বাগেরহাটে এবার আখের বাম্পার ফলন, ২৭ কোটি টাকা বিক্রির আশা আখ চাষিদের

Uncategorized অন্যান্য



মামুন মোল্লা (খুলনা) ঃ এবার বাগেরহাটের কচুয়ায় আখের বাম্পার ফলন, ২৭ কোটি টাকা বিক্রির আশা করছেন স্থানীয় আখ চষিরা। বাগেরহাটে দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে আখ চাষ।

মৌসুমী সবজির পাশাপাশি চাষিরা আখ চাষে ঝুঁকছেন। চলতি মৌসুমে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলাতেই ২৭ কোটি ৫৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকার আখ বিক্রি হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এই জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শবর্তী ও দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা যাচ্ছে
জানা যায়, উপজেলার গোপালপুর, কচুয়া সদর, রাড়ীপাড়া, বাধালসহ কয়েকটি ইউনিয়নে মাঠের পর মাঠ আখক্ষেত দেখা যায়। ৯৩ হেক্টর জমিতে অন্তত ৫ হাজার চাষি বিএসআরই জাতের আখ চাষ করেছেন। কৃষি অফিসাররা নিয়মিত চাষিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

চাষি শওকত আলী বলেন, আমি বিগত ৪০ বছর যাবত আখ চাষ করছি। এই অঞ্চলে যখন প্রথম আখ চাষ করতাম তখন আমরা কয়েকজন চাষি ছিলাম। দিন দিন আখ চাষি বাড়ছে। রোগ বালাই কম ও চাষাবাদ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় দিন দিন আখ চাষ বাড়ছে।

তিনি আরো বলেন, পূর্ণ বয়স্ক আখের মাথার কিছু অংশ চারা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সাত থেকে ১২ ইঞ্চি লম্বা খন্ড করে কেটে চারা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে বোক (আখের গিরার কাছ থেকে ছোট চারার মতো) বের হয়। বোক বের হওয়া আখের খন্ড ভেজা মাটিতে রেখে দিলে আখের চারা তৈরি হয়। ১৫ থেকে এক মাস পর ভেজা মাটি থেকে উঠিয়ে আগে থেকে কুপিয়ে এবং চাষ দিয়ে রাখা ভিটায় (ক্ষেতে) লাগাতে হয়। চারা দেওয়া থেকে শুরু করে আখ বিক্রি পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ মাস সময় লাগে।

চাষি নাজমুল মোল্লা বলেন, প্রতি শতক জমিতে আখ চাষে ১০০০-২০০০ টাকা ব্যয় হয়। আখ রোপনের প্রথম ৩ মাসে সাথি ফসল হিসেবে লাল শাক, রসুন, পেঁয়াজ, মুলা, ডাটা, মরিচ, শসা ইত্যাদি চাষ করা যায়। সাথি ফসল চাষে খরচ অনেকটা উঠে আসে। খুচরা বাজারে প্রতি পিস আখ ২০-৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

গোপালপুর এলাকার সালাম মোল্লা বলেন, আমি ২ বিঘা জমিতে আখের চাষ করেছি। আখের ফলন ভালো হয়েছে। আখ চাষে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে ১ লাখ টাকার আখ বিক্রি করেছি। আশা করছি আরো লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করতে পারবো।

আখ ব্যবসায়ী মোতালেব মোল্লা বলেন, আমি চাষিদের থেকে আখ কিনে খুচরা বিক্রি করি। মৌসুমে অন্তত ৫০ লাখ টাকার আখ কিনি আমি। জমি থেকে আক কিনতে পারলে বেশি লাভ হয়।

কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, কচুয়া উপজেলার মাটি আখ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এবছর ৯৩ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। আবাহাওয়া অনুকূলে থাকলে এই আখ ২৭ কোটি ৫৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বিক্রির আশা করা হচ্ছে। আমরা নিয়মিত আখ চাষিরদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *