নেত্রকোণার চাঞ্চল্যকর রাজীব হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই

Uncategorized আইন ও আদালত


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানার চাঞ্চল্যকর রাজীব হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন এবং মূল হোতা সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করল পিবিআই, নেত্রকোণা জেলা।

মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত দেলোয়ার হোসেন @দিলু (৩৭), মিজানুর রহমান (২৫), মোঃ মাহবুব (২১),আবুল হোসেন (৩০), আনোয়ার হোসেন (৩৫), মোঃ যতন মিয়া (৪২), সর্ব সাং- হাট নাইয়া, থানা-মোহনগঞ্জ, জেলা-নেত্রকোণা, শুক্কুর (৩৫), সাং-অজ্ঞাত, থানা-কমলাকান্দা, জেলা-নেত্রকোণা, সিরাজুল, সাং-নলদীঘি (পূর্বপাড়া), থানা-তারাকান্দা, জেলা-ময়মনসিংহ তাদের মধ্যে দেলোয়ার @দিলু কে ঢাকা থেকে এবং মাহবুব এবং যতনকে হাটনাইয়া মোহনগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয় সিরাজুলকে তারাকান্দা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।

গত ৭ মে ২০২১সালে সকাল সাড়ে ৫ টায় জনৈক শেখ ইসলাম এর ভাটিয়া মোহনগঞ্জে অবস্থিত পুকুর থেকে ডিসিস্ট রেজাউল করিম রাজীব (২২) এর লাশ উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে ০৯/০৫/২০২১ ডিসিস্ট রাজীবের বাবা মোঃ বাচ্চু মিয়া, সাং-দেওথান, থানা-মোহনগঞ্জ, জেলা-নেত্রকোণা মোহনগঞ্জ থানায় সন্দেহজনক ১২ জনকে হত্যা মামলা আসামী করে দায়ের করেন যা মোহনগঞ্জ থানার মামলা নং-০৪ তারিখ-০৯/০৫/২০২১।

মামলাটি প্রথমে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত করে এবং পরবর্তীতে পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের মাধ্যমে ১৭ মে ২০২১ তারিখে পিবিআই, নেত্রকোণা জেলা তদন্তভার গ্রহণ করে। অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বধানে ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই, নেত্রকোণা জেলার ইউনিট ইনচার্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহীনুর কবির এর সার্বিক সহযোগিতায় ও তত্ত¡াবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোহাম্মদ জাকির হোসেন মামলাটি তদন্ত করেন।

তদন্তে ডিসিস্ট রেজাউল করিম @রাজীব এর মৃত দেহের গলায় প্যাঁচানো শার্ট এর মালিককে সনাক্ত করে যতন মিয়া নামে একজনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, দেলোয়ার হোসেন @ দিলু এবং অপর ৫ (পাঁচ) জন শেখ ইসলামের ফিসারিজে হত্যা করে।
যতন মিয়া গত সপ্তাহে অর্থাৎ ২৩ অক্টোবর আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারার জবানবন্দির ভিত্তিতে মোঃ দেলোয়ার হোসেন @ দিলুকে পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স এবং পিবিআই, ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর সহযোগিতায় পিবিআই নেত্রকোণা জেলার একটি চৌকস টিম ঢাকার কামরাঙ্গীরচর হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গত ৩১ অক্টোবর তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, দেলোয়ার হোসেন @ দিলু হত্যা এবং অস্ত্র মামলা সহ ৩ (তিন) টি মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী।

গত ০৫/০৫/২০২১, দিলু ঢাকা থেকে তার গ্রামের বাড়ী মোহনগঞ্জে আসলে তার এলাকার মাদক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, মাহবুব ও আবুল হোসেন দেলোয়ার হোসেন @ দিলুকে বলে যে, ভাড়া মোটর সাইকেল চালক রাজীব তার ইয়াবার ব্যবসার জন্য মোটর সাইকেল ভাড়া যেতে রাজী হয় না। এজন্য মিজানুর রহমান ক্ষুব্ধ হয়ে ডিসিস্ট রেজাউল করিম রাজীব কে মেরে ফেলতে বলে। দেলোয়ার হোসেন @ দিলু ৪,৫০০ (চার হাজার পাঁচশত) টাকার বিনিময়ে রাজীবকে হত্যা করতে রাজী হয়।
একই দিন আসামীদের পরিকল্পনা অনুযায়ী আনোয়ার ও শুক্কুর ডিসিস্ট রেজাউল করিম রাজীবের মোটর সাইকেল ২০০ (দুইশত) টাকায় ভাড়া করে হত্যার উদ্দেশ্যে মোহনগঞ্জের ভাটিয়া এলাকায় জনৈক শেখ ইসলামের ফিসারিজে নিয়ে যায়।

সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা দিলু, মিজানুর, মাহবুব ও আবুল হোসেনসহ আনোয়ার ও শুক্কুর এলোপাথারি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা জায়গা ত্যাগ করে এবং ডিসিস্ট রাজীবের মোটর সাইকেলটি জনৈকমনোবীর এর দোকানের পেছনে ফেলে রেখে চলে যায়। তাদের সহযোগী উক্ত ফিসারিজের পাহারাদার মূল পরিকল্পনাকারী আসামী মিজানুরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু যতন মিয়া ও তার সহযোগী পাহারাদার সিরাজুল লাশ গুম করার জন্য লাশের শরীরে সিমেন্টের জমাট বাঁধা পাথর বেঁধে উক্ত পুকুরে ফেলে দেয়।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ শাহীনুর কবির বলেন যে, এটি একটি চাঞ্চল্যকর এবং ঘৃণ্য হত্যাকান্ড ছিল।
প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে এবং পিবিআই এর অত্যাধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে এবং ৩ (তিন) জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামী যতন মিয়া আদালতে ২৩ অক্টোবর ২০২২, ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি এবং আসামী দেলোয়ার হোসেন @ দিলু কে গতকাল মঙ্গলবার ১ নভেম্বর আদালতে সোপর্দ করলে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করলে অন্য আসামীদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *