়া নিয়ে যাওয়া ৩টি লুন্ঠিত মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়।
উক্ত আসামী সহ ডাকাতি ও গণধর্ষণের সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার ও বাস যাত্রীদের নিকট হতে লুন্ঠিত হওয়া মালামাল উদ্ধার করার জন্য অভিযান পরিচালনা করার লক্ষ্যে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। উক্ত ডাকাতি ও গণধর্ষণের সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।