জোড়া খুনের ঘটনাকে সড়ক দূর্ঘটনা হিসেবে চালানোর চেষ্টা : প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন করলো পিবিআই

Uncategorized অপরাধ



নিজস্ব প্রতিনিধি : গত ১২ আগস্ট ২০২১ সালে রাত অনুমান ৭ টা ৫৫ মিনিটের সময় নরসিংদী জেলার শিবপুর ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক/১৩১ মোঃ সাখাওয়া হোসেন ও সঙ্গীয় ফোর্সগন টহলরত অবস্থায় মাইক্রোবাস ও মটর সাইকেলের সংঘর্ষ ও দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ঢাকা সিলেট মহা সড়কের সিলেটগামী লেনের উপর লালখারটেক, কামারটেক, শিবপুর, নরসিংদী উপস্থিত হয়ে ভিকটিম শাহান শাহ আলম বিপ্লব(৩৪), পিতা- পিতা- মৃত সামসুল হক, সাং লোচনপুর, থানা- রায়পুরা, জেলা- নরসিংদী এবং মোঃ মনির হোসেন(৩৪), পিতা- মোঃ তোতা মিয়া, সাং বারৈচা, বেলাব, নরসিংদী দ্বয়ের লাশ উদ্ধার করে লাশ মর্গে প্রেরণস করেন এবং তিনি বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানার মামলা নং ১০, তারিখ-১৪/০৮/২০২১ , সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ৯৮/১০৫ ধারায় অত্র মামলাটি রুজু করেন। উক্ত মামলায় নোয়া মাইক্রোবাসের অজ্ঞাতনামা চালককে আসামী করা হয়। এসআই (নিঃ) মোঃ খাজা মাঈনুদ্দিন, বিপি-৮৭০৬১১৪৮৯১ সার্বিক তদন্ত শেষে নোয়া মাইক্রোবাসের মালিক আসামী মোঃ মাসুম মিয়া (৪১), পিতা- মৃত চাঁন মিয়া, সাং- বারৈচা দক্ষিনপাড়া, থানা- বেলাব, জেলা- নরসিংদীকে পলাতক দেখিয়ে শিবপুর মডেল থানার অভিযোগপত্র নং ২৪৮, তারিখ- ০৯/১১/২০২১ ইং, ধারাঃ সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৯৮/১০৫ আদালতে দাখিল করেন। ভিকটিম বিপ্লবের ভাই সোহাগ মিয়া একই ঘটনায় আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন এবং হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃক অভিযোগপত্রের বিষয়ে না-রাজী প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত সিআর মামলাটি সংযোক্ত করে পিবিআই নরসিংদীকে ঘটনার বিষয়ে অধিকতর তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআই কর্তৃক তদন্ত বাদীর নারাজীর প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে মামলাটি পিবিআই নরসিংদী জেলায় প্রাপ্ত হয়ে প্রথমে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোস্তফা খায়রুল বাশার, বিপি-৭৮০৬০৯৯৬২৮ কে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়। উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা বদলী হয়ে চলে যাওয়ায় পরবর্তীতে এসআই (নিঃ) মোঃ আশরাফ আলীকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়। মামলাটি পিবিআই নরসিংদী জেলায় প্রাপ্তির পর হতে সার্বক্ষণিক মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান, পুলিশ সুপার, পিবিআই নরসিংদী তদন্ত তদারকি করেন এবং রহস্য উদঘাটনে সার্বিক দিকনির্দেশনা দেন। ভিকটিম দুলাল গাজীকে রায়পুরা লোচনপুর বাজারে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করা হয় এবং যাহার প্রধান আসামী ছিলেন বর্তমান মামলার ভিকটিম নিহত বিপ্লব গং। ঘটনাটি বাজারের মধ্যে প্রকাশ্যে সংঘটিত হলেও বিপ্লব গংদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। তদন্তকালে আরো জানা যায় যে, বিপ্লবের বিরুদ্ধে ০৪টি হত্যাসহ ১০ টি মামলা ও ১১টি ওয়ারেন্ট রয়েছে। কিন্তু বিপ্লব ধরাছোয়ার বাহিরে রয়েছে এবং তার ভয়ে কেউ সাক্ষী দিতে চায় না। বরং দুলাল গাজী হত্যার বিপরীতে উক্ত হত্যা মামলার বাদী রবিন গাজী (দুলাল গাজীর ছেলে) একটি ঘর পুড়া মামলায় ৬ মাস জেল খেটেছে এবং বাদী হিসেবে মামলা পরিচালনা করতে ভয় পাচ্ছে এবং এরুপ পরিস্থিতিতে পিবিআই কর্তৃক বর্তমান ভিকটিম বিপ্লবকে এরেস্ট করা হয়। উক্ত গ্রেফতার কার্যে সহায়তাকারীদের পরিবারের ২ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তারা যথাক্রমে, জুয়েল(২২) ও নাঈম(২৩)। জনগনকে বলা হয় ডাকাত পিটিয়ে মেরেছে। যার মামলা চলমান রয়েছে। পিবিআই এর এসআই মোহাম্মদ নাসিম পুলিশ সুপার এর নির্দেশনায় বিপ্লবকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করায় এসআই নাসিমের বিরুদ্ধে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অভিযোগ করেন এবং উক্ত অভিযোগটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কর্তৃক জেলা পুলিশকে তদন্ত দেওয়া হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেডকোয়ার্টার্স, নরসিংদী উক্ত অভিযোগ তদন্তকালীন সময়ে বর্তমান জোড়া খুন মামলার ঘটনার পূর্বক্ষণে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয়, নরসিংদীতে কিছুক্ষণের জন্য প্রবেশ করেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেডকোয়ার্টাসের সাথে কথা বলে বের হয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে মনির হোসেনের মটর সাইকেল যোগে রওনা করেন। কিছুক্ষণ পরে জানা যায় যে, বর্তমান মামলার ভিকটিম বিপ্লব ও মনির হোসেনরা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে । শাহান শাহ আলম@বিপ্লব পিবিআই কর্তৃক তদন্তাধীন রায়পুরা থানার মামলার নং ১৩, তারিখ-৮/০২/২০১৯, ধারাঃ ৩০২/৩৪ পেনাল কোড এর প্রধান আসামী হওয়ায় সেসহ তার বন্ধু মনিরের মৃত্যু ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃক তদন্ত পরিচালিত হলেও পিবিআই নরসিংদী’র তদন্ত পর্যবেক্ষনে রাখা হয় ও ছায়া তদন্ত পরিচালনা করা হয় এবং পরবর্তী বিপ্লব সহ উক্ত জোড়া খুনের মামলা না-রাজীর ভিত্তিতে পিবিআই নরসিংদীকে তদন্ত দেওয়া হলে নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে মামলার তদন্ত পরিচালনা করা হয়। মামলাটি পিবিআই নরসিংদী জেলা কর্তৃক তদন্তকালে পুলিশ সুপার মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান এর দিক-নির্দেশনায় দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর পিবিআই কর্তৃক মামলা তদন্তের শুরুতেই ভিকটিম শাহান শাহ আলম@বিপ্লব এর সম্ভাব্য শত্রুপক্ষের বিষয়ে যাচাই করে। ঘটনার পরক্ষণে জনগনের হাতে বিপ্লবের একসময়ের ডিস ব্যবসার পার্টনার আসামী মামুন মিয়া বিপ্লবের ডিস ব্যবসার টাকা অনৈতিকভাবে আত্মসাৎ করার ফলে বিপ্লব তার ব্যবসা থেকে তকে বের করে দেয় একারণে ই শত্রুতা তৈরি হয়। তাকে জনগন ধরতে পারলেও দুর্ঘটনার কথা বলে ঘটনাস্থল থেকে জনগনের কাছ থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ঘটনাস্থলে উক্ত আসামীর উপস্থিতি জানতে পেরে বিষয়টি সন্দেহজনক বলে এবং ঘটনায় নিহত ভিকটিমরা দুর্ঘটনার স্বীকার নয় বরং পরিকল্পিত খুনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত কালো মাইক্রোবাসের মালিক আসামী মোঃ মাসুম মিয়া কাছাকাছি এলাকায় থাকলেও তিনি তার গাড়ি দেখা ও নেওয়ার জন্য ছুটে আসেননি। যাহা আরো সন্দেহের সৃষ্টি করে। নরসিংদী, নারায়নগঞ্জ, ঢাকাসহ একাধিক অভিযান পরিচালনা করে গাড়ির মালিক সোহাগ (যাকে পলাতক দেখিয়ে সড়ক পরিবহন আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়ে) কে গ্রেফতার করা হলে অনেক নতুন তথ্য পাওয়া যায় এবং বিষয়টি হত্যাকান্ড মর্মে নিশ্চিত ধারনা পাওয়া যায়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *