মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
স্থানীয়দের অভিযোগ,বারইপাড়া সেতুর পর যতগুলো সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল,সবগুলোই চালু হয়েছে। বারইপাড়া সেতুর কাজ আগামী ৭ বছরেও শেষ হবে কিনা সন্দেহ আছে। এসব দেখার জন্য কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক নেতা কেউ-ই নেই। জানা গেছে,সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে নবগঙ্গা নদীর বারইপাড়া ঘাটে সেতু নির্মাণে কার্যাদেশ হয় ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমডি জামিল ইকবাল অ্যান্ড মইনুদ্দীন বাঁশি যৌথভাবে কাজটি পায়। ৬৫১ দশমিক ৮৩ মিটার লম্বা,১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ,১৬টি পিলার ও ১৫টি স্প্যানের এ সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৭২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। নির্মাণাধীন এ সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের জুনে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র দুইটি পিলার নির্মাণসহ ২২ শতাংশ কাজ করতে সক্ষম হয়। এরপর দেখা দেয় নকশা জটিলতা। বর্ষাকালে পানি বেড়ে দেখা দেয় উচ্চতা জটিলতা। ৬ মাস বন্ধ থাকে কাজ। এরপর উচ্চতা বাড়াতে নতুন একটি পিলার সংযোজন করে নকশা পরিবর্তন করে দ্বিতীয় দফা মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ শুরু হলে হানা দেয় করোনাভাইরাস। গতি হারায় নির্মাণকাজ। ২০২০ সালের জুন থেকে ৬ মাসে নির্মাণাধীন ৯ নম্বর পিলারে ৬/৭ বার বালু বোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় পিলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধাক্কায় কয়েকটি নৌ-যান ডুবেও গেছে।
ঠিকাদারের ধীরগতি ও সড়ক বিভাগের নকশা জটিলতায় ঝুলে গেছে নড়াইলের গুরুত্বপূর্ণ বারইপাড়া সেতু। দেড় বছরের সেতুটি নির্মাণের কথা ছিল।
কিন্তু পার হয়েছে বছরের পর বছর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী বছরগুলোয় সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে কিনা,সেটি নিয়ে আছে সংশয়। নড়াইল জেলা থেকে কালিয়া উপজেলাকে আলাদা রেখেছে নবগঙ্গা নদী। জেলার সঙ্গে যুক্ত হতে বারইপাড়া একটি সেতুর জন্য ৫ লাখ মানুষ অপেক্ষা করে ছিল বহু বছর। সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা হলেও মানুষের প্রতীক্ষা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। নড়াইল থেকে কালিয়া,কালিয়া হয়ে গোপালগঞ্জ, খুলনা,বাগেরহাট শহরে চলাচল করে বহু মানুষ। বারইপাড়া এলাকা দিয়ে এসব মানুষের চলাচল বেশি। পথচারী থেকে প্রায় সবাই এ পথ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের ভাষ্য,প্রতিদিন এ পথ দিয়ে চলাচলে দেড় ঘণ্টা বেশি সময় নষ্ট হয়। খেয়া পেতে ঘাটে বসতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বর্ষার দিনে অবস্থা আরও ভয়াবহ। স্থানীয়দের অভিযোগ,বারইপাড়া সেতুর পর যতগুলো সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল,সবগুলোই চালু হয়েছে। বারইপাড়া সেতুর কাজ আগামী ৭ বছরেও শেষ হবে কিনা সন্দেহ আছে। এসব দেখার জন্য কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক নেতা কেউ-ই নেই। জানা গেছে,সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে নবগঙ্গা নদীর বারইপাড়া ঘাটে সেতু নির্মাণে কার্যাদেশ হয় ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমডি জামিল ইকবাল অ্যান্ড মইনুদ্দীন বাঁশি যৌথভাবে কাজটি পায়। ৬৫১ দশমিক ৮৩ মিটার লম্বা,১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ,১৬টি পিলার ও ১৫টি স্প্যানের এ সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৭২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। নির্মাণাধীন এ সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের জুনে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র দুইটি পিলার নির্মাণসহ ২২ শতাংশ কাজ করতে সক্ষম হয়। এরপর দেখা দেয় নকশা জটিলতা। বর্ষাকালে পানি বেড়ে দেখা দেয় উচ্চতা জটিলতা। ৬ মাস বন্ধ থাকে কাজ। এরপর উচ্চতা বাড়াতে নতুন একটি পিলার সংযোজন করে নকশা পরিবর্তন করে দ্বিতীয় দফা মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ শুরু হলে হানা দেয় করোনাভাইরাস। গতি হারায় নির্মাণকাজ। ২০২০ সালের জুন থেকে ৬ মাসে নির্মাণাধীন ৯ নম্বর পিলারে ৬/৭ বার বালু বোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় পিলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধাক্কায় কয়েকটি নৌ-যান ডুবেও গেছে। সর্বশেষ ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর একটি বালু বোঝাই বাল্কহেডের আঘাতে ৯ নম্বর পিলারটি নদীতে তলিয়ে যায়। এ সময় তৃতীয় দফা নকশা পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে। এদিকে তৃতীয় দফা নকশা পরিবর্তন আর করোনার অজুহাতে সময় বাড়াতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ফের মেয়াদ দেওয়া হয় ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। তৃতীয় বার মেয়াদ বাড়ানোর পরও সেতুটির ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে দাবী সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে বার বার বারইপাড়া সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,করোনা শুরু থেকেই কাজের ধীরগতি এখনও চলমান। সেতুর একপ্রান্তে রেলিং বসাতে কাজ করছেন মাত্র ৫ শ্রমিক,অন্য প্রান্তে ২০ জন। ক্ষতিগ্রস্ত পিলার সহ তিনটি পিলারের কাজ এখনও বাকি। ১৫টি স্প্যানের মধ্যে তিনটি স্প্যান বসানো হয়েছে। পূর্ব পাড়ের সংযোগ সড়ক পিচ ঢালাই চললেও পশ্চিম পাড়ের সংযোগ সড়কে শুধু বালু ভরাট করে রাখা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন,শুরু থেকেই ঠিকাদাররা কাজে শ্রমিক নিয়োগ করছেন না। মাত্র কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে কাজ চলছে ঢিমেতালে। এ বিষয়ে সড়ক বিভাগের কোনো মাথাব্যথাই নেই। সেতুর পিলার ট্রলারের ধাক্কায় ভেঙে যায় সেটি কতখানি মজবুত তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সাধারণের মনে। এদিকে নতুনভাবে নয় নম্বর পিলার তুলে দিয়ে ৮-১০ নম্বর পিলারের মাঝে স্টিলের স্প্যান বসানো নকশা করে ডিপি প্রণয়ন করেছে। আর এ নকশা পরিবর্তনে ব্যয় বেড়েছে ২৮ কোটি টাকা। নতুন নকশা অনুযায়ী প্রতিটি পিলারের চারদিকে স্টিলের বেষ্টনী দিয়ে বাড়তি নিরাপত্তা রাখা হয়েছে। পঞ্চম মেয়াদে সড়ক বিভাগে তত্ত্বাবধানে বাকি কাজের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান মইনুদ্দীন বাঁশি কাজের ধীরগতির জন্য সড়ক বিভাগের গাফিলতিকে দায়ী করে গণমাধ্যম কে বলেন,শুরু থেকেই আমরা নকশা নিয়ে কথা বলে আসছি। তারা আমাদের কথায় কান দেননি। করোনার সময় কেউই সাইড পরিদর্শনে যাননি। সড়ক বিভাগের এমন উদাসীনতা আগে দেখিনি। বার বার নকশা পরিবর্তন বিষয়ে সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান গণমাধ্যম কে বলেন,আমরা বিআরটিএ’র ছাড়পত্র নিয়েই নকশা প্রণয়ন করি। নয় নম্বর পিলার বাদ দিয়ে ৮ এবং ১০ নম্বর পিলারে ৯০ মিটারের স্টিলের স্প্যান ধরে ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। বাজেট পাশ হলে বিদেশ থেকে স্টিলের স্প্যান এনে বসাতে হবে।