চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে চাঞ্চল্যকর আবু ছৈয়দ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন সহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার, অজ্ঞান পার্টির ৩ সদস্য গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে চাঞ্চল্যকর আবু ছৈয়দ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন সহ ঘটনায় ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞান পার্টির ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।

জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারী ২০২৩ তারিখ ২ টা থেকে ৩ টার মধ্যে ঘটনার সহিত জড়িত অজ্ঞান পার্টির উক্ত ৩ (তিন) সদস্যকে গুপ্তচরের তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার পাহাড়তলী ও হালিশহর থানা এলাকা হতে বিশেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়।
অত্র মামলার ভিকটিম আবু ছৈয়দ (৫৪) পিতা-মৃত আফলাতুন, মাতা-মৃত হালিমা খাতুন, সাং-গোরকঘাটা, থানা-মহেশখালী, জেলাঃ কক্সবাজার, বর্তমানে-ভাটিয়ারী, জলিল গেইট, রেল লাইনের পূর্ব পাশে (আজম চৌধুরীর কলোনীর ভাড়াটিয়া), থানাঃ সীতাকুন্ড, জেলাঃ চট্টগ্রাম গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ মাছ কেনার জন্য চট্টগ্রাম শহরের ফিসারী ঘাট এলাকায় যায়। অলংকার মোড় হতে ভিকটিম তার স্ত্রীকে কল করে বাসায় আসার কথা জানায়। বাদী অনুমান ৯ টাএ সময় ভিকটিমের মোবাইলে কল করে বন্ধ পায়।

পরবতীর্তে সাড়ে ১০ টার সময় বাদীর ফুফাতো ভাই মোঃ জসিম (৪২) কল করে জানায় যে, সীতাকুন্ড থানাধীন বড় দারোগার হাট বাজারে বাসের মধ্যে ভিকটিম অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছেন। বাদী ভিকটিমকে উদ্ধার করতঃ সীতাকুন্ড উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরবতীর্তে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৬ অক্টোবর ২০২২ ভিকটিম চ.মে.ক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিলে ভিকটিমের ছেলে বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানার মামলা নং-০৫, তারিখ-০৭/১০/২০২২ইং, ধারা-৩২৮/৩৭৯/৩০২/৩৪ পেনাল কোড আইনে মামলা দায়ের করেন।

উল্লেখিত চাঞ্চল্যকর অজ্ঞান পার্টি কতৃর্ক হত্যা মামলাটি থানা পুলিশের তদন্তের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত করার নিমিত্তে পিবিআই, চট্টগ্রাম জেলার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ শাহাদাত হোসেনকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তিনি এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার ছায়া তদন্তভার গ্রহণ করিয়া বিশ্বস্ত গুপ্তচর নিয়োগ এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মামলার ছায়া তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।

মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্তের লক্ষ্যে পিবিআই প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান, পিপিএম-সেবা এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ শাহাদাত হোসেন এর নেতৃত্বে গত ১ জানুয়ারী ২ টা হতে ৩ টার মধ্যে সন্ধিগ্ধ আসামী মহিন উদ্দিন (৩০) পিতা-ইব্রাহীম, মাতা-হনুফা, সাং-কাদিরপুর (মাহমুদুল হক ড্রাইভারের বাড়ী) ৭নং ওয়ার্ড, ১৬নং কাদিরপুর ইউপি, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী, বর্তমানে-হালিশহর (টেন্ডলের বাড়ীর ভাড়াটিয়া) থানা-হালিশহর, জেলা-চট্টগ্রাম, মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪২) পিতা-নুরুল ইসলাম, মাতা-আনোয়ারা বেগম, সাং-কাদিরপুর (সিরাজুল মিয়ার বাড়ী) ৭নং ওয়ার্ড, ১৬নং কাদিরপুর ইউপি, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী, বর্তমানে-হালিশহর, থানা-হালিশহর, জেলা-চট্টগ্রাম, এবং মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪২) পিতাঃ মৃত নুরুল ইসলাম, মাতা-ছকিনা বেগম, সাং-হরিপুর, ৫নং ওয়ার্ড, ০৬নং পাঠান নগর ইউপি, থানা-ছাগলনাইয়া, জেলা-ফেনী, বর্তমানে-গ্রীনভিউ আবাসিক, ৭নং রোড, সাহাব উদ্দিনের বাড়ী, থানাঃপাহাড়তলী, জেলাঃ চট্টগ্রামদেরকে গুপ্তচরের তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার পাহাড়তলী ও হালিশহর থানা এলাকা হতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীগণ ভিকটিম আবু ছৈয়দ (৫৪)’কে হালুয়া জাতীয় চেতনা-নাশক পদার্থের সাথে মধু মিশ্রন করে সেবন করিয়ে নগদ ২০,০০০/-টাকা এবং তার ব্যবহৃত একটি মোবাইল সেট নিয়েছ বলে স্বীকার করে।

ধৃত আসামীগণ রিমান্ডে থাকাকালীন তাদের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে সোমবার ২ জানুয়ারি আসামী মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪২) এর চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার হালিশহর থানাধীন ভাড়া ঘর থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল সেট এবং সিডিল ট্যাবলেট, সিডাক্সিন ট্যাবলেট, মাইলাম ট্যাবলেট, হ্যান্ড গ্লাবস, আরদে খোরমা, মধুর বোতল, ইউনানী ঔষধ, মদক, হালুয়া, হামদর্দ ঔষধের পুস্তিকা, লিফলেট, সিনকারা ঔষধের পুস্তিকা, ছাফি ঔষধের পুস্তিকা, হাত ব্যাগ সহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার পূর্বক আসামীদের সনাক্ত মতে জব্দ তালিকা মূলে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ করা হয়।
এ ছাড়াও ধৃত আসামীদের দেখানো ও সনাক্ত মতে ভিকটিমকে বহনকারী বাস (চট্ট মেট্রো—জ ১১-২১৮২) জব্দ করা হয়। বর্নিত হত্যাকান্ডের সহিত সম্পৃক্ত অন্য পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *