অভয়নগর আনসার ভি.ডি.পি. সদস্যদের দূর্গাপুজার ডিউটির তথ্য নিয়ে রহস্যজনক লুকোচুরি

Uncategorized অন্যান্য


!! উপজেলা আনসার ভি.ডি.পি. অফিসার জেসমিন নাহার এর নিকট আনসার সদস্যদের দূর্গাপুজার ডিউটির তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক কে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করেন। মৌখিক প্রাথমিক ভাবে তথ্য চাইলে তিনি বলেন, আপনি জেলা অফিসারের সাথে কথা বলেন। তিনি অনুমতি দিলে, তথ্য দেওয়া হবে। এরপর এ প্রতিবেদক যশোর জেলা আনসার ভি.ডি.পি. অফিসার সঞ্জয় কুমার সাহার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আপনি তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন?
এরপর তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করতে চেয়ে উপজেলা অফিসারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি কোনো আবেদন গ্রহন করতে পারবো না !!

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি ঃ যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার আনসার ভি.ডি.পি. সদস্যদের শারদীয় দূর্গাপুজার নিরাপত্তার ডিউটির তথ্য সংগ্রহে হয়রানি ও রহস্যজনক লুকোচুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা। এই শারদীয় উৎসবটিতে সারা দেশের সর্বস্তরের মানুষ আনন্দে মেতে ওঠে। ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এই স্লোগানে সারা দেশের ন্যায় অভয়নগরের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালন করেছে।
এ দূর্গাপুজার উৎসব চলাকালে সরকার কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। তারমধ্য বিভিন্ন পুজা মন্ডপে সি.সি. ক্যামেরা স্থাপন এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যদের দ্বারা ২৪ ঘন্টা মন্ডপ এলাকায় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে বর্তমান সরকারকে কৃতজ্ঞতার সাথে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
দূর্গাপুজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর যশোর জেলায় ৭শ’ ২৩টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্য অভয়নগর উপজেলায় ১শ’ ২৯টি মন্ডপে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ১শ’ ২১টি স্থায়ী মন্ডপ ও ৮টি অস্থায়ী মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপুজা উদযাপন করা হয়েছে। এই মন্ডপগুলোর মধ্য সাধারণ ৭০টি, ঝুকিপূর্ণ ৩৭টি ও অধিক ঝুকিপূর্ণ ২২টি রয়েছে। এ মন্ডপ গুলোতে ৬শ’ ৭৮ জন আনসার সদস্য নিরাপত্তার জন্য ডিউটি করছেন বলে উপজেলা অফিস জানিয়েছেন।
উপজেলা আনসার ভি.ডি.পি. অফিসার জেসমিন নাহার এর নিকট আনসার সদস্যদের দূর্গাপুজার ডিউটির তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক কে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করেন। মৌখিক প্রাথমিক ভাবে তথ্য চাইলে তিনি বলেন, আপনি জেলা অফিসারের সাথে কথা বলেন। তিনি অনুমতি দিলে, তথ্য দেওয়া হবে।
এরপর এ প্রতিবেদক যশোর জেলা আনসার ভি.ডি.পি. অফিসার সঞ্জয় কুমার সাহার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আপনি তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন? এরপর তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করতে চেয়ে উপজেলা অফিসারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি কোনো আবেদন গ্রহন করতে পারবো না। আপনি অমুক সাংবাদিক কে চেনেন? তার সাথে কথা বলেন, বলে হুমকি দেয়। অথবা ইউএনও সারের কাছে আনসারের তালিকা দেওয়া আছে। সেখান থেকে নিয়ে নেন।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমার দফতরে যদি আনসারের তালিকা দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে আপনি নাজির সাহেবের সাথে কথা বলেন। তিনি দিয়ে দিবেন। ইউএনও অফিসের নাজির সুব্রত বলেন, আনসার অফিস থেকে একটি চিঠি দিয়েছে, কোনো তালিকা দেই নি। আপনি চিঠির ফটোকপি নিতে পারেন। জেলা অফিসার সঞ্জয় কুমার সাহার সাথে মুঠোফোনে আবারও কথা বললে, তিনি তথ্য দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এরপর উপজেলা অফিসার ফোন করে প্রতিবেদককে বলেন, আপনি এত বিরক্ত করছেন কেনো? কি সমস্যা? আমরা কোনো তথ্য দিতে পারবো না। অমুক সাংবাদিক কে চেনেন। তার নিকট থেকে তথ্য নেন।
এ সময় তার আশেপাশের থেকে বিভিন্ন ব্যাক্তি সাংবাদিকতা পেশা নিয়ে খারাপ মন্তব্য করতে শোনা যায়।
নওয়াপাড়া বাজার মন্দিরের আহবায়ক শিবনাথ অধিকারী জানান, শারদীয় দূর্গাপুজা উপলক্ষে সরকার শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে সম্মানজনক কিছু টাকা দিয়েছে। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।
সেই সাথে সি.সি. টিভি ক্যামেরা স্থাপন ও আনসার-পুলিশের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু আনসার সদস্যদেরকে খোরাকি হিসাবে প্রতিদিন টাকা দিতে হয়। আমাদের পক্ষে এটা খুব দুঃখজনক।
নওয়াপাড়া কালিবাড়ী কেন্দ্রীয় মন্দিরে ডিউটিরত আনসারের সহকারী ইউনিট প্রধান (এপিসি) মোঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা ১ জন পিসি, ১জন এপিসি ও ৬ জন সদস্য দূর্গাপুজার নিরাপত্তা কর্মী হিসাবে কাজ করছি।
উপজেলা থেকে খোরাকি জন্য কোনো খরচ বহন না করায়, মন্দির কতৃপক্ষ প্রতিদিন জন প্রতি ১০০ টাকা করে খোরাকি দিচ্ছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
নাম সহ ব্যাচ কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা অফিস তো কোনো নাম সহ ব্যাচ দেয় নি। তো লাগাবো কিভাবে? কত টাকা হাজিরা বললে তিনি বলেন, পিসি-এপিসিদের, ৬দিনে দিনপ্রতি ৫৭৫ টাকা হিসাবে মোট ৩ হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা। সাধারণ সদস্যদের দিনপ্রতি ৫২৫ টাকা করে ৬ দিনে মোট ৩ হাজার ১শ’ ৫০ টাকা এ বছর দেওয়ার কথা শুনেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি বলেন, আনসার ভি.ডি.পি. সদস্যদের ডিউটির তালিকা লুকোচুরির পেছনে কারন কি? তাহলে কি উপজেলা অফিসার মুল তালিকার থেকে কম জনবল মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন? তথ্য না দিয়ে তিনি বাংলাদেশের তথ্য কমিশনকে রিতিমতো অমুল্যায়ন করার নেপথ্যে কি রয়েছে? যেখানে বর্তমান সরকার প্রতিটি সরকারী অফিসের সুষ্ঠ ও স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
সেখানে এ আনসার ভি.ডি.পি. অফিসার জেসমিন নাহার তা মানতে নারাজ কেনো?
তিনি একজন প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা হয়েও তথ্য সংগ্রহ কাজে কৌশলে বাঁধা দিয়ে সাংবাদিক কে রীতিমতো হয়রানি করার কারন কি? শুধু তাই নয়, কৌশল হিসাবে বিভিন্ন সাংবাদিকের নাম ব্যবহার করে নিজেকে আড়াল করতে চাইছেন তিনি। একজন আনসার সদস্য নাম ব্যাচ ছাড়া ডিউটি করা নিয়ম বর্হিভূত।
তারপরও এভাবে ডিউটি চলছে বহালতবিয়াতে। সদস্যদের মন্দিরে যাতায়ত ও খোরাকি খরচ অফিস বহন না করলে, তারা কিভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিউটি করবে? এমন কথা শোনা যায় অনেকের মুখে।
সচেতন মহলের দাবি, বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তপুর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *