মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ৩৭নং কচুবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৭০ শতক জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ভুমি দস্যুদের বিরুদ্ধে। এলাকায় এই নিয়ে গুঞ্জনও উঠেছে। এসব বেদখল হওয়া জমির মুল্য আনুমানিক ৪ কোটি টাকা।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়,লোহাগড়া উপজেলার নবগঙ্গা নদীর দক্ষিন তীরে কচুবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত,১১২ বছর পূর্বে,শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে তৎকালীন স্থানীয় হিন্দু শিক্ষানুরাগীদের চেষ্টায় এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছিল। জানা যায়,তৎকালীন মাখন সমাদ্দার ও তার নিকট আত্মীয়’রা এই বিদ্যালয়ে জমি দান করে ছিল।
আর এস রেকর্ডীয় সুত্রে দেখা গেছে,এই বিদ্যালয়ের নামে ১একর ৪শতক জমি বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ডভুক্ত আছে এবং হাল সন নাগাদ খাজনা পরিশোধ রয়েছে। ৯৬ নং কচুবাড়িয়া মৌজায় ২নং আর এস খতিয়ানে মালিক বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে শিক্ষা বিভাগ নড়াইলে মোট ৭টি দাগে ১একর ৪শতক জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৫৪৬ দাগে জমি ১২শতক,৫৫১ দাগে জমি ৪ শতক,৭৫০ দাগে ১৪ শতক,৭৬৫ দাগে ১৪ শতক, ১১৯৯ দাগে ৩৭ শতক,১২০৪ দাগে ৬ শতক ও ১২০৬ দাগে ১৭ শতক জমি কচুবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম আছে। কিন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয় মাত্র ৩৪ শতক জমি দখলে আছে,বাকি জমি স্থানীয় রাঘববোয়াল ও ভুমি দস্যু’রা দখল করে পৈত্রিক সম্পত্তি বানিয়েছেন। এ যেন মগের মল্লুক। খোজ-খবর নিয়ে আরো জানা গেছে,ওই মৌজার ১১৯৯ দাগ ৩৭ শতক জমি ভোগদখল করছেন, উপজেলার করফা গ্রামের জনৈক রনি,
লংকারচর গ্রামের তৈয়ব আলী,কচুবাড়িয়া গ্রামের লুৎফার হোসেনসহ আরো অনেকে। অন্য দাগে বিদ্যালয়ের জমি জবরদখল করেছেন,বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। অভিযুক্ত জমি দখলকারী লুৎফার রহমানের সংগে কথা হলে তিনি বলেন,আমি জমি ডাসেরডাংগা গ্রামের আমির ফকিরের নিকট থেকে জমি কিনে নিয়েছি ৩শ টাকার ষ্টাম্পের মাধ্যমে,কিন্তু আমি জমি রেজিষ্ট্রেশন করে নিতে পারি নাই। অভিযুক্ত জমি দখলকারী রনির সংগে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিভিন্ন কথা বলে মুল বিষয়টি এড়িয়ে যান,এবং তিনি বাড়িতে এসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন বলে জানান। বিদ্যালয়ের জমি বিক্রয়কারি আমীর ফকিরের সংগে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধীক গন্যমান্য ব্যক্তি বলেন,স্থানীয় কয়েকজন এই বিদ্যালয়ের জমি দখল করে খাচ্ছে তা আমরা জানি,আমরা সংখ্যালঘু,দেখি কিন্তু কিছু বলতে পারি না। আপনারা সাংবাদিক আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে সত্য প্রকাশ করে বিদ্যালয়ের জমি অবৈধ দখল মুক্ত হোক,এটা সময়ের দাবী মাত্র। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিথিলা রানী সাহার সংগে কথা হলে তিনি বলেন,আমি আগামী সপ্তাহে মিটিং ডেকে আলোচনা করে দেখবো,কি করা যায়? ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি সুজিত কুমার ভদ্র বলেন, আমার বলার কিছু নাই,আপনা’রা এবিষয়ে আমার মুখ থেকে বিস্তারীত কিছু জানতে চাইলে আমি সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করবো। লোহাগড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) স্বপন কুমার বর্মন জানান,বিষয়টি আমি শুনেছি,প্রধান শিক্ষককে বলেছি,কোন কোন ব্যাক্তি দখল নিয়েছে সে সব বিস্তারীত জেনে লিখিত ভাবে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান,এ শিক্ষা কর্মকর্তা।