উখিয়ায় মাছের প্রজেক্টের আড়ালে ইয়াবার ব্যবসা ৩৩,০০০ ইয়াবা সহ কক্সবাজারের মাদক সিন্ডিকেটের গডফাদার ঢাকায় গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। মাদকদ্রব্য উদ্ধর ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারসহ নেশার মরণ ছোবল থেকে তরুন সমাজকে রক্ষার জন্য রাজধানীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) এর জোরালো কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক, মোঃ মেহেদী হাসান এর তত্ত্বাবধানে বধানে এবং রমনা সার্কেলের পরিদর্শক জনাব তমিজ উদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম ঢাকার মহানগরীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন এলাকায় মঙ্গলবার ২৫ অক্টোবর দিবাগত রাতে অভিযান পরিচালনা করে প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের ৩৩,০০০ (তেত্রিশ হাজার) পিস ইয়াবা সহ কক্সবাজারের গডফাদার এরশাদুল হক (৩২), পিতা: নুরুল হক, থানা ও জেলা: কক্সবাজার সদর‘কে গ্রেফতার করা হয়।
এরশাদুল হক’কে গ্রেফতার করার কৌশল সম্পর্কে জানা গেছে, যে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রায় এক মাস আগে এরশাদুল এর ইয়াবা সিন্ডিকেট সম্পর্কে অবগত হয়। এরশাদুল এর সাথে সক্ষতা তৈরীর জন্য মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সোর্স নিয়োগ করে।

সে মোতাবেক গত সোমবার ২৪ অক্টোবর রমনা সার্কেলের পরিদর্শক জনাব তমিজ উদ্দিন মৃধা ক্রেতা সেজে ২০০০ হাজার পিস ইয়াবা কেনার দেন-দরবার করার সময় এই সিন্ডিকেটের সহযোগী সদস্য হুমায়নকে তার স্ত্রী সহ ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা হতে ২০০০ পিস ইয়াবা সহ গ্রেফতার করে।

হুমায়ন ও তার স্ত্রীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এরশাদুলের অবস্থান সম্পর্কে অবগত হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদে হুমায়ন আরো জানায় যে, টেকনাফের মূল গডফাদার এরশাদুল ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করবে।

প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্নেষণ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা গতকাল রাতে এরশাদুল’কে ৩৩,০০০ ইয়াবা সহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

ব্যবসার কৌশল : গ্রেফতারকৃত আসামী এরশাদুল হক (৩২) একটি সরকারি কলেজ হতে বিবিএ সম্পন্ন করেছে মর্মে জানিয়েছেন এবং সে নিজেকে কক্সবাজার জেলা ক্রিকেট টিমের সাবেক ক্যাপ্টেন বলে দাবি করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, উখিয়ায় তাদের একাধিক মাছের প্রজেক্ট রয়েছে। এই মাছের প্রজেক্টের আড়ালে সে ইয়াবার ব্যবসা করতো।

গ্রেফতারকৃত এরশাদুল হক আরো জানান, মাছ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাকের মধ্যে বিশেষ কায়দায় ম্যাগনেট ব্যবহার এবং আরো বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ঢাকায় ইয়াবার বড় চালান নিয়ে আসতো। এ কাজে তার একাধিক সহযোগী সদস্য রয়েছে এবং সে এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদুল আরো জানায়, সে এই চালানের পূর্বেও একাধিকবার ইয়াবার বড় চালান ঢাকার পাইকারী ব্যবসায়ীর কাছে সরবরাহ করেছেন।
নিজেকে ধরা-ছোয়ার বাইরে রাখার জন্য সে বিমানে যাতায়াত করতো এবং যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন এনক্রিপটেড অ্যাপস ব্যবহার করতো। তার মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে অনুসন্ধানপূর্বক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মিয়ানমার থেকে সরাসরি ইয়াবা সংগ্রহ: জিজ্ঞাসাবাদে আসামী এরশাদুল জানায়, পাইকারী দরে ইয়াবা সংগ্রহের জন্য সে নিজে মিয়ানমারে থাকা ডিলারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতো এবং নৌ পথে মিয়ানমার হতে ইয়াবা সংগ্রহের জন্য সে একাধিক রোহিঙ্গাকে ব্যবহার করতো মর্মে জানা গেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) কর্তৃক ভবিষ্যতে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মাদক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা‘ নীতি বাস্তবায়নে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) বদ্ধপরিকর।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *