গুলিস্তানের বিস্ফোরণের ঘটনায় বাড়ছে লাশের মিছিল, এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু

Uncategorized অন্যান্য

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সায়েন্সল্যাবের একদিন পর ঢাকায় আবারও বিস্ফোরণ। রাজধানীর গুলিস্তানে বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ডের পাশে বিস্ফোরণের এ ঘটনায় বাড়ছে লাশের সংখ্যা। এ দুঘর্টনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত দুই শতাধিক।

আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিস্ফোরণের পর ভবনটি থেকে ৪০ জনকে জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে সিদ্দিকবাজারের নর্থসাউথ সড়কের সাততলা ভবনে বিস্ফোরণ থেকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, হঠাৎ করে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। তখন নর্থসাউথ সড়কের দুই পাশেই যান চলাচল করছিল। সদরঘাট থেকে গুলিস্তানগামী এ সড়ক ঢাকা মহানগরীর অন্যতম ব্যস্ত সড়ক। বিস্ফোরণের পর সড়কের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত অবস্থায় অনেক মানুষ পড়েছিলেন। তাদের অধিকাংশই তখন সড়ক দিয়ে চলাচল করছিলেন। তাদের কেউ বাসের যাত্রী, কেউ রিকশা-ভ্যানে যাচ্ছিলেন। আবার কেউ কেউ ছিলেন পথচারী। কেউ কেউ দোকানে এসেছিলেন কেনাকাটা করতে।

ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে একটি ভাসমান চায়ের দোকান চালান সোহরাব হোসেন। বিস্ফোরণের সময় তিনি দোকানে ছিলেন। তিনি মুঠোফোনে ঘটনাস্থলের সামনের কিছু দৃশ্যের ভিডিও করেছেন। সোহরাব হোসেন বলেন, বিস্ফোরণের পর তার মনে হয়েছিল বোমা ফুটেছে। তিনি দৌড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, বহু মানুষ রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন। তাদের কেউ কেউ বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিলেন। এসব মানুষকে রিকশা-ভ্যানে করে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বিস্ফোরণের পর ধারণ করা কয়েকটি ভিডিও সরবরাহ করেছেন সোহরাব হাসান। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সড়কে একটি নিথর দেহ পড়ে আছে। একটি ভিডিওতে ষাটোর্ধ্ব একজনের ছিন্নভিন্ন লাশ ভ্যানে করে তুলে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। অন্য একটি ভিডিও দেখা গেছে, স্থানীয়রা আহত কয়েকজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন।

বিস্ফোরণের এ ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগকেই বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত ভবন থেকে মৃত বের করে আনা হয়েছে। বিধ্বস্ত ওই সাততলা ভবনের বেজমেন্টে এখনো ঢুকতে পারেননি উদ্ধারকর্মীরা। সেখানে আরও মানুষ আটক থাকতে পারেন বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন।

স্থানীয় জনসাধারণের ভাষ্য, ঘটনার সময় সড়কে যানজট ছিল না। সদরঘাটের দিক থেকে গুলিস্তানগামী যানবাহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলছিল। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই দুটি বাসের যাত্রী ছিলেন। আহত ব্যক্তিরা তখন শুধু বাঁচার জন্য সহায়তা চেয়ে আর্তনাদ করছিলেন।

বিস্ফোরণের পর থেকে ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক উৎসুক জনতা ভিড় করছিলেন। তাদের সরাতে হিমশিম খেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে। সরিয়ে দেওয়া হলেও তারা আবার ঘটনাস্থলের আশপাশে এসে ভিড় করছিলেন। উৎসুক জনতার কারণে আহত কাউকে উদ্ধার করার পর তাদের হাসপাতালে পাঠাতেও বেগ পেতে হচ্ছিল।

ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, বিস্ফোরণ হয়েছে নর্থসাউথ রোডের ১৮৪ নম্বর ভবনে। ভবনটি সাততলা। ভবনের বেজমেন্ট, নিচতলা ও দ্বিতীয় তলা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বেজমেন্ট ছাড়া পুরো ভবনেই তল্লাশি চালিয়েছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *